বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আর মাত্র পাঁচদিন। তারপরেই ভোট হতে চলেছে ভবানীপুর সহ রাজ্যের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে। তবে সবার নজর এবার ভবানীপুরেই। কারণ এবার ভবানীপুরে তৃণমূল বনাম বিজেপির আত্মসম্মানের লড়াই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে থাকার লড়াই। এবং তৃণমূলের বিজেপিকে কুপোকাত করার লড়াই। কিন্তু এই লড়াইয়ে বাধ সেধেছে টানা বৃষ্টি ও ভবানীপুরে জমে থাকা জল।
তবে, তৃণমূল এই বৃষ্টিকে পাত্তা দিতে নারাজ। তাঁদের মতে এই বৃষ্টি দল এবং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য খুব শুভ। কারণ ২১ জুলাই শহীদ সমাবেশের দিনে প্রায় প্রতিবছরই তৃণমূল নেত্রী এবং গোটা দল ও সমর্থকরা বৃষ্টি মাথায় নিয়ে সমাবেশে অংশ নেন। কোনদিনও বৃষ্টির জন্য সেই সমাবেশে খামতি দেখা দেয়নি।
তবে তৃণমূল মুখে যাই বলুক না কেন, বৃষ্টি যে তাঁদের ভাবাচ্ছে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ গোটা মহানগরীই জলযন্ত্রণায় ভুগছে। তৃণমূল দশ বছর ক্ষমতায় থাকার পরেও এই জলযন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাননি কলকাতাবাসীরা। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের কেন্দ্রেও জলে ভাসছে। অন্যদিকে, শনিবার থেকে কলকাতা সহ দক্ষিণ বঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় টানা বৃষ্টির সম্ভাবনা জাহির করেছে হাওয়া দফতর।
আগে থেকে জমা জল আর নতুন করে বৃষ্টির ফলে ৩০ তারিখ ভোটাররা বুথমুখো হবেন কী না, সেটা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে এখন। ভবানীপুরে তৃণমূল এবং বিজেপি দুই দলই জোর কদমে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় নিশ্চিত ধরেই রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে, বিজেপির আবার হারানোর কিছুই নেই, কিন্তু শেষ বেলায় মরণ কামড় দিতে উঠেপড়ে লেগেছে তাঁরা।
খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় আশঙ্কার সুরও শোনা গিয়েছে। তিনি ভরা সভায় বলেছেন যে, আপনারা ভোট না দিলে আমি আর মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারব না। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, নন্দীগ্রামের হারের পর ভবানীপুর নিয়ে কিছুটা হলেও আশঙ্কা রয়েছে তৃণমূল নেত্রীর বুকে। অন্যদিকেম তৃণমূলের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু সবাইকে ভোট দেওয়ার আবেদন করেছেন মাত্র, এতে আশঙ্কার কিছুই নেই।
উল্লেখ্য, গোটা রাজ্য ভোটদানে রেকর্ড করলেও কলকাতা ঠিক উল্টোপথে হাঁটে। বৃষ্টি, বাদল না থাকলেও কলকাতার ভোটাররা বুথমুখো হতে চাননা খুব একটা। তাঁর মধ্যে এবারের নির্বাচন আবার সরকার গঠনের না শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নির্বাচিত করার জন্য ভোট হচ্ছে। আর এখানেই দানা বাঁধছে আশঙ্কার মেঘ।
যদিও, মুখ্যমন্ত্রী ওই দিন সবেতন ছুটির ঘোষণা করেছেন। কিন্তু টানা বৃষ্টি আর কয়েক ফুট জল ঠেলে ভবানীপুরের ভোটাররা বুথ মুখো হন কী না, সেটাই দেখার বিষয়। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, একটা ঝটকা দেওয়ার জন্য বিজেপির সমর্থক ভোটাররা জল, বৃষ্টি উপেক্ষা করেও বুথে যেতে পারেন। কিন্তু বাকিরা সেদিন এই ঝঞ্ঝা সহ্য করে ভোট দেবেন কী না, তা নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে। তবে, ৩ অক্টোবরই প্রমাণ হবে ঝড়-জল-বৃষ্টি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঠেকাতে পারে কী না।