বাংলাহান্ট ডেস্ক: রাতারাতি ভাগ্য বদলে গিয়েছিল ভুবন বাদ্যকরের (Bhuban Badyakar)। একটি মোটরবাইক নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে কাঁচা বাদাম বিক্রি করতেন তিনি। সঙ্গে গাইতেন স্বরচিত গান ‘কাঁচা বাদাম দাদা কাঁচা বাদাম, আমার কাছে নাই গো বুবু ভাজা বাদাম’। সেই গানের দৌলতেই ভাগ্য বদলায় ভুবনের। দুবরাজপুর থেকে কলকাতায় এসে একের পর এক গানের শো করেছেন। বেড়েছে ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স।
জনপ্রিয়তা পেয়ে দুনিয়াটাই যেন বদলে গিয়েছিল ভুবনের। আজীবন দারিদ্র্য দেখে আসা ‘বাদাম কাকু’ হাতে টাকা পেয়ে কুঁড়েঘর থেকে উঠে আসেন পাকা বাড়িতে। লাখ লাখ টাকা খরচ করে তৈরি করেন সুদৃশ্য অট্টালিকা। পরিবার সমেত সেই বাড়িতেই থাকছিলেন ভুবন।
থাকছিলেন, এখন আর নেই। সাধের বাড়ি ছেড়ে পালাতে হয়েছে ভুবনকে। নিজের পয়সা, পরিশ্রম দিয়ে বানানো বাড়ি ছেড়ে, নিজের গ্রাম ছেড়ে তাঁর আস্তানা এখন এক ভাড়া বাড়ি। সেখানেও ভাড়া গুনে কতদিন থাকতে পারবেন তা জানেন না ভুবন। ভাঁড়ার প্রায় শূন্য। সব মিলিয়ে দারিদ্র্য আবার ফিরে এসেছে তাঁর জীবনে।
কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে পড়লেন কী করে ভুবন? কাঁচা বাদামের জোরে বেশ কিছু টাকা রোজগার করেছিলেন তিনি। সেই টাকা দিয়ে শখ করে পাকা বাড়ি বানিয়েছিলেন ভুবন। ইন্টিরিয়র ডিজাইনার দিয়ে সাজিয়েছেন অন্দরমহল। কিন্তু কপালে সুখ বেশিদিন সইল না ভুবনের। সেই বাড়ি ছেড়ে পালাতে হল তাঁকে।
ভুবনের পরিবারের তরফে জানানো হয়, নাম ছড়িয়ে পড়ার পরেই চাঁদার জুলুম শুরু হয়েছিল তাঁর বাড়িতে। বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ৫০০-১০০০ টাকা করে চাঁদা চাওয়া হত। না দিলেই চলত শাসানি, ভয় দেখানো। মাঝে মাঝে নাকি মোবাইল কেড়ে নিয়েও পালাত জুলুমকারীরা। শেষে তা মাত্রা ছাড়ালে সপরিবারে বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন ভুবন। গত পাঁচ মাস ধরে দুবরাজপুরে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, বাড়ির মাসিক ভাড়া ২৭০০ টাকা। কিন্তু এই টাকায় কতদিন তিনি চালাতে পারবেন জানেন না ভুবন। কারণ কপিরাইট ইস্যুর জেরে নতুন গানও গাইতে পারছেন না, পুরনো গানও গাইতে পারছেন না। ফলে আয়ও বন্ধ। ভুবন বলেন, যে গান তাঁকে জনপ্রিয়তা দিয়েছিল সেই গানের জন্যই আজ তিনি বাড়িছাড়া। আর কয়েক মাস পরে ফেরার ইচ্ছা নিজের বাড়িতে। কিন্তু এত টাকা ভাড়া দিয়ে কতদিন থাকতে পারবেন সেটা নিয়েই চিন্তিত ভুবন।