বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলার কয়লা পাচার কাণ্ডে (Bengal Coal Scam) নয়া মোড়! আসালসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে (Asansol CBI court) আত্মসমর্পণ করলেন কয়লা পাচার মামলার মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালা (Anup Maji Lala)। আগামী ২১ মে কয়লা পাচার মামলায় চার্জশিট পেশ করতে চলছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। তার আগেই ধরা দিলেন লালা।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে লালকে গ্রেফতার না করতে পারলেও জিজ্ঞাসাবাদে কোনো বাধা ছিল না। সম্প্রতি কয়লা পাচার মামলায় চার্জশিট পেশ করে তদন্ত শেষ করার জন্য CBI-কে নির্দেশ দেয় আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত। তবে এই মামলার মূল অভিযুক্ত লালাকে আগেই রক্ষাকবচ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ ছিল তাকে গ্রেফতার করতে পারবে না তদন্তকারী সংস্থা। এদিকে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারপতি রাজেশ চক্রবর্তী দ্রুত তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেন।
আদালতে সিবিআই জানায় যেখানে মূল অভিযুক্ত রক্ষাকবচ পেয়েছেন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ না করে কিভাবে চার্জশিট পেশ করা সম্ভব? আদালত জানায়, লালাকে গ্রেফতার না করা গেলেও তাকে জিজ্ঞাসাবাদে কোনও বাধা নেই তদন্তকারী আধিকারিকদের। আদালতের সবুজ সংকেত মেলার পরই ময়দানে নামে CBI.
সম্প্রতি লালার খোঁজে অভিযান শুরু করে সিবিআই। পৌঁছে যায় তার বাড়িতেও। তবে খোঁজ মেলেনি লালার। এরই মাঝে এদিন সিবিআই আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন লালা। ইতিমধ্যেই যাবতীয় আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত, কয়লা পাচারকাণ্ডে আগেই সুপ্রিম কোর্টের রক্ষাকবচ পেয়েছেন মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালা। তার বিরুদ্ধে এখনই সিবিআই কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না বলে নির্দেশ রয়েছে আদালতের। তবে এই মামলার তদন্ত করছে ইডিও। ইডির মামলায় লালার কোনও রক্ষাকবচ নেই। এবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট লালাকে গ্রেফতার করতে পারে বলেও সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: জোর বিপাকে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়! কী জানাচ্ছে হাই কোর্ট?
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে কয়লা পাচার মামলার তদন্তে নামে সিবিআই। লালার বাড়ি, অফিসে তল্লাশি চালিয়ে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। আগেই এই মামলায় লালার সঙ্গী গুরুপদ মাজি-সহ চার জন গ্রেফতার হন। গুরুপদ দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি। বাকিরা অবশ্য ছাড়া পেয়েছেন। এই কয়লা পাচার মামলাতেই নাম জড়িয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটকের। নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।
এই লালার সঙ্গে গরু পাচারে অভিযুক্ত এনামুল হকেরও বোঝাপড়া ছিল বলেও খবর সামনে এসেছিল। কয়লা পাচারের এই চক্রে রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি পুলিশ-প্রশাসন, ইস্টার্ন কোল্ডফিল্ড, রেলকর্তাদের একাংশও যুক্ত ছিল বলে দাবি করেছিল সিবিআই। এবার ভোটের আত্মসমর্পণ করলেন সেই মামলার মূল অভিযুক্ত লালা। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই মামলা কোন মোড় নিতে চলেছে সেটাই দেখার।