বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ-এর প্রশংসা করার জন্য এবার প্রকাশ্যে গণপিটুনি খেতে হল উত্তরপ্রদেশের এক মুসলিম যুবককে। বিজেপি দলের হয়ে প্রচার কিংবা বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য হিংসার ঘটনা এর আগেও ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের বুকে। তবে দেশের প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্য মুখ্যমন্ত্রীর গুণগান করার জন্য সম্প্রতি এক যুবকের ওপর যেভাবে হামলা চালালো একদল মানুষ, তা নজিরবিহীন।
জানা যাচ্ছে, উত্তরপ্রদেশের বরেলি এলাকায় কামরান নামের এক যুবক বিজেপি সরকারের প্রকল্পগুলির প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘রাম’ এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে ‘কৃষ্ণের’ সাথে তুলনা করেন। এর পরেই বরেলির বারাদরি থানার অন্তর্গত সৈলানী নামক এলাকায় একদল মানুষ এতটাই চটে যায় যে, কামরানের ওপর তারা বীভৎস হামলা চালায়।
সূত্রের খবর, উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের সময় কামরান নামের ওই মুসলিম যুবক বিজেপি দলের হয়ে প্রচার করে এবং পরবর্তীকালে প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করে। বিজেপি দলের হয়ে তার এই আনুগত্য পছন্দ হয়নি এলাকার বহু মানুষের আর তার ফলস্বরূপই বর্তমানে গণপিটুনির ফলে মাথায় গুরুতর চোট নিয়ে অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে কামরান।
হামলার পর হাসপাতাল থেকে কামরানের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে স্থানীয় পুলিশ। কামরান জানায় যে, “আমি নির্বাচনের সময় থেকে বিজেপি দলের হয়ে প্রচার করছি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের জন্য যথেষ্ট কাজ করছেন। কেন্দ্র সরকারের প্রকল্প গুলির ফলে মানুষ অনেক সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। তাই আমি নরেন্দ্র মোদীকে রাম এবং যোগী আদিত্যনাথকে কৃষ্ণের সাথে তুলনা করি, আর এ কারণে এলাকার কয়েকজন মানুষ মিলে আমাকে হত্যার চেষ্টা করে।”
কামরানের কাছে এই অভিযোগ পেয়ে দ্রুত তদন্তে নামে পুলিশ এবং এলাকার পাঁচ জন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। জানা যাচ্ছে, কামরানের ভাইপো সহ আরও চার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। রাজ্যের বুকে এহেন ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও নিদা খান নামে এক মহিলার বিজেপি দলে যোগদান করার জন্য তাকে হুমকি দেয় শ্বশুরবাড়ির লোকজন সহ একাধিক মানুষ।
বিজেপি দল ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাকে ক্রমশ চাপ দেওয়া হতে থাকে এবং পরবর্তীকালে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর পর তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেয় বলে জানা যায়। এছাড়াও, অপর এক ঘটনায় দেখা যায় উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে শুধুমাত্র বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য বৃদ্ধা মাকে ঘর থেকে বার করে দেয় তার পুত্র এবং পুত্রবধূ। যদিও সকল ক্ষেত্রেই, পুলিশ প্রশাসনকে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিতেও দেখা যায়।