বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সিভিকের পর এবার অধ্যাপক বিতর্কে বাঁকুড়া। এবার বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (Bankura University Controversy) অতিথি অধ্যাপক (Guest Lecturer) নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি ঘিরে দানা বেঁধেছে জোর বিতর্ক। কী সেই বিজ্ঞপ্তি? পদার্থবিদ্যার অধ্যাপকের বেতন ক্লাস পিছু ৩০০ টাকা। অস্থায়ী স্পেশ্যাল লেকচারার নিয়োগের এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ আসতেই শোরগোল।
প্রসঙ্গত, ২৪ মার্চ বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ওই বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। যাতে বলা হয়েছে পদার্থবিদ্যার অতিথি অধ্যাপকের জন্য ন্যূনতম পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে ও নেট উত্তীর্ণ হতে হবে অথবা পিএইচডি ধারী হতে হবে। কিন্তু বলা হয়েছে ওই অধ্যাপকের বেতন হবে ক্লাস পিছু ৩০০ টাকা। পাশাপাশি মাসে সর্বাধিক ১৬টি ক্লাস নিতে পারবেন চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী অধ্যাপকেরা। অর্থাৎ গোটা মাস মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের বেতন চার হাজার আটশ টাকা।
এই পর্যন্তও বিতর্ক ততটা গভীরে যায়নি যতটা ছড়িয়েছে সেই একই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছুমাস আগে দেওয়া আরেক বিজ্ঞপ্তি সামনে আসায়। প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে মাসিক ৫ হাজার টাকায় ঝাড়ুদার চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল একই বিশ্ববিদ্যালয়। একজন পিএইচডি ডিগ্রিধারীর মাইনে ঝাড়ুদারের থেকেও কম? এই নিয়েই জোর বিতর্ক।
অধ্যাপক নিয়োগের এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল রাজ্যজুড়ে। শুরু রাজনৈতিক তরজা। বিজ্ঞপ্তি নিয়ে জোর কটাক্ষ করে বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডাঃ সুভাষ সরকার বলেন, “বিষয়টি অদ্ভূত ও যথেষ্ট বেদনাদায়ক। ইউজিসি ২৮ মার্চ থেকেই অতিথি অধ্যাপকদের ক্লাস পিছু ১৫০০ টাকা অথবা মাসিক সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলেছে।”
তার সংযোজন, “রাজ্য সরকারের আর্থিক পরিস্থিতি এতটাই মন্দা! এতো প্রায় সিভিক পুলিশের মতো সিভিক অধ্যাপক হবে? এর চেয়ে শিক্ষা দানের আবেদন করলেই হয়।” অন্যদিকে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “রাজ্যের ভাঁড়ার কতটা শূন্য যে একজন অধ্যাপককে ৩০০ টাকা ক্লাস পিছু দিতে হচ্ছে, তা স্পষ্ট।” এই প্রসঙ্গে সরকারকে তোপ দেগেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।
Recruitment scenario in WB:-
Position: Special Lecturer
Qualification: MSc in Physics with PhDJob: Teaching subjects like Electronics & Nano Science
Remuneration: Rs. 300/class; maximum 4 classes/week = Rs. 4800/month
Terms: No TA & DA and doesn't guarantee permanent position pic.twitter.com/S1uzaKhG0H— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) March 29, 2023
সুর চড়িয়েছে বামেরাও। সিপিএম বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতির দাবি, “শিক্ষা ব্যবস্থাকে কীভাবে ধ্বংস করতে হয় এটা তার একটা নমুনা। আমরা খেতমজুরের মজুরি ৬০০ টাকা করবার দাবি তুলিছি। সেখানে অধ্যাপকের ক্লাস প্রতি ৩০০ টাকা! এতে দায়বদ্ধতা থাকবে না। শিক্ষাকে অবনতির দিকে নিয়ে যাওয়ার সার্বিক প্রয়াস।”
গোটা এই ঘটনা প্রসঙ্গে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সৌরভ দত্ত এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “এটা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা না বলে কিছুই বলতে পারব না।” যদিও এই নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।