বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান যুগে পোশাক আশাকের যেমন ধরন বদলেছে, তেমনি বদলেছে সাজের ধরন। চুলের রং থেকে শুরু করে, ঠোঁটের উপর, ভ্রুর উপর রিং পড়ে থাকেন অনেকে। তবে এর মধ্যে অন্যতম আরো একটি সাজ হচ্ছে ট্যাটু (Tattoo)। আজকাল তরুণ থেকে তরুণী এই ফ্যাশানে মজেছেন। কারোর খোলা কাঁধে কারোর আবার কব্জিতে রংবেরঙের নকশা উঁকি দিচ্ছে। যন্ত্রণা হলেও অনেকেই এই ট্যাটু করিয়ে থাকেন। কারণ এতে শারীরিক সৌন্দর্য কয়েক গুণ বৃদ্ধি পায় এমনটাই মনে করেন অনেকে। কিন্তু ট্যাটু তো করাচ্ছেন! এরপর পস্তাতে হবে না তো?
ট্যাটু (Tattoo) করার আগে চিন্তাভাবনা করুন:
অনেকেই আবেগের বশে ট্যাটু (Tattoo) করিয়ে থাকেন। কোন চিন্তা ভাবনা ছাড়াই অনেকেই শরীরের বিভিন্ন স্থানে ট্যাটু করে থাকেন। কিন্তু মাথায় রাখবেন, এই ট্যাটু করার পর আপনাকে পস্তাতে হতে পারে। কারণ একবার তো স্থায়ী ট্যাটু করিয়ে নিলে পরবর্তীতে তা চট করে শরীর থেকে উঠানো অসম্ভব। কারণ প্রথমত এই ট্যাটু তোলা অত্যন্ত খরচসাপেক্ষ, পাশাপাশি যন্ত্রণাদায়ক। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই কাজ করার আগে অবশ্যই ভাবনা চিন্তা করা দরকার।
এই ট্যাটু আসলে কি? আসলে ট্যাটু (Tattoo) বর্তমানের ট্রেন্ড নয়। বহুকাল আগে থেকেই এই ট্যাটুর প্রচলন রয়েছে। যাকে এক সময় বলা হত উল্কি। এটিকে এক ধরনের শিল্প বলা যেতে পারে। যেখানে অমোচনীয় কালি ব্যবহার করা হতো শরীরের ত্বকের রং পরিবর্তন করার জন্য। বিশেষ করে, বিভিন্ন উপজাতির ব্যক্তিরা নিজেদের চিহ্ন বোঝানোর জন্য এমন ধরনের উল্কি এঁকে থাকতেন ত্বকের উপরের অংশের ওপর। সেই সময়ও এই উল্কির প্রচলন গোটা বিশ্ব জুড়ে ছিল। আর সেই উল্কিই আজ ট্যাটু নামে পরিচিত।
ট্যাটু (Tattoo) করার পর কেনো পস্তাতে হয়: আজকালকার দিনে তরুন-তরুণীদের দুদিনের প্রেম তিন দিনে কেটে যায়। প্রথম প্রথম প্রেমে সকলে এতটাই হাবুডুবু হয়ে পড়েন যে সঙ্গীকে ছাড়া জীবন যেন অন্ধ হয়ে যায়। তাই সঙ্গির নাম করেই হাতে গলায় কব্জিতে বিভিন্ন স্থানে নাম খোদাই করে থাকেন। আবার কেউ কেউ আধ্যাত্মিক প্রকৃতির হয়ে থাকেন, তারাও বিভিন্ন ধরনের আধ্যাত্মিক ট্যাটু করে থাকেন। আবার কেউ কেউ স্টাইল করে প্রথম দিকে করলেও মনের পরিবর্তন ঘটে। ফলে ট্যাটু (Tattoo) মোছার প্রয়োজন পড়ে অনেকেরই। আবার অনেক সময় ভুল জায়গায় ট্যাটু করার ফলেও ওই নকশা তোলার প্রয়োজন পড়ে। তবে ট্যাটু করা যতটা সহজ, মোছা অনেকটাই কঠিন। অনেক সময় দেখা যায়, পেশা জীবনে এই ট্যাটু করানোর কারণে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। আশ্বাভাবিকভাবেই ট্যাটু করানোর পর অনেকেই পস্তাতে হয়।
আরও পড়ুনঃ OMG! WhatsApp Chat নাকি বিয়ের মেনু কার্ড! মুহুর্তেই ভাইরাল সেই প্রীতিভোজের তালিকা
কোথায় কোথায় ট্যাটু করা উচিত: ট্যাটু (Tattoo) শিল্পীদের মতে, হাতে, কবজিতে ট্যাটু করা সবচেয়ে বেশি শোভনীয়। এমনকি এখানে ট্যাটু করলে খুব একটা যন্ত্রণাও হয় না। পাশাপাশি ছোট ট্যাটু করার সবচেয়ে বেশি ভালো। যদি পরবর্তীতে মোছার প্রয়োজন পড়ে সেক্ষেত্রে মোছাও যায়। তাদের শিল্পীদের মতে এই পুরোটাই নির্ভর করে ডিজাইন এবং রং এর উপর।
আরও পড়ুনঃ পাত্তা পেলনা বিতর্ক! এবার ফুল ফর্মে আদানি, কিনতে চলেছেন এই বড় কোম্পানি
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ট্যাটু করলে শরীরে কি কি ক্ষতি হতে পারে? চিকিৎসকরা বলছেন ট্যাটু (Tattoo) করলে ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। বিশেষ করে ত্বকের ক্যান্সারের (Skin Cancer) ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। চিকিৎসকদের মতে ট্যাটু তৈরীর সময় যে সমস্ত কালি ব্যবহার করা হয় তাতে থাকে বিভিন্ন জৈব, অজৈব পদার্থ। অনেক সময় এই কালিতে মিশানো থাকে আর্সেনিক, ক্রোমিয়াম, কোবাল্ট, ব্লেড, নিকেল এবং পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বনস। আর ঠিক এই ধরনের রাসায়নিক উপাদান গুলির কারণে ত্বকের মধ্যে ক্যান্সারের কোষ জাগ্রত হতে থাকে। তাই যেমন ট্যাটু করলে পরবর্তীতে মোছার সময় সমস্যা হয়, আবার শরীরে মারন রোগও জেঁকে বসতে পারে। তাই ট্যাটু করানোর আগে অবশ্যই সাবধান।