বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য রতন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। পথের পাঁচালী, অপুর সংসার, আদর্শ হিন্দু হোটেল, চাঁদের পাহাড়ের মতো অজস্র কালজয়ী লেখা বিভূতিভূষণকে জায়গা করে দিয়েছে বাঙালি পাঠকের মনের মণিকোঠায়। সাহিত্য চর্চা ছাড়াও বিভূতিভূষণের আরো একটি দিক ছিল।
বিভূতিভূষণের (Bibhutibhushan Bandopadhyay) প্ল্যানচেট চর্চা
সেটি হল পরলোক চর্চা। বিভূতিভূষণ গবেষকরা বলে থাকেন, প্রথম স্ত্রী গৌরী দেবীর মৃত্যুর পর বিভূতিভূষণ প্রথম পরলোক চর্চা সম্পর্কে আগ্রহ বোধ করেন। গৌরী দেবীর মৃত্যুর পর কিছুদিনের মধ্যেই মারা যান বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বোন। একের পর এক আঘাতের পর বিভূতিভূষণ তখন হয়ত খুঁজছিলেন কোনও অতিপ্রাকৃতিক আশ্রয়।
জানা যায়, কলকাতায় টালিগঞ্জে এক তান্ত্রিকের সান্নিধ্য পেয়ে বিভূতিভূষণ পরলোক চর্চার প্রতি বিশেষ আকর্ষণ অনুভব করেন। সেই সন্ন্যাসীর থেকেই নাকি তিনি শিখেছিলেন প্ল্যানচেট। বিভূতিভূষণ যে কতটা পরলোক চর্চার বিষয়ে আকৃষ্ট হয়ে পড়েছিলেন তার প্রমাণ পাওয়া যায় আরো একটি ঘটনার মাধ্যমে।
আরোও পড়ুন : ১০০০ থেকে বাড়িয়ে ১৮০০! এই প্রকল্পের বরাদ্দ বাড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী! বছর শেষের আগেই মিলল সুখবর
বিভূতিভূষণ (Bibhutibhushan Bandopadhyay) পরলোক চর্চার জ্ঞান উন্নীত করার জন্য যোগদান করেন কলেজ স্কোয়ারের থিওসফিক্যাল সোসাইটিতে। সেখানে বিভূতিভূষণ নাকি প্ল্যানচেটে কথাও বলেছিলেন মৃত স্ত্রী গৌরী দেবীর সাথে।অনেকেই বলেন, শেষ জীবনে বিভূতিভূষণ শুরু করেছিলেন শব সাধনাও।
আরোও পড়ুন : DA অনেক হল! এবার হুড়মুড়িয়ে বাড়বে সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতন! সামনে বড় আপডেট
প্রেতাত্মাদের সাথে কথাও বলতেন নিয়মিত। শোনা যায়, একবার বিভূতিভূষণ (Bibhutibhushan Bandopadhyay) ঘুরতে গিয়েছিলেন ফুলডুংরিতে। সেখানে একদিন জঙ্গলের মধ্যে ঘুরতে ঘুরতে দেখতে পেয়েছিলেন একটি সাদা চাদরে মোড়া মৃতদেহ। সেই মৃতদেহের চাদর সরাতেই তিনি দেখতে পান নিজেকে।
এই দৃশ্য দেখার পর বিভূতিভূষণ এতটাই হতবাক হয়েছিলেন যে জঙ্গলের মধ্যেই জ্ঞান হারান। এই ঘটনার পর অবশ্য বেশিদিন আর বাঁচেননি বাংলা সাহিত্যের এই অমর কথা সাহিত্যিক। ফুলডুংরি থেকে ঘুরে আসার পরই কিছুদিনের মধ্যেই ইহলোকের মায়া ত্যাগ করেন প্লানচেটে (Planchet) মগ্ন হয়ে থাকা বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়।