বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সম্প্রতিক সময়ে দলবদল এক চিরাচরিত অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এই প্রেক্ষাপটের তালিকায় প্রথমেই যে নামটি উঠে আসে, তিনি হলেন বাবুল সুপ্রিয়। একদা বিজেপি দলের হয়ে প্রচারের সময় যে বাবুল মমতা ব্যানার্জিকে একাধিক ইস্যুতে আক্রমণ করতেন, তৃণমূলে যোগদান করার পর 180° স্থান পরিবর্তন করে বর্তমানে এক আলাদা রূপে ধরা দেন সুপারস্টার এই গায়ক এবং অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ।
আগামী 12 ই এপ্রিল বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট এবং সেই উপনির্বাচন উপলক্ষ্যে বালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। আর এবার ভোটের প্রচারে নিজের পুরনো দলের সমালোচনা করে বৃহস্পতিবার একাধিক মন্তব্য করেন বাবুল। বৃহস্পতিবার মাথায় ফেজ টুপি নিয়ে একটি ইফতার পার্টিতে যোগদান করেন বাবুল সুপ্রিয়। এই সময় তাঁর পাশের চেয়ারে যথাক্রমে মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং দেবাশীষ কুমারদেরও বসে থাকতে দেখা যায়।
তৃণমূল নেতাদের পাশে নিয়ে বাবুল সুপ্রিয় বলেন, “আমার ভাবমূর্তির সঙ্গে একটি সাম্প্রদায়িক তকমা সেঁটে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এটা একদমই ঠিক নয়। আগে আমি 70 শতাংশ মানুষের সঙ্গে শুধুমাত্র মেলামেশা করার সুযোগ পেতাম কিন্তু বর্তমানে সব মানুষের সঙ্গেই আমি মিশতে পারি।” তিনি আরো বলেন, “আমি সেই সকল 4-5 জন সংগীত শিল্পীর মধ্যে আছি, যারা পাকিস্তানে অনুষ্ঠান করার সুযোগ পেয়েছিলো।” এর পরে তিনি বিজেপির থেকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, “এখন কেউ বিতর্ক তৈরি করতে চাইলে করতে পারেন।”
ভোটের প্রচারের মাঝেই বাবুল সুপ্রিয়র এই 70 এবং 100% তথ্যকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এই বক্তব্যের মাধ্যমে নিজের পুরনো দলের বিরুদ্ধে যেমন সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদ এর বিষয়টি হাতিয়ার করেছেন বাবুল সুপ্রিয়, ঠিক একইসঙ্গে নিজের ধর্ম নিরপেক্ষ অবস্থানকেও তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন তিনি।
অতীতে বাবুল সুপ্রিয়র লোকসভা কেন্দ্র আসানসোলে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক হিংসার অভিযোগ ওঠে। সেই সময় তাঁর বিরুদ্ধে যেমন বাম-কংগ্রেস আক্রমণ করে ঠিক তেমনি ভাবে বর্তমানে তার দল তৃণমূলও একাধিক ইস্যুতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলো। ফলে বর্তমানে বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপি সেই সকল জিনিসকেই হাতিয়ার হিসেবে তুলে ধরতে চাইলেও বাবুল সুপ্রিয় অনুষ্ঠানে সোজা হাতেই ব্যাট করেন বলে মত বিশেষজ্ঞদের। ফলে ইফতারে যোগ দিয়ে তাঁর পুরানো দল বিজেপির বিরুদ্ধে বাবুলের এই মন্তব্য শেষ পর্যন্ত ভোটবাক্সে কোনো প্রভাব ফেলতে পারে কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে রাজ্যবাসী।