বাংলাহান্ট ডেস্ক : বয়স সবে সাড়ে তিন বছর। এর মধ্যেই জড়ানো গলায় ইংরেজিতে বলতে পারে দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নাম। ভিক্ষাবৃত্তির সাথে সাথে কড়া নজর রেখে চলেছেন মা (Begger Mother)।পড়াশোনায় তাই এতটুকু ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নেই গোরির। সাড়ে তিন বছরের কিষাণ দাসকে মা ভালোবেসে গোরি বলেই ডাকেন। গোরির মধ্যেই ভিখারিনী মা (Begger Mother) গড়ছেন আগামী দিনের স্বপ্ন।
ভিখারিনী মার (Begger Mother) লড়াই
কিষাণের মা রোজ নিয়মমাফিক রাজভবনের (Raj Bhavan) সামনে বসে পড়েন ‘ডিউটিতে।’ ফুটপাতের সংসারেই সন্তানকে পড়ান মিনতি। গোরির মায়ের কথায়, ‘‘ছুটির দিনে তো এ পাড়ায় ভিক্ষা মেলে না। এ বার একটা ছুটির দিন দেখে গোরিকে চিড়িয়াখানায় নিয়ে যাব। এলিফ্যান্টের সঙ্গে পিকক, লায়ন, টাইগার সব দেখিয়ে আনব।’’ রাজভবনের উত্তর দিকের গেট পার হলেই দেখা মিলবে মিনতি ও গোরির।
কেউ কেউ দেখেও দেখেন না, আবার কেউ কেউ ইচ্ছা হলে দিয়ে যান ২,৫,১০ টাকা। ছেলেকে পড়ানোর ফাঁকে ফাঁকেই সজাগ দৃষ্টি রাখেন দানপাত্রের উপর। সপ্তাহে পাঁচ দিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ‘ডিউটি’ মিনতির। দুপুরে লাঞ্চ বলতে মুড়ি-ঘুগনি। ছেলেকে (Son) অবশ্য ভর্তি করিয়েছেন রাজভবন প্রাথমিক স্কুলে। সেখানেই মিড ডে মিলের খাবার খায় কিষাণ।
আরোও পড়ুন : ‘ওই হেডফোন..’! আদালতে তিলোত্তমার বাবা-মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে বিস্ফোরক সঞ্জয়
মিনতি জানান, ‘‘ছোট থেকেই ছেলেটা ডাক্তার হতে চায়। আমি বলেছি, ডাক্তার হতে হলে কিন্তু গরিবের ডাক্তার হতে হবে। গরিব মানুষের থেকে পয়সা নেওয়া যাবে না। আমি লোকের কাছে হাত পেতে তোমায় মানুষ করছি। কিন্তু তুমি গরিব মানুষের সামনে হাত পাততে পারবে না।’’ গঙ্গার পারে ঝুপড়িতে অবশ্য মিনতির রয়েছে ‘স্থায়ী সংসার।’ স্বামীকে একটা চায়ের দোকান করে দিতে চান মিনতি।
তারসাথে চান ছেলেকে ডাক্তার তৈরি করতে। রোজগার বাড়ানোর জন্য দিনরাত এক করে দিতেও অসুবিধা নেই তার। মিনতির (Begger Mother) কথায়, ‘‘ছেলেটাকে বড় করতেই হবে। টাকা চাই। জমাচ্ছি। আরও রোজগার করতে হবে। তবে সে সব করতে গিয়ে ওকে পড়ানো কমিয়ে দিলে হবে না। ওকে পড়াই বলে অনেক দাদা-দিদি আমাকে বেশি ভিক্ষা দেয়। ওর খোঁজও নেয়।’’