দু’দিন পরেও ফিরে পেলেন না কোলের সন্তান! খালি হাতেই ফিরলেন নিগৃহীতা মা!

   

বাংলা হান্ট ডেস্ক: শিশু চোর সন্দেহে বিরাটি স্টেশনে (Birati Station) এক মহিলাকে নিগ্রহের ঘটনা ইতিমধ্যেই শোরগোল ফেলে দিয়েছে চারদিকে। এই ঘটনার দু’দিন পরেও নিজের কোলের শিশুকে ছাড়াই ফিরতে হল শিশুচুরি-গুজবে নিগৃহীতা মাকে। বুধবার সাতসকালে বিরাটি  স্টেশনে নামিয়ে ওই মহিলাকে রেল পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল।

যদিও রাতে ওই মহিলাকে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হলেও ‘তদন্তের স্বার্থে’ শিশুটিকে চাইল্ড লাইনে পাঠিয়ে দিয়েছিল রেলপুলিশ (জিআরপি)। তার পর বৃহস্পতিবার কেটে গিয়েছে নানান টানাপড়েন। জানা যায়, শুক্রবার শিশুটিকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে চাইল্ড লাইনে গিয়েছিলেন মা-বাবা। কিন্তু এদিনও আবার খালি হাতেই ফিরতে হয় তাদের।

এ প্রসঙ্গে শিয়ালদহ রেল পুলিশের সুপার জে মার্সি বলেন, ‘আমরা আমাদের কাজ করেছি। শিশুটিকে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দিয়েছি। এর পর বাবা-মা চাইল্ড লাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাচ্চাটিকে ফিরিয়ে নেবেন। এখানে আমাদের আর কোনও ভূমিকা নেই।’

জানা যাচ্ছে নিগৃহীতা ওই মহিলাই শিশুটির মা। তার নাম বাসন্তী পাণ্ডে। মহিলার স্বামীর নাম রামেশ্বর পাণ্ডে। তিনি পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তাঁর স্ত্রীর নাম বাসন্তী পাণ্ডে। বাসন্তীর আদি বাড়ি ওড়িশায়, রামেশ্বরের বিহারে। তাঁরা বামনগাছিতে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। ওই শিশুটি তাঁদেরই সন্তান।

আরও পড়ুন: বিপাকে সৌরভ পত্নী ডোনা! সাইবার ক্রাইমের ফাঁদে পা, সিরিয়াস পোস্টে বেফাঁস ‘দাদা’

জানা যাচ্ছে, ওই দিন সকালে আট মাসের শিশুটিকে নিয়ে কলকাতার হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। এপ্রসঙ্গে বাসন্তী বলেন, ‘সঙ্গে থাকা ব্যাগটি কোলে রেখে তার উপরে ছেলেকে শুইয়ে কাপড়ে ঢেকে খাওয়াচ্ছিলাম। ট্রেন বিরাটি পৌঁছনোর আগে ও কেঁদে উঠতেই যাত্রীদের সন্দেহ হয়। তাঁদের অনেক বার করে বলি যে, শিশুটি আমার। কিন্তু কেউ শোনেননি। হঠাৎ আমাকে মারধর করা শুরু হয়। রাতে আমাকে ছাড়লেও বাচ্চাকে দেয়নি রেল প্রশাসন।’

Birati Station

বাসন্তীর স্বামী জানিয়েছেন, কোলের শিশুকে ছাড়া খাওয়াদাওয়াই বন্ধ হয়ে গিয়েছে বাসন্তীর। শুধু গুজবের  বশে একজন মাকে শিশুচোর বলে ধরে নিয়ে মারধরের বিষয়টি মেনে নেওয়া যায় না।তাই যারা এই গুজব রটিয়েছে তাঁদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর