পুরনোদের ব্রাত্য রেখে নতুনদের গুরুত্ব! মিঠুনের বক্তব্যে ক্ষোভ বিজেপির অন্দরে

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর বিধানসভা ভোটের পূর্বে দুশো ভোটে জয়লাভের স্বপ্ন দেখিয়েও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয় বিজেপি (Bharatiya Janata Party)। মাত্র ৭৭-এ থেমে যেতে হয় তাদের। শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে দলীয় কোন্দল এবং দল ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে (Trinamool Congress) নেতা কর্মীদের যোগদানের ফলে ইতিমধ্যেই মুখ থুবড়ে পড়েছে পদ্মফুল শিবির। আর এর মাঝে সম্প্রতি মিঠুন চক্রবর্তীর (Mithun Chakraborty) বক্তব্যে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হলো।

উল্লেখ্য, গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে নেতা কর্মীদের ভাঙিয়ে বিজেপিতে যোগদান মেলার সূচনা হয়। শুভেন্দু অধিকারী থেকে রাজীব ব্যানার্জির মত অসংখ্য নেতা-মন্ত্রীরা যোগদান করেন বিজেপিতে। এক্ষেত্রে কখনো অমিত শাহের সভায়, তো কখনো আবার প্রাইভেট বিমানে করে দিল্লিতে উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে এই সকল নেতাকর্মীদের যোগদান করানো হয়। যদিও বিজেপির এই কৌশল কাজে লাগেনি নির্বাচনে। উল্টে দুশোর ওপর ভোটে জিতে পুনরায় একবার ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হয় তৃণমূল কংগ্রেস।

একইসঙ্গে নির্বাচনের পর একের পর এক নেতা মন্ত্রীরা বিজেপি ছেড়ে পুনরায় একবার যোগদান করেন ঘাসফুল শিবিরে, যার পর থেকেই চরমে ওঠে বিজেপির আদি-নব্য দ্বন্দ্ব। দলে যারা অনেক আগে থেকেই রয়েছে, সেই সকল পুরাতন সৈনিককে বাদ দিয়ে নতুনদের কেন এত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন তারা। এই প্রসঙ্গে এক বিজেপি নেতা বলেন, “দলের পুরনো নেতাকর্মীদের সম্মান দেওয়া প্রয়োজন। তারা সক্রিয় না হলে অন্য দল থেকে লোক এনে কোনো সমাধান হবে না। এতে ক্ষোভ বাড়বে।”

সম্প্রতি, মিঠুন চক্রবর্তীর একটি বক্তব্য সেই বিতর্ককেই আরো উস্কে দিল। কয়েক দিন পূর্বে বাংলায় পদার্পণ করেন বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে পাশে নিয়ে তিনি দাবি করেন, “তৃণমূলের ২১ জন বিধায়ক রয়েছেন, যারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। তারা অতি দ্রুত তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করবেন।” তাঁর এই মন্তব্যের পর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব পুনরায় একবার চরম আকার ধারণ করেছে।

গত বছর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির কৌশল ব্যর্থ হলে পুনরায় কেন আবার দল ভাঙানোর চেষ্টা করা হয়ে চলেছে, তা নিয়ে সরব একাধিক মহল। এই ইস্যুতে দিলীপ ঘোষ জানান, “মিঠুন যে ২১ জনের কথা বলেছেন, সেই বিষয়ে আমার কোন ধারণা নেই।” তবে দিলীপ ঘোষ এই বিষয়ে প্রকাশ্যে বিশেষ কোন মন্তব্য করতে রাজি না হলেও আবার অপরদিকে মিঠুনকে সমর্থন করেছেন সুকান্ত মজুমদার।

Mithun bjp 1

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মুহূর্তে দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সায়ন্তন বসুদের মতো পুরনো নেতাকর্মীদের কোণঠাসা করে দেওয়ার চেষ্টা করে চলেছে নয়া নেতৃত্ব। এক্ষেত্রে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে অন্যান্য একাধিক নেতা কর্মীদের এই কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে। তবে আদি-নব্য দ্বন্দ্ব মাঝে শেষপর্যন্ত বাংলায় বিজেপির ভবিষ্যৎ কি হয়, সেটাই দেখার।


Sayan Das

সম্পর্কিত খবর