বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের মন্ত্রী তথা এক আদিবাসী মহিলাকে পায়ের জুতোর নিচে থাকার কথা বলেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) আর এবার সেই বিষয়টিকে সামনে এনে এসটি-এসসি ধারা উল্লেখ করে অভিযোগ দায়ের করে বসলেন ‘ওই’ মহিলা অর্থাৎ তৃণমূল (Trinamool Congress) নেত্রী বীরবাহা হাঁসদা (Birbaha Hansda)। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বাংলায়।
উল্লেখ্য, বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই একের পর এক বিতর্কিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরগরম রয়েছে বঙ্গ রাজনীতি। দুর্নীতি ইস্যুর পাশাপাশি সম্প্রতি নন্দীগ্রামের গোকুলনগরে তৃণমূলের শহিদ স্মরণ মঞ্চে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনার জেরে শোরগোল পড়ে যায় সর্বত্র।
পরবর্তীতে এ ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করতে গিয়ে দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে অপমান করে বসেন রাজ্যের কারা মন্ত্রী অখিল গিরি। তিনি বলেন, “দেখতে ভালো নয় বলছে। কি দেখতে ভাল? আমরা রূপের বিচার কখনো করি না। রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে সম্মান করা হয়। কিন্তু তোমার রাষ্ট্রপতি কেমন দেখতে বাবা?”
রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির মন্তব্যকে হাতিয়ার করে পরবর্তী সময়ে প্রতিবাদে নামে বিজেপি নেতা-মন্ত্রী এবং কর্মী সমর্থকরা। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক থানায় অভিযোগ দায়ের করার পাশাপাশি মন্ত্রিত্ব পদ থেকেও অখিলের ইস্তফা দাবি করে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল। পরবর্তীতে এই ঘটনায় ক্ষমা চান স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বিতর্কের শেষ এখানেই নয়! পরবর্তীতে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। উক্ত ভিডিওয় শুভেন্দু অধিকারী কর্তৃক আদিবাসী মহিলাদের অপমান করার দৃশ্য উঠে আসে সকলের সামনে।
কি সেই ঘটনা? গতবছর বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বে ঝাড়গ্রামে রওনা দেওয়ার সময় শুভেন্দু অধিকারীর পথ আটকে দেয় বীরবাহা হাঁসদা এবং তাঁর সহযোগীরা। ঝাড়গ্রামে ঢুকতে না পারে ক্ষুব্ধ হন শুভেন্দু এবং পরবর্তীতে তিনি বলেন, “যারা বসে আছে, তারা শিশু। এই বীরবাহা, দেবনাথ হাসদা এরা শিশু। আমার জুতার নিচে থাকে।”
বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারীর এহেন বক্তব্যকে প্রকাশ্যে এনে তৃণমূলের প্রশ্ন, “রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে অখিলের মন্তব্যের জন্য প্রতিবাদে সামিল হন বিজেপি কর্মী সমর্থক এবং নেতারা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ক্ষমা চাইতে হয়েছে। তাহলে শুভেন্দুর বিতর্কিত বক্তব্যের জন্য মোদী কিংবা জেপি নাড্ডারা কেন ক্ষমা চাইবেন না?”
এক্ষেত্রে একজন আদিবাসী মহিলার বিরুদ্ধে শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যকে প্রকাশ্যে এনে ইতিমধ্যেই সিঙ্গুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে তৃণমূল কংগ্রেস আর এবার অবশেষে তফসিলি জাতি-উপজাতি আইনের ধারায় বিরোধী দলনেতের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করলেন বীরবাহা হাঁসদা।