২ বছরেই ফুলে-ফেঁপে উঠেছে বিজেপি নেতা জগন্নাথের পরিবার! কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে নালিশ দলের কর্মীর

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: মাত্র ২ বছরেই ফুলে-ফেঁপে উঠেছে সম্পত্তি! রয়েছে আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগও, শুধু তাই নয়, তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছেও পৌঁছে গিয়েছে নালিশ। আর যাঁর বিরুদ্ধে এহেন গুরুতর অভিযোগ সামনে এসেছে তিনি হলেন রাজ্য বিজেপির (Bharatiya Janata Party) অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, তাঁর বিরুদ্ধে দিল্লিতে নালিশ জানিয়েছেন বিজেপি কর্মী অজয় মুখোপাধ্যায়।

কী অভিযোগ করা হয়েছে: এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, মাত্র ২ বছরের মধ্যেই হু হু করে বৃদ্ধি পেয়েছে জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের সম্পত্তি। ২০২৩ সালের পর জগন্নাথের আত্মীয়দের নামে বিপুল সম্পত্তি কেনার বিষয়ও সামনে এসেছে। অভিযোগ করা হচ্ছে যে, ২০২১ সালে বীরভূমের সিউড়ি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির (Bharatiya Janata Party) টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা জগন্নাথ ২০২৩ সাল থেকে তাঁর বাবা মা ভাই সহ শালির নামে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি কিনেছেন। সেই সংক্রান্ত পরিসংখ্যানও সামনে এসেছে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অজয় মুখোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, এর আগে জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের এহেন বিপুল সম্পত্তি ছিল না। কিন্তু, বিগত ২ বছর ধরে সিউড়িতেই জগন্নাথের মা-বাবা এবং ভাইয়ের নামে বিপুল জমি কেনা হয়। এর পাশাপাশি রাজারহাটে তাঁর শালির নামে কেনা হয় প্রায় ২,৫০০ স্কোয়ার ফুটের ফ্ল্যাট। সামগ্রিকভাবে এই সম্পত্তিগুলির মোট দাম প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকার কাছাকাছি।

 Bharatiya Janata Party Jagannath Chattopadhyay update.
জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

অভিযোগ করা হচ্ছে যে, দলের (Bharatiya Janata Party) টাকা আত্মসাতের মাধ্যমেই এই বিপুল সম্পত্তি খাড়া করেছেন জগন্নাথ। আসলে, রাজ্য বিজেপির একাধিক খরচের অনুমোদন করে থাকেন জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। সেই সময়ে অনুমোদনের বিনিময়ে তাঁর কমিশন নেওয়ারও অভিযোগ সামনে এসেছে। শুধু তাই নয়, পুরভোট থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত ভোট এবং উপনির্বাচনেও তিনি টাকা আত্মসাৎ করেন বলে দাবি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ২৮ এপ্রিল হতে চলেছে ধামাকা! ফ্রান্সের সাথে হবে সবচেয়ে বড় চুক্তি, শক্তি বাড়বে ভারতের

এদিকে, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটেও ভুয়ো বুথ দেখিয়ে ২০ লক্ষ টাকার আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে জগন্নাথের বিরুদ্ধে। আর এইভাবেই বিভিন্ন ভোটে বুথের বেশি সংখ্যা দেখিয়ে তিনি প্রায় ৪ কোটি টাকা হাতিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়। এর পাশাপাশি অজয় মুখোপাধ্যায় আরও দাবি করেছেন বিজেপির (Bharatiya Janata Party) গোপন খবর তৃণমূল নেতাদের পাচার করা ছাড়াও তৃণমূল নেতাদের সাথে তোলাবাজিতেও তিনি নাকি যুক্ত থাকতেন।

আরও পড়ুন: অলৌকিক ঘটনা! মন্দিরের উদ্বোধনের আগেই সমুদ্রপথে দিঘায় উপস্থিত স্বয়ং জগন্নাথ দেব

এমতাবস্থায়, সামগ্রিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জগন্নাথের বিরুদ্ধে ওঠা এইসব অভিযোগ ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে বিজেপির (Bharatiya Janata Party) কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। এমনকি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছেও অভিযোগ পৌঁছেছে বলে খবর মিলেছে। এদিকে, এই ঘটনা সামনে আসার পরেই বিষয়টিকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল শিবির। ইতিমধ্যেই তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষ জানিয়েছেন, “২০২৩ থেকে ২০২৫ এই অল্প সময়ের মধ্যেই বিজেপির একজন গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী, যিনি পথ দেওয়া এবং টিকিট বিতরণের সাথে যুক্ত থাকেন তিনি তাঁর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের নামে বিপুল সম্পত্তি তৈরি করেছেন।” সেই সংক্রান্ত প্রমাণও সামনে আনেন কুণাল। তিনি আরও জানান, “এই ঘটনার তদন্তকে করবে, ইডি, সিবিআই করুক। রাজ্যের যে CID আছে তার কাছে কপি পাঠিয়ে দেব।” এদিকে, বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক সিনহা জানিয়েছেন, “কার সম্পর্কে কোন নেতা মেল করেছে এই বিষয়ে আমার জানা নেই। যদি কেউ মেল করে থাকেন তাহলে অবশ্যই তদন্ত করুক না।” এদিকে, এই সামগ্রিক বিষয়ে জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।

Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

X