বাংলাহান্ট ডেস্ক : সিবিআই-কে (CBI) তদন্তে (Investigation) কোনও ধরনের সহযোগিতা (Help) করবে না বিহার (Bihar) সরকার (Government)। শাসক জোটের সিদ্ধান্ত সিবিআইকে দেওয়া সাধারণ অনুমতি বা জেনারেল কনসেন্ট প্রত্যাহার করে নিচ্ছে বিহার। এই জেনারেল কনসেন্ট সিবিআই দিল্লি পুলিশ (Delhi police) এস্টাব্লিশমেন্ট আইনের ৬ নম্বর ধারা অনুসারে প্রতিষ্ঠিত।
ওই ধারায় বলা আছে, কোনও রাজ্যে তদন্তের জন্য সিবিআইকে সেই রাজ্যের সরকারের অনুমতি নিতে হবে। এটাই হল জেনারেল কনসেন্ট। গত বুধবার সিবিআই, ইডি সম্মিলিত ভাবে বিহারের শাসক জোটের প্রধান শরিক রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (RJD) একাধিক নেতার বাড়িতে হানা দেয়।
ওই একই দিনে নয়ডার একটি মলেও হানা দেয় সিবিআই। অভিযোগ, সেটি বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের। যদিও তিনি এই দাবি অস্বীকার করেন। সিবিআইয়ের অন্তত ছয়টি মামলায় তেজস্বী সহ লালু প্রসাদ যাদবের পরিবারের সদস্যের নাম আছে। এরমধ্যে লালু প্রসাদের নামই আছে তিনটিতে।
গত বুধবার ছিল বিহার বিধানসভায় নিতিশ সরকারের আস্থা ভোট। সে দিনই সকালে সিবিআই হানা দেয় আরজেডি নেতাদের বাড়িতে। এরপরই জেনারেল কনসেন্ট প্রত্যাহারের বিষয়ে ভাবছে বিহার। সরকারের প্রধান দুই শরিক আরজেডি ও জেডিইউ এই ব্যাপারে একমত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গ সহ মোট সাতটি রাজ্য অনেক আগেই এই অনুমতি প্রত্যাহার করে নেয়। বাকি রাজ্যগুলি হল, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, ঝাড়খণ্ড, তেলেঙ্গানা, মিজোরাম, ছত্তিশগড়। মহারাষ্ট্রের আগের সরকারও অনুমতি প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। একনাথ শিন্ডে ক্ষমতায় আসার পর ফেরানো হয়েছে সেই অনুমতি।
অবশ্য, এই অনুমতি না থাকলে সিবিআই যে তদন্ত করতে পারবে না, এমন নয়। কেন্দ্রীয় সরকার এবং আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করতেই পারে। যেমন পশ্চিমবঙ্গ সরকার বছর চারেক আগে অনুমতি বাতিল করেছে। তবু, স্কুল শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত কেন্দ্রীয় ওই তদন্তকারি সংস্থাই করছে। গরু ও কয়লা পাচারের তদন্তও আদালতের নির্দেশে হচ্ছে। তবে জেনারেল কনসেন্ট প্রত্যাহার করে নিলে সিবিআইকে তদন্তে পরিকাঠামো, লোকবল ইত্যাদি দিয়ে সহায়তা করার দায় রাজ্য সরকারের উপর আর থাকে না।
বিহারে আরজেডি’র শীর্ষ নেতা শিবানন্দ তিওয়ারি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার ইডি, সিবিআই, আয়করকে বিরোধীদের জব্দ করার জন্য ব্যবহার করছে। এমন সংস্থাকে আমাদের সরকার আর সহযোগিতা করবে না। একই বক্তব্য দলের রাজ্যসভার নেতা মনোজ ঝা’রও। আরজেডি নেতাদের দাবি, সিবিআইকে দেওয়া জেনারেল কনসেন্ট প্রত্যাহার করার প্রস্তাবকে মুখ্যমন্ত্রী নিতিশ কুমারও সমর্থন করেছেন। এখন শুধু সরকারিভাবে ঘোষণা করার অপেক্ষা।
এই বিষয়ে বিহার বিধান পরিষদের বিরোধী দলনেতা সম্রাট চৌধুরী বলে, ‘এসব করে সিবিআইকে আটকানো যাবে না। উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবও খুব তাড়াতাড়ি জেলে যাবেন। তাঁর উপর সিবিআইয়ের খাঁড়া ঝুলছে।’ লালু প্রসাদের ঘনিষ্ঠ সহকারি ভোলা যাদবও সিবিআই তদন্তের পর বর্তমানে জেলে রয়েছেন। এখন দেখার এঔ অনুমতি প্রত্যাহার করে সিবিআইকে আটকাতে কতটা সক্ষম হয় জেডিইউ-আরজেডি জোট সরকার।