বাংলাহান্ট ডেস্ক: একটা গাছ বেড়ে ওঠার জন্য কী কী দরকার? জল, হাওয়া, আলো। তবে শুধু এগুলোই যথেষ্ট নয়। দরকার একটু যত্নও। কোনও কিছুর সঙ্গে ভালবাসা, যত্ন মিশলে তার পরিবর্তন খুব স্পষ্ট ভাবেই চোখে পড়ে। একজন মানুষও এমনটাই। সে ভালবাসার কাঙাল। চারাগাছকে যেমন যত্ন দিয়ে বড় করতে হয় তেমনই যেকোনও মানুষেরও ছোট থেকে বড় হওয়ার সময়টায় দরকার আপনজনের ভালবাসা, স্নেহ। কথায় বলে, বাচ্চারা যা শেখে সব বাবা-মায়ের থেকেই। ক্ষুদ্রতম বিষয়ও অপরিনত মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু এই জরুরি বিষয়টা অনেকেই ভুলে যান। সেটাই উঠে এসেছে পরিচালক বিপুল সাহার ‘একা তিন্নি’ ছবিতে। ২১ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের এই স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি সেই সমস্ত সন্তানদের কথা বলে যাদের শৈশব নষ্ট হয়ে গিয়েছে শুধুমাত্র বাবা-মায়ের একটা ভুলে।
এই গল্প তিন্নির, সবার মাঝে থেকেও একা তিন্নির। কিশোরী মেয়েটার জীবনে বন্ধুত্ব রয়েছে, আছে প্রেমও। নেই শুধু বাবা-মায়ের আদর। বাড়ির পরিচারিকায় তাকে মাতৃস্নেহে বড় করে তুলেছেন। কিন্তু তিন্নি তাঁর সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করে। ছবির প্রথম থেকেই অন্যমনস্ক দেখায় মেয়েটাকে। তার আচরনে ভুল বুঝে একে একে তার থেকছ দূরে সরে যায় বন্ধুত্ব, প্রেম। ছবিতে তিন্নির একাকিত্বটা খুবই স্পষ্ট করে তুলেছেন পরিচালক। তিন্নির নিজের কথাতেও বোঝা যায় আসলেই কতটা একা সে।
কিন্তু তিন্নি তো এমন ছিল না। আস্তে আস্তে এই একাকিত্ব চোরাবালির মতো গ্রাস করছে তাকে। কিন্তু এর পেছনের কারন কি তা জানে না তিন্নির বন্ধুরা। তখনই এগিয়ে আসেন তিন্নির বাড়ির পরিচারিকা। জন্ম না দিলেও ‘পালিকা মা’এর মতোই ছোট্ট তিন্নিকে বড় করে তুলেছেন উষা। তার কথাতেই তিন্নির বন্ধুরা জানতে পারে সেই নিষ্ঠুর সত্যি, তিন্নির মায়ের মৃত্যু রহস্য যা গভীর প্রভাব ফেলেছিল ওই ছোট্ট মেয়েটার মনে। সেই ক্ষত এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে তিন্নি। তারা কি পারবে বাঁচাতে তিন্নিকে? উদ্ধার করতে পাবে ছোটবেলার সেই ভয়াবহ স্মৃতির কবল থেকে। তা জানতে হলে দেখতে হবে ‘একা তিন্নি’। অভি মোশন পিকচারসের সহযোগিতায় ছবিটি নিবেদন করেছে হানি এনটারটেনমেন্ট মুভিজ।
আসি অভিনয়ের কথায় । ছবির মূল চরিত্র অর্থাৎ তিন্নির ভূমিকায় শতাক্ষী সাহার অভিনয় প্রশংসনীয়। দৃশ্য অনুযায়ী সাবলীল ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন অভিব্যক্তি। ছোট তিন্নির ভূমিকায় অভিজ্ঞার অভিনয় আলাদা করে উল্লেখের দাবি রাখে। ঐই ছোট বয়সেই তার অভিনয় সম্পর্কে বোধ সত্যিই অসামান্য। ছবির পরিচালক বিপুল সাহা খোদ অভিনয় করেছেন তিন্নির বাবার ভূমিকায়। যথেষ্ট সাবলীল অভিনয় করেছেন তিনি। অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন সোমা, দীপজ্যোতি, সায়ন্তিকা, তারক, রোজ, অর্পিতা, এমিলি, স্বাগতা ও অভিষেক। ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন বিপুল সাহা। সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন সুব্রত বসু। চিত্রগ্রহণ ও সম্পাদনার দায়িত্বে যথাক্রমে সজল বিশ্বাস ও অভিজিৎ পোদ্দার। শর্ট ফিল্মটি প্রযোজনা করেছেন প্রিয়তোষ দে।