বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের শিক্ষিকদের (West Bengal Teachers) নিয়ে বড় খবর। হাইকোর্ট (Calcutta High Court) সরকারের জারি করা বিজ্ঞপ্তি খারিজ করার ৩ বছর পরও কার্যকর হয়নি নির্দেশ। এখনও শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাদের প্রাপ্য বকেয়া পাননি। মাঝে রাজ্যের অর্থ, শিক্ষা সচিব-সহ শীর্ষকর্তাদের একাংশের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুলও ইস্যু করা হয়েছিল। তবে কোনো কিছু করেই কাজ হয়নি। তাই এই অবস্থায় এবার কড়া হাতে ব্যবস্থা নিল কলকাতা হাইকোর্ট।
কলকাতা হাইকোতের নির্দেশ, রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বাড়ি ভাড়া (হাউস রেন্ট অ্যালাওয়েন্স বা এইচআরএ) বাবদ বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে সরকারকে। শুধু তাই নয়, দিতে হবে ৬ শতাংশ হারে সুদও। চার সপ্তাহের মধ্যে সুদ সহ সমস্ত বকেয়া মেটানোর কড়া নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।
প্রসঙ্গত, বিগত কিছু দিনে ১৪ জনেরও বেশি মামলার ক্ষেত্রে এই বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। পর্যবেক্ষণে বিচারপতি জানিয়েছেন, সরকারি বিজ্ঞপ্তি বাতিল করার পরও তা কী করে অমান্য করছে রাজ্য? কেন বকেয়া মেটানো হচ্ছে না তা নিয়ে বিস্মিত আদালত।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে রাজ্য সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানায়, সরকারি ক্ষেত্রে কর্মরত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একজন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং অন্যজন সরকার পোষিত বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষক বা শিক্ষিকা হলে, এদের মধ্যে একজনই কেবল মাত্র বাড়ি ভাড়া বাবদ ভাতা পাওয়ার যোগ্য।
রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের পর মামলা হয় হাইকোর্টে। ২০২১ সালে সেই মামলায় রাজ্য সরকারের দেওয়া বিজ্ঞপ্তি খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি বকেয়া মেটানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়। অভিযোগ কিছু কিছু জেলায় হাইকোর্টের নির্দেশ আংশিক কার্যকর হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা মানা হয়নি। বকেয়া মেটায় নি রাজ্য।
আরও পড়ুন: দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার আগমন, ঝেঁপে আসছে বৃষ্টি! কখন থেকে শুরু? IMD-র কাঁপানো আপডেট
হাইকোর্টের নির্দেশ না মানায় গত বছর ফের মামলা হয়। আদালত অবমাননার মামলা করলে সেই মামলাতেই রাজ্যের শিক্ষা, অর্থ সচিব-সহ বেশ ক’জন শীর্ষ আধিকারিকের বিরুদ্ধে রুল ইস্যু করে হাইকোর্ট। যদিও সেই সময় আদালতে হাজির হয়ে বকেয়া দ্রুত মেটানো হবে বলে জানান ওই অফিসাররা। তবে এত কিছুর পরও সমস্যার সমাধান হয়নি।
একই অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকেই। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে মামলা উঠলে এবার বিরাট কড়া নির্দেশ দিলেন বিচারপতি। জানা গিয়েছে ২০১২-র পর থেকে কারও কারও ১০ বা কারও পাঁচ, কারও বা দু’বছরের বকেয়া আটকে রাখা হয়েছে। এবার সেই সব আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে মেটানোর জন্য নির্দেশ রাজ্যকে।