স্কুলকে বারে পরিণত করলেন শিক্ষিকা, মাতালদের ক্লাসে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেন হেডমিস্ট্রেস

বাংলাহান্ট ডেস্ক: কথায় আছে, যেখানে যেটা নিষিদ্ধ সেখানেই সেটা সব থেকে বেশি হয়। নিষিদ্ধ জিনিসেই যেন মানুষের আসক্তি বেশি। যেমন বিহারে সম্পূর্ণভাবে মদ নিষিদ্ধ। তবে সেখানেই মাঝে মধ্যে উঠে আসে মদ সম্পর্কিত এমন কিছু ঘটনা যা রীতিমতো আপনাকে চমকে দিতে পারে। বিহারে সরকারি ভাবে মদের উপর নিষেধাজ্ঞাকে (Bihar Alcohol Ban) একটি সাফল্য হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। 

তবে সেখানে যদি সরকারি কর্মচারীরাই সরকারি ভবনগুলিতে মদ্যপান ও মদ বিক্রির অভিযোগে জড়িত থাকে, তাহলে কীভাবে মদের উপর নিষেধাজ্ঞাকে সফল বলা চলে? এমনই একটি ঘটনা উঠে এল বিহারের দারভাঙা জেলার মারকান্ডা গ্রাম থেকে। গ্রামের একটি সরকারি স্কুলকে পানশালায় পরিবর্তিত করার অভিযোগ উঠল স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সাজদা খাতুন এবং তাঁর স্বামী মহম্মদ মোখতারের বিরুদ্ধে।

এই স্কুলের একটি তলে পড়ুয়াদের পড়াশোনার ব্যবস্থা ছিল। অন্য একটি তলে ছিল মদ্যপদের রাত কাটানোর ব্যবস্থা। ঘটনার তদন্ত হতে উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। একদিন হঠাতই ওই স্কুল পরিদর্শনে যান সিনিয়র ডেপুটি কালেক্টর পুষ্পিত ঝা। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, মাত্র দু’টি ঘরেই ক্লাস করানো হচ্ছে। তখন প্রধান শিক্ষিকাকে তিনি জিজ্ঞেস করেন, একটি দোতলা স্কুল বাড়িতে কেন কেবল দু’টি ঘরেই ক্লাস করানো হচ্ছে। তিনি উপরের ঘর পরিদর্শন করতে যান।

Alcohol

সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, উপরের ঘরগুলি বাইরে থেকে তালা দেওয়া। প্রধান শিক্ষিকাকে তালা খুলতে বললে তিনি ইতস্তত বোধ করতে থাকেন। তখন জোরপূর্বক ওই ঘরের তালা খুলে সিনিয়র ডেপুটি কালেক্টর যা দেখেন, তাতে চমকে ওঠেন। তিনি দেখেন, ওই ঘরে দুই ব্যক্তি বসে মদ্যপান করছে। এছাড়াও ওই ঘরে রয়েছে মদ, সিগারেট, দেশলাই ও খাবার। ওই ঘরটিকে একটি আস্ত পানশালায় পরিণত করে ফেলা হয়েছে। পাশাপাশি, সেখানে ঘুমানোর জন্য বিছানারও ব্যবস্থা রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই মদ্যপানরত ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।

স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সাজদা খাতুনকে জেরা করতে তিনি জানান, স্কুল বাড়িতে পানশালার ব্যবসা খুলে বসেছিলেন তিনি ও তাঁর স্বামী মহম্মদ মোখতার। নীচের ঘরে ক্লাস নেওয়া হত এবং উপরের ঘরটি বরাদ্দ থাকত মদ্যপদের জন্য। যখনই সেখানে কেউ যেত, তাদের ভিতরে রেখে বাইরে থেকে তালা বন্ধ করে দিতেন প্রধান শিক্ষিকা। ওই ঘরের চাবিও তিনি নিজের কাছেই রাখতেন। 

স্কুল পরিদর্শনের পর সিনিয়র ডেপুটি কালেক্টর পুষ্পিত ঝা বিডিও এবং বিইও-কে ওই শিক্ষিকার ব্যাপারে জানিয়েছেন এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। এই মুহূর্তে জেলার শিক্ষা আধিকারিক সমর বাহাদুর সিংহ বিইও-কে ঘটনার তদন্ত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁকে বরখাস্ত করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সমর বাহাদুর সিংহ।

Subhraroop

সম্পর্কিত খবর