বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে বারবার সরব হয়েছে বিজেপি। এমনকি বিজেপির অনেক নেতাই বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন লাগু করারও দাবি জানিয়েছেন। এছাড়াও বাংলার রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে মামলাও হয়েছে। সেই মামলার শুনানিতে সায়ও দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে বাংলার রাষ্ট্রপতি শাসন লাগু এবং আধাসেনা মোতায়েনের দাবি করা হয়েছিল। মামলাকারীর মতে, এই কাজ না করলে রাজ্যে শান্তি ফিরবে না।
পাশাপাশি ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর রাজ্যে কীভাবে এরকম হিংসা ছড়াল সেটারও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। মামলাকারী তদন্তের জন্য সিট গঠনের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। লখনউ-এর আইনজীবী রঞ্জনা অগ্নিহোত্রীর বাংলার ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের মামলার পরিপেক্ষিতে কেন্দ্র আর রাজ্য সরকারকে নোটিশ জারি করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকেও নোটিশ জারি করা হয়েছে।
এই মামলায় তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও পক্ষ করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে। তবে ওনাকে কোনও নোটিশ পাঠানো হয়নি। বিচারপতি বিনীত সারান এবং বিচারপতি মহেশ্বরীর বেঞ্চের পাঠানো নোটিশে সব পক্ষের কাছেই মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। নিগৃহীত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য কেন্দ্র এবং রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের কাছে এও জানতে চাওয়া হয়েছে যে, বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা এবং আধাসেনা নামানো নিয়ে কেন্দ্রের কী মত।
উল্লেখ্য, বাংলার ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে শীর্ষ আদালতে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়াও গোটা দেশের ২ হাজারের বেশি মহিলা আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিকে চিঠি লিখে বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসার পর নারী নির্যাতনের মামলা নিয়ে সরব হয়েছিলেন। আরেকদিকে, দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দকে চিঠি লিখে বাংলার হিংসা নিয়ে অবগত করিয়েছিলেন।
দিন কয়েক আগে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির সাত সদস্যের রিপোর্ট জমা পড়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে। সেই রিপোর্টে বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে চাঞ্চল্যকর নথি পেশ করা হয়েছে। রিপোর্টে এও বলা হয়েছে যে, বাংলার ভোট পরবর্তী হিংসায় ৭ হাজারের বেশি মহিলা আক্রান্ত হয়েছে। রাজ্যের ১৫টি জেলায় তুমুল হিংসার কথা উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
দু’দিন আগে রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার মামলার তদন্ত করতে আসা টিমের উপরেও হামলার অভিযোগ উঠেছে। যাদবপুরে ৪০টি বাড়িঘর ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়ার পর NHRC-এর প্রতিনিধি দল সেখানে পর্যবেক্ষণে যান। আর সেই সময় তাঁদের উপর হামলার অভিযোগ ওঠে। তবে সুপ্রিম কোর্টের এই নোটিশের পর বাংলার ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে কোনও সুরাহা হয় নাকি, সেটাই দেখার বিষয়।