বাংলা হান্ট ডেস্কঃ টলিপাড়ার অতি পরিচিত তিন মুখ। এবার তাঁরাই আইনি পথ বেছে নিলেন। এখানে কথা হচ্ছে, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় (Parambrata Chattejee), অনির্বাণ ভট্টাচার্য (Anirban Bhattacharrya) এবং ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরীর। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) হস্তক্ষেপ চেয়ে একটি রিট পিটিশন ফাইল করেছিলেন ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার সদস্য পরিচালক বিদুলা ভট্টাচার্য। বিচারপতি অমৃতা সিনহা তার শুনানিও করেন। এবার ওই একই পথে হাঁটতে চলেছেন পরমব্রত, অনির্বাণরা।
২০ মার্চ হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিদুলা ভট্টাচার্য!
উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করা নিয়ে একটি সংবাদমাধ্যমের কাছে পরিচালক বিদুলা বলেছিলেন, ‘আমি ফেডারেশনের বেশ কিছু নিয়মের বিরুদ্ধে। বদল আনতে একাধিকবার কমিটি তৈরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, সেটাও হয়নি। আমি একজন ইনডিপেনডেন্ট ফিল্মমেকার। আমার পিছনে বড় প্রযোজক থাকে না। কিন্তু তাই বলে, ছোট ক্রু, পছন্দসই কলাকুশলীদের নিয়ে কাজ করতে পারব না? আমার মতো পরিচালকদের ওপর জোর করে লোকজন চাপানো হতে পারে না। এসবের বিরুদ্ধেই উচ্চ আদালতে পিটিশন দাখিল করি’।
বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অমৃতা সিনহা এই পিটিশনের শুনানি করেছেন। সেদিনই ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের উদ্দেশে তিনি নির্দেশ দেন, কোনওভাবেই যেন পরিচালক বিদুলা ভট্টাচার্যের কাজে বাধা না দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ রাজ্য সরকারি কর্মীদের পোয়া বারো! ঈদের আগেই ৩% DA বৃদ্ধি! কবে থেকে অ্যাকাউন্টে ঢুকবে?
সেদিনের শুনানিতেই রাজ্য জানায় কোনও কমিটি তৈরি করা হয়নি। তার প্রেক্ষিতে রাজ্য কর্তৃপক্ষকে FCTWEI-এর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেটা আদালতকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয় (Calcutta High Court)। হাইকোর্টের এই রায়ে আপাতত খানিকটা স্বস্তিতে ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার বাকি সদস্যরা। এবার বিদুলা ভট্টাচার্যের এই সাহসী পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়ে আইনি পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিলেন অনির্বাণ, পরমব্রত, ইন্দ্রনীল।
ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার সদস্যদের উদ্দেশে এই তিনজনের লিখিত বক্তব্য একটি সংবাদমাধ্যমের হতে এসেছে। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘এই বক্তব্য আমাদের তিনজনের। ব্যক্তিগতভাবে আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যা আমাদের বাকি সদস্যদের জানানো দরকার বলে মনে হয়েছে। গত বছর জুলাই থেকে ঘটে যাওয়া নানান ঘটনার সাক্ষী আমরা সবাই। কী হয়েছে সেটার বিবরণে আমরা যাচ্ছি না। আমরা সবাই আমাদের মতো করে তা দেখেছি। আমরা তিনজনেই ব্যক্তিগতভাবে এই প্রক্রিয়ার অংশ ছিলাম’।
পরমব্রত, অনির্বাণ, ইন্দ্রনীল জানিয়েছেন, ‘যা ঘটেছে ও যেভাবে ঘটেছে সবকিছু যে আকাঙ্ক্ষিত ও প্রত্যাশিত ছিল তা নয়। বহু সময়ই নানান কারণে পিছু হটতে হয়েছে। কখনও কৌশলগত কারণে, কখনও সংগঠনের সদস্যদের দাবির কথা মাথায় রেখে। আমাদের কিছু সহযোগী সদস্যদেরও আচরণ হয়তো কাউকে দুঃখ দিয়ে থাকতে পারে। তার ন্যায্যতাও আমরা স্বীকার করছি। বৃহত্তর বাস্তবতার কথা মাথায় রেখে শেষ দিন অবধি আমরা চেয়েছিলাম যাতে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে একটা গ্রহণযোগ্য সমাধানে আসা যায়। ফেডারেশন কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে পরিষ্কার জানানো হয়েছে, কোনও অবস্থাতেই তারা কোনও আলোচনায় যেতে চান না’।
পরমব্রতরা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই একটি নতুন সংগঠনও তৈরি হয়ে উঠেছে। তাঁদের কথায়, ‘আমাদের একাধিক সদস্য সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিংবা হয়তো সেখানে যাওয়ার কথা ভাবছেন। কারোর সিদ্ধান্ত নিয়েই আমাদের কোনও বক্তব্য নেই। তবে উপস্থিত অবস্থায় আমাদের মনে হয়েছে আমাদের ব্যক্তিগতভাবে কিছু স্পষ্ট অবস্থান নেওয়া আশু দরকার’।
আরও পড়ুনঃ সত্যিই জেলে বসে হুমকি ফোন করেছেন শাহজাহান? তদন্তে যা বেরিয়ে এল… তোলপাড় বাংলা!
এমতাবস্থায় পরিচালক বিদুলা ভট্টাচার্য (Bidula Bhattacharjee) এককভাবে যে ‘সাহস’ দেখিয়েছেন তাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পরমব্রত, অনির্বাণ, ইন্দ্রনীল। তাঁরা জানিয়েছেন, ‘তিনি নিজের কাজের নিরাপত্তার কথা ভাবেননি। সংগঠনের বেশিরভাগ সদস্যের মনের আকাঙ্ক্ষা নিজের ব্যক্তিগত ঝুঁকিতে প্রকাশ করেছেন। অন্য কারোর কথা বলতে পারি না। আমরা তিনজন সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই আইনি লড়াইয়ে আমরা তার পাশে সক্রিয়ভাবে থাকব। আইনের পথ ছাড়া এই মুহূর্তে এই সমস্যার মোকাবিলা করার আর কোনও সমাধান আমাদের চোখে পড়ছে না। বাকি যা পড়ে রয়েছে তা অসহায় আত্মসমর্পণ। যেটা আমরা কেউ ব্যক্তিগতভাবে করতে রাজি নই’।
পরমব্রতরা জানিয়েছেন তাঁরা তিনজন ব্যক্তিগতভাবে হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হওয়া পরিচালক বিদুলার মতোই আইনি সমাধানের পথে চলবেন। তাঁদের এই সিদ্ধান্তের কোনও দায়িত্ব সংগঠন অথবা তার সদস্যদের নেই। তবে কেউ নৈতিক কারণে ব্যক্তি হিসেবে তাঁদের এই লড়াইয়ে যোগ দিতে চাইলে তাঁকে স্বাগত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন পরমব্রত, অনির্বাণ, ইন্দ্রনীল।