ক্ষমা চাইতে হবে বিচারপতি গাঙ্গুলিকে, নয়তো…! এবার ময়দানে হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বহুমাস ধরে বঙ্গ রাজ্য-রাজনীতিতে বিশেষ চর্চার নাম বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay)। নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে একাধিক মামলায় উল্লেখযোগ্য রায় দিয়ে অনেক মানুষের কাছে তিনি হয়ে উঠছেন ভগবান। আট থেকে আশি বিচারপতির প্রশংসা সকলের মুখে। তবে এবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ই পড়লেন জোর বিপাকে। জাস্টিস গাঙ্গুলির বিরুদ্ধে সরব কলকাতা হাইকোর্টের বার অ্যাসেসিয়েশন। সেই নিয়ে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি (Chief Justice of Calcutta High Court) টিএস শিবজ্ঞানম কে চিঠিও দিয়েছে বার অ্যাসেসিয়েশন। যা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

কিন্তু কারণ কি? ভরা এজলাসে এক আইনজীবীকে হেনস্থা এবং অপমান করার অভিযোগ উঠেছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে হইহই কাণ্ড। সোমবার দুপুরের দিকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চে মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশনের একটি মামলার শুনানি চলছিল। জানা গিয়েছে, সেখানে কমিশনের আইনজীবী প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্যায়ের ওপর ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি।

এতটাই ক্ষুব্ধ হন যে আদালতের শেরিফকে ডেকে ওই আইনজীবীকে তার হাতে তুলে দেন বিচারপতি। ‘সিভিল প্রিজনে’ রাখার নির্দেশ দেন তিনি। বিচারপতির নির্দেশের পরই আইনজীবীদের একাংশ একক বেঞ্চে নির্দেশ প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়েরও নিজের দেওয়া নির্দেশ তুলে নেন।

তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই ভরা এজলাসে আইনজীবীর সাথে এমন আচরণের কথা গোটা হাইকোর্টে ছড়িয়ে যায়। এরপর বিকেলেই বার অ্যাসোসিয়েশন একাংশ সাধারণ সভা ডেকে এই বিষয়ে আলোচনা বসে। বৈঠকে ঠিক হয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস বয়কট করবেন ওই আইনজীবীরা। এই প্রসঙ্গে বারের সম্পাদক বিশ্বব্রত বসু মল্লিক জানান, আইনজীবীকে অপমান, হেনস্থা করার ঘটনায় যত দিন না বিচারপতি ওই আইনজীবী এবং বারের কাছে দুঃখপ্রকাশ করছেন, তত দিন এই ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলবে।

আরও পড়ুন: CID-র নির্দেশ অমান্য! ফোন জমা দিলেন না বিচারপতি সিনহার স্বামী, এবার কি তাহলে…

এই নিয়ে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ জানিয়ে তার কাছে চিঠি দিয়েছে বার অ্যাসোসিয়েশন। বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিশ্বব্রত বসু মল্লিক প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়ে জানান, এই ঘটনায় তারা অত্যন্ত দুঃখিত। এবং এই নির্দেশে তিনি অপমানিত বোধ করেছেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে নিজের নির্দেশের জন্য ওই আইনজীবী ও বারের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। নয়তো তারা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস বয়কট করবেন।

justice ganguly

এরপর এই নিয়ে প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ বসান। সেখানে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। কোনও বিচারপতির একক বেঞ্চ আইনজীবীকে নিয়ে এমন কোনও নির্দেশ দিতে পারে না বলেও সাফ জানায় ডিভিশন বেঞ্চ। তবে এরপরও বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জানিয়েছেন ক্ষমা না চাইলে তারা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস বয়কট করবেন।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর