বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বছর শেষের আগেই এল বিরাট সুখবর। বিশ্বের দরবারে উজ্জ্বল হতে চলেছে বাংলার মুখ। এবার ইউনেস্কোর (UNESCO) বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্র অর্থাৎ ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ (World Heritage) সাইট হিসাবে স্বীকৃতি পেতে চলেছে বাংলার ঐতিহ্য মন্ডিত বিষ্ণুপুর মন্দির (Bihnupur Temple)। অবশেষে বহুদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে বিষ্ণুপুর (Bihnupur) মন্দিরের মুকুটে জুড়তে চলেছে এই পালক।
বিষ্ণুপুরের মন্দির নিয়ে বড় ঘোষণা সৌমিত্র খাঁ’র (Saumitra Khan)
আজই এই সুখবর জানিয়েছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ (Saumitra Khan)। তিনি জানিয়েছেন, ‘ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তালিকায় এবার জায়গা পাচ্ছে বিষ্ণুপুর মন্দির। নিঃসন্দেহে আমার জন্য এবং গোটা বিষ্ণুপুরবাসীর জন্য এটা এক দারুন গর্বের মুহূর্ত।’
এখানে বলে রাখা ভালো, প্রায় ২৬ বছর আগে ১৯৯৮ সালের ৩রা জুলাই প্রথম এই ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর মন্দিরের নাম পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু যোগ্য দাবিদার হওয়া সত্ত্বেও এতদিন এই বিশ্ব ঐতিহ্যের তকমা অধরা ছিল বাংলার মন্দিরনগরীর। তবে এর জন্য যথাযথ উদ্যোগের অভাবকেই দায়ী করা হয়েছে বারবার।
বিষ্ণুপুর মানেই মন্দিরের শহর। বাঁকুড়ায় জেলার এই ঐতিহাসিক শহর মূলত এখানকার টেরাকোটা মন্দিরের জন্য বিখ্যাত। ইতিহাসের পাতা ওল্টালে জানা যায় প্রাচীনকালে এই শহরটিই মল্ল রাজ্যের রাজধানী ছিল। ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে বৈষ্ণব ধর্মে দিক্ষিত মল্লরাজ বীর হাম্বির মাকড়া পাথরের টেরোকোটার রাসমঞ্চ তৈরি করেছিলেন। পরবর্তীতে ১৬৪৩ সালে শ্যামরাই মন্দির গড়েন রঘুনাথ সিংহ। আর ১৬৫৫ সালে তাঁর হাত ধরেই তৈরী হয় জোড়বাংলা।
আরও পড়ুন: ‘কেন্দ্র ছুটি বাতিল করলেও আমরা…’ বড়দিন উপলক্ষ্যে এবার বিরাট উপহার দিলেন মমতা
বহু বছরের পুরনো এই এই মন্দিরগুলির দেওয়ালে ভারতীয় মহাকাব্যের নানা কাহিনী খুঁজে পেয়েছেন ইতিহাসবিদরা। প্রসঙ্গত গত বছরেই ইউনেস্কোর এই ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটে নাম উঠেছিল শান্তিনিকেতনের। যদিও ইউনেস্কোর ঐতিহ্যস্থল হিসেবে এই তালিকায় শান্তিনিকেতনের নাম পাঠানো হয়েছিল ২০১০ সালে। আর এবছরেই দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এই বিশ্ব মানের স্বীকৃতি পেতে চলেছে বিষ্ণুপুর মন্দির।
তবে বলতেই হয়, মন্দিরের এই খেতাব পাওয়ার পিছনে কিন্তু বিশেষ অবদান রয়েছে বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের (Saumitra Khan)। গতবারও বিষ্ণুপুর এই স্বীকৃতি না পাওয়ায় যখন বিষ্ণুপুরবাসী হতাশ হয়েছিলেন তখন তিনি আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, ‘যতটা জানি, বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্রে এই স্বীকৃতি পেতে গেলে আগে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যকে নাম সুপারিশ করতে হয়। তবে বিষ্ণুপুরের মন্দির যাতে বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্রের স্বীকৃতি পায়, তার জন্য আমি দিল্লিতে কথাবার্তা বলব।’ আর আজ সেই গর্বের মুহূর্ত। অবশেষে বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্রের স্বীকৃতি পাচ্ছে বিষ্ণুপুর মন্দির।