বাংলা হান্ট ডেস্ক : দেখতে দেখতে জল গড়িয়েছে বহুদূর। মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সাগরদিঘীর উপনির্বাচন (Sagardighi By Election) নিয়ে তুঙ্গে ছিল জল্পনা। মুসলিম অধ্যুষিত সাগরদিঘীতে তৃণমূলকে হারাতে জোট বাঁধে কংগ্রেস ও সিপিএম। জোটের মুখ হিসাবে উঠে আসেন বায়রন বিশ্বাস। তাঁর পাশে জানিয়ে একজন সেনাপতির মত লড়াই চালিয়ে যান অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। মানুষ খুশি হয়ে ভোটও দেন বায়রনকে।
ফলাফল প্রকাশ্যের দিন উন্মাদনা ছিল দেখার মত। তৃণনূলকে পর্যুদস্ত করে যুদ্ধ জিতে যায় বাম কংগ্রেস জোট। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি থেকে প্রায় বিলুপ্ত হতে চলা বাম-কংগ্রেস নতুন করে অক্সিজেন পাশ। কিন্তু তাঁদের এই স্বস্তি উবে গেল নিমেষেই। মাত্র ৩ মাসের মধ্যেই বাংলার শাসক দল তৃণমূলে ঝাঁপ মারেন বায়রন বিশ্বাস। তাঁর এই পদক্ষেপ মানুষের উপর কতটা প্রভাব ফেলেছে তা জানতেই মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘী হাজির হয় বাংলা হান্ট।
কী বলছে মানুষ : ক্যামেরার সামনে অধিকাংশ মানুষই নিজের ক্ষোভ উগড়ে দেন বায়রনের প্রতি। তাঁদের দাবি সাগরদিঘীর মানুষের সঙ্গে বায়রন বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। এক সবজি বিক্রেতা বলেন, ‘তৃণমূলের দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ হয়েই মানুষ বায়রনকে ক্ষমতায় এনেছিল, তাঁকে ভোট দিয়েছিল কিন্তু আজ সে সাগরদিঘীর মানুষের সঙ্গে চূড়ান্ত বেইমানি করল।’
অপর এক ব্যক্তি বলেন, ‘ও এক নম্বরের মিরজাফর! আগে আমাদের অনেকেই মিরজাফর বলত। সেই তকমাটা মুছে গিয়েছিল। বায়রন আবার সেই কলঙ্ক ফিরিয়ে আনল।’ আর এক ব্যক্তি বলেন, ‘প্রথম কথা হল মানুষের বিশ্বাস। আমরা তো রাজনীতির কিছু বুঝিনা। আমরা বুঝি একে ভোট দিয়ে জেতালে আমরা কিছু পাব। তিনি এখন ছেড়ে অন্যদলে যাবেন, তাহলে মানুষ তো তাঁকে খারাপ বলবেই।’
এক ব্যক্তি তো আবার রীতিমতো চ্যলেঞ্জই ছুঁড়ে দিলেন বায়রনের দিকে। তিনি বলেন, ‘বায়রন বিশ্বাস যেটা করেছে সেটা ঠিক নয়। মানুষের সঙ্গে বেইমানি করেছে ও। যদি ক্ষমতা থাকে তাহলে ও একা জিতে দেখাক।’ তিনি আরও বলেন, ‘অধীর চৌধুরী খুব খেটেছিলেন ওর জন্য। আজ বায়রন বলছে,ভোট নাকি সে নিজের যোগ্যতায় পেয়েছে।’
তবে এরই মধ্যে উঠে আসছে ভিন্ন মতও। এক ব্যক্তি জানান, ‘বায়রন যা করেছে তা ঠিকই করেছে। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকার। বায়রন একা কংগ্রেস হলে ও কাজ করতে পারতনা। তাই তৃণমূলে যোগ দেওয়াটা সঠিক বলেই মনে করি আমি।’ অপর এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘বায়রনকে মিরজাফর বলাটা ঠিক নয়। তিনি একজন ব্যবসায়ী। কিন্তু বিরোধী দল হওয়ায় তাঁর ব্যবসা বন্ধ হওয়াড উপক্রম হয়। অধীর চৌধুরীও তাঁকে নিরাপত্তা দিতে পারেননি। তাই আমার মনে হয় বায়রন ঠিকই করেছেন।