বাংলা হান্ট ডেস্ক : রোজই একটা নির্দিষ্ট সময়ে বিদ্যুৎ চলে যেত (Power Cut) বিহারের (Bihar) বেতিয়া জেলার একটি গ্রামে। গত বেশ কয়েকমাস ধরেই লাগাতার চলছিল এই ঘটনা। বিগত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হলেও গরম কমেনি। তার উপর আদ্রতা বেশি থাকাম তীব্র অস্বস্তিতে পড়েছেন গ্রামবাসীরা। বারংবার বিদ্যুৎ দফতরে অবিযোগ জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। বিদ্যুৎ লাইনে কোন ত্রুটিও খুঁজে পাননি কেউ।
আসলে তিনি রোজ রাতে গোপনে তার প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে যেতেন। যাতে গ্রামের কেউ তাদের এই অভিসার ধরে না ফেলে, তার জন্য তারাই রোজ রাতে গোটা গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিতেন তারা! চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বেতিয়া জেলার নওতান গ্রামে। যাতে প্রেমে কোন ব্যাঘাত না ঘটে সেই কারণেই তারা বেছে নিয়েছিলেন এই পন্থা।
জানা যাচ্ছে, পাশের গ্রামের রাজকুমার নামের এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল প্রীতি নামের এক মেয়ের। দুজনেই নওতান গ্রামের এক বিত্তবান ব্যক্তির বাড়িতে কাজ করতেন। এক সঙ্গে কাজ করার সুবাদেই ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তাদের মধ্যে। ঐ বাড়ির বাগানেই রোজ দেখা করতে যেতেন তারা। কারণ তারা জানতেন, এই সম্পর্কের কথা জানাজানি হলে সেটা কেউই মেনে নেবেনা। দেখা করার উপায় হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন রাতের অন্ধকার। রোজ রাতে গোটা গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিত তারা।
বিহারের এমনিতেও লোড শেডিং হয়েই থাকে। তাই প্রথম প্রথম বিষয়টিকে স্বাভাবিকই ভেবেছিলেন সকলে। তবে বিষয়টি রোজকার হয়ে দাঁড়ালে সন্দেহ দেখা দেয় গ্রামবাসীদের মনে। কিছু মানুষ লক্ষ্য করেছিলেন, প্রীতি রোজ রাতে একইসময়ে বাড়ির বাইরে চলে যায়। ঠিক তারপরেই কারেন্ট অফ হয়ে যায়। প্রীতির উপর গোপনে নজরদারীও শুরু করেছিলেন কিছুজন। ফলস্বরূপ মালিকের বাড়ির বাগানে দেখা করতে গিয়ে হাতে নাতে ধরা পড়েন প্রীতি ও রাজকুমার। ঘটনাটি পরিস্কার হতেই হতবাক হয়ে যান গ্রামবাসীরা।
রাগের চোটে রাজকুমারকে মারধরও করেন কিছু মানুষ। প্রীতির মধ্যস্ততায় সে যাত্রায় রক্ষা পায় সে। এরপর রাজকুমারও নাকি দলবল নিয়ে গ্রামবাসীর উপর চড়াও হয়। এমতাবস্থায় গ্রামের মোড়লরা বসে সিদ্ধান্ত নেন যে, রাজকুমার এবং প্রীতির বিয়ে দিয়ে দিতে হবে। নাহলে, রোজ রাতে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার সমস্যা মিটবে না।
জানা যাচ্ছে, নওতান গ্রামের এক মন্দিরে তাদের দুজনের বিবাহ হয়েছে। এই বিয়েতে শামিল হয়েছিল দুই গ্রামের মানুষই। সূত্রের খবর, তারপর থেকেই আর কারেন্ট যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। যদিও বিহারে এইরকম ঘটনা প্রথম নয়। এর ২০২২-এ পূর্ণিয়া জেলার এক গ্রামে প্রায়ই কয়েক ঘন্টার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেত। পরে জানা যায়, এক ইলেকট্রিশিয়ান তার বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিতেন।