বাংলাহান্ট ডেস্ক: বর্তমান যুগে মোবাইল ছাড়া এক পাও চলা সম্ভব নয়। বিভিন্ন কাজে এই চলভাষ যন্ত্রটা আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে গিয়েছে। বড়রা তো বটেই ছোটদেরও এখন হাতে হাতে মোবাইল ঘুরছে। কিন্তু মানুষের সুবিধার জন্য বানানো হলেও মানুষের ক্ষতি করতেও জুড়ি নেই এই যন্ত্রের। স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের জন্য খারাপ প্রভাব পড়ে কিশোর-কিশোরীদের মস্তিষ্কে। অষ্টম শ্রেণীর কয়েকজন পড়ুয়াদের ওপর একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। সেখানে দেখা যায় মোবাইল বেশি ব্যবহারকারী কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বিষন্নতায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ২৭ শতাংশ বেশি। দিনে তিন ঘন্টার বেশি যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করে তাদের বিপদের ঝুঁকি অনেকটাই বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুত গতিতে বাড়ছে আত্মহত্যার সংখ্যা। স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারই এর জন্য দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহার কীভাবে বিপদ ডেকে আনছে বর্তমান প্রজন্মের ওপর সেটা খুব ভালভাবে ব্যাখ্যা করা রয়েছে মার্কিন শিক্ষাবিদ জোক্লেমেন্ট ও ম্যাট মাইলসের লেখা ‘স্ক্রিন স্কুল’ নামে বইটিতে। এই বইতে এও লেখা রয়েছে স্টিভ জোবস ও বিল গেটস নিজেদের সন্তানদের এই টেক দুনিয়া থেকে এখনও যতটা সম্ভব দূরেই রেখেছেন। মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস নিজে বিশ্বকে পরিচয় করিয়েছেন প্রযুক্তির দুনিয়ার সঙ্গে। কিন্তু নিজের সন্তানদের দূরে সরিয়ে রেখেছেন এই জগৎ থেকে। এই বিষয়টা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন দুই লেখক যে নিজেদের আবিষ্কৃত প্রযুক্তির সম্বন্ধে এঁরা কী জানেন যে গোটা বিশ্ব এতে বুঁদ হয়ে থাকলেও নিজেরা বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছেন।
আসলে জানা গিয়েছে, ২০০৭ সালে বিল গেটসের মেয়ে ভিডিয়ো গেমসের প্রতি অতিরিক্ত আসক্ত হয়ে পড়েছিল। এই ঘটনা থেকেই সচেতন হন মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা। তখন থেকেই সন্তানদের মোবাইল ব্যবহারের বয়স তিনি ১৪ বছরের থেকেও বাড়িয়ে দেন। এমনকি এর আগে একটি সাক্ষাৎকারে প্রয়াত অ্যাপলের সিইও স্টিভ জোবস জানিয়েছিলেন, বা্চ্চারা যাতে আইপ্যাড ব্যবহার করতে না পারে সেই বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন তিনি।
প্রকৃত বিষয় হল ওনারা প্রযুক্তির নেশা ধরানো দিকটার ব্যপারে ভালমতোই অবগত। সেই কারণেই নিজেদের সন্তানদের দূরে সরিয়ে রেখেছেন। তাঁরা স্কুলে যতটা প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার থেকে অনেক কম ব্যবহার করার সুযোগ পায় নিজেদের বাড়িতে। এমনকি তাদের স্কুলগুলিতেও এখনও স্মার্ট ক্লাসের পরিবর্তে চক বোর্ডের ব্যবহারই অনেক বেশি হয়।