বাংলাহান্ট ডেস্ক: খাচ্ছিল তাঁতি তাঁত বুনে, কাল হল তার এঁড়ে গরু কিনে। ভুবন বাদ্যকরের (Bhuban Badyakar) এখন এমনি পরিস্থিতি। গ্রামে গ্রামে ঘুরে কাঁচা বাদাম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি। টানাটানির সংসার চলে যেত কোনো রকমে। কিন্তু তাঁর স্বরচিত ‘কাঁচা বাদাম’ গান ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই দিন বদলাতে শুরু করে। সুদিন উপস্থিত হয় ভুবনের সংসারে। কিন্তু এখন তিনি এমন পরিস্থিতিতে পড়েছেন যে সাহায্যের আর্জি জানানো ছাড়া আর কোনো উপায় নেই তাঁর কাছে।
ভাইরাল কাঁচা বাদাম গানের দৌলতে হাতে বেশ কিছু টাকা এসেছিল ভুবনের। সেই টাকা দিয়ে একটি পাকা বাড়ি বানানোর কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। খড়ের চালের কাঁচা বাড়ি ছেড়ে উঠে গিয়েছিলেন নতুন আস্তানায়। সে বাড়ি তাঁর হাতছাড়া হয়েছে আগেই। পাড়ার কিছু গুণ্ডার দৌরাত্ম্যে নিজের বাড়ি ছেড়ে পালাতে হয়েছে তাঁকে। থাকছেন এক ভাড়াবাড়িতে।
এবার কার্যত পথে বসার জোগাড় হয়েছে ভুবনের। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট প্রায় ফাঁকা তাঁর। সংবাদ মাধ্যমকে বাদাম কাকু জানান, ‘গোধূলিবালা মিউজিক’ এর কর্ণধার গোপাল ঘোষ তাঁর থেকে ‘কাঁচা বাদাম’ গানের কপিরাইট কিনে নিয়েছেন। চুক্তির সময়ে তাঁকে বলা হয়েছিল, প্রতি মাসে ৪০ হাজার টাকা করে পাবেন তিনি। কোনো বার সামান্য কম হতে পারে।
একবারই ৩৯ হাজার টাকা ঢুকেছিল বলে দাবি ভুবনের। তারপর থেকে আর একটা পয়সাও আসেনি তাঁর অ্যাকাউন্টে। দু বছর ধরে একটা টাকাও পাননি ভুবন। এদিকে ৩৯ হাজার টাকা প্রায় শেষ। কপিরাইট বিতর্কের জেরে নিজের বানানো গান নিজেই গাইতে পারছেন না ভুবন বাদ্যকর। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে তাঁর।
ভুবনের কাতর আর্জি, ‘আমাকে বাঁচান! যে কটা টাকা রয়েছে তা দিয়ে সংসার চলবে না’। ভাইরাল ভুবনকে নিয়ে মাতামাতি বন্ধ হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সকলে ব্যস্ত নিত্য নতুন ভাইরাল বিষয় নিয়ে। স্মৃতির অতলে হারিয়ে যেতে বসেছেন বাদাম কাকু। শোতেও আর ডাক পান না তেমন। রোজগার নেই-ই। এমন পরিস্থিতিতে পরিবারের সবার পেটে ভাতের জোগান কীভাবে হবে সেই চিন্তাই কুরে কুরে খাচ্ছে ভুবনকে।
কাঁচা বাদাম এর কপিরাইট ইস্যুতে গোপাল ঘোষের প্রতারণা করার অভিযোগ আগেই জানিয়েছিলেন ভুবন। অভিযুক্ত গোপালের সঙ্গে সংবাদ মাধ্যমের তরফে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ভুবনের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছেন তাঁরা।