বাংলাহান্ট ডেস্ক : একেবারে ‘পুকুর চুরি কাণ্ড।’ একশো দিনের প্রকল্পে গাছ লাগানো ও মাটি কাটার জন্য তিন লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। এখনও পর্যন্ত ৭২টি সুপুরি গাছ বসেছে সেই টাকায়। আর কোনও কাজ আপাতত হয় নি। এখন সেই সুপুরি গাছেরও আর কোনও অস্তিত্বও নেই। এ দিকে, কার্যত নিঁখোজ বাকি টাকাও। অভিযোগ উঠছে ৭২টি সুপুরি চারা পুঁতে প্রায় তিন লক্ষ টাকা বিল করে বরাদ্দ বেশির ভাগ টাকাটাই আত্মসাৎ করেছেণ শাসক দলের কিছু নেতা।
কিভাবে হলো দুর্নীতি?
মিনাখাঁর উচিলদহ পঞ্চায়েত এলাকার এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরাও। তৃণমূলের অবশ্য দাবি করেন এখানে কোনও দুর্নীতিই হয়নি। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, একশো দিনের কাজের প্রকল্পে উচিলদহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ফলের গাছ লাগানো, মাটি কাটার কাজ হওয়ার কথা ছিল। এমনকি, এলাকায় ফলক পুঁতে কাজের বিবরণ লেখা হয়। সেই ফলক থেকেই জানা যাচ্ছে, এই কাজের জন্য বরাদ্দ ২ লক্ষ ৮১ হাজার ১৫৮ টাকা। কাজ শুরুর সময় লেখা রয়েছে, ২০২১ সালের নভেম্বর। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, নিয়ম মেনে সময় মতোই শুরু হয়েছিল কাজ। সেই সময় স্কুলের মাঠে ৭২টি সুপারি গাছ লাগানো হয়। তবে কাজ ওই পর্যন্তই। তারপরে আর কাজ কিছুই হয় নি। মাটি কেটে পাড় বাঁধানোর কাজও হয়নি কিছুই। সুপারি গাছগুলিও মারা গেছে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ।
প্রকল্পের বাকি টাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় মানুষজন। স্থানীয় বাসিন্দা প্রাণবন্ধু দাস বলেন, ‘এই ঘটনা প্রথম নয়। এর আগেও অনেকবার স্কুলের মাঠে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে গাছ লাগানো হয়েছিল। কিন্তু তার একটি গাছেরও আর বর্তমানে অস্তিত্ব নেই।’ বিজেপি নেতা জয়ন্ত মণ্ডল বলেন, ‘খেটে খাওয়া শ্রমিকদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে একশো দিনের কাজের টাকা নিয়ে তৃণমূলের নেতারা সম্পত্তি বাড়াচ্ছে, গাড়ি কিনছে, বাড়ি করছে। প্রকল্পের টাকা যে নয়ছয় হয়েছে, তা আমরা কেন্দ্রকে জানিয়েছি। এই সব দুর্নীতির জন্যই রাজ্যকে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র।’
আটপুকুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান মানস মাহাতো এই অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, গাছ লাগানো এবং মাটি কাটা মিলিয়ে মোট ৩ লক্ষ টাকার প্রকল্প হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু কেন্দ্র কোনও টাকাই দেয়নি। তাই শুধুমাত্র গাছই লাগানো হয়েছিল। নোনা এলাকা বলে গাছগুলি বেশিদিন বাঁচেনি। তৃণমূলের বদনাম করতে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’ আটপুকুর অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি সত্যজিৎ ঘোষ দাবি করেন, ‘প্রকল্পের ফলকে তো শুধু কাজ শুরুর তারিখ দেওয়া হয়েছে। এখনও কি সমাপ্তির কোনও তারিখ দেওয়া হয়ছে? তার মানে, কাজ এখনও শেষ হয়নি। আগামী বর্ষায় আরও গাছ লাগানো হবে। বিষয়টি নিয়ে বিজেপি মিথ্যা রটনা করার চেষ্টা করছে।’