বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) ক্ষমতায় আসার পর যেসকল জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন তার মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় প্রকল্প হল ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ (Lakshmir Bhandar)। আগে এই প্রকল্পের আওতায় প্ৰতি মাসে পাঁচশো টাকা করে ভাতা পেতেন বাংলার মহিলারা। লোকসভা নির্বাচনের আগে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের অনুদানের পরিমাণ বাড়িয়ে ১০০০ টাকা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই লক্ষীর ভাণ্ডার নিয়ে এবার সামনে এল এক দরিদ্র পরিবারের ছেলের ডাক্তারির পরীক্ষায় (Joint Entrance Exam) সাফল্যের কাহিনী।
দিনে বাবার চায়ের দোকানে কাজ করে রাত জেগে পড়াশোনা। ছিল না কোনো প্রাইভেট টিউটর। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় মোবাইল নম্বরে ইন্টারনেটের রিচার্জ। আর সেই দিয়েই অনলাইনে করে ডাক্তারি পরীক্ষার প্রবেশিকায় বাজিমাত করলেন বীরভূমের মাহফুজ আলম ওরফে রাহুল। প্রথমবার পরীক্ষায় বসেই ৭২০ নম্বরের মধ্যে রাহুল পেয়েছে ৬৭৩। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তার র্যাঙ্ক ১২ হাজারের কাছাকাছি।
দুর্দান্ত ফলাফল করার পরদিনও রাহুলকে দেখা গেল কয়থা বাসস্ট্যান্ডে হাসপাতাল মোড়ে বাবার চায়ের দোকানে আপন মনে কাজ করতে। পরিবার তরফে জানায়, একাদশ শ্রেণিতে উঠে গরুর দুধ বিক্রি করে একটা মোবাইল কিনেছিলেন রাহুলের। সেই দিয়েই পড়াশোনা। করোনাকালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পেয়েছিলেন ৯২ শতাংশ নম্বর। তারপর উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা।
তিন বছর আগে আবাস যোজনার একটা পাকা ঘর পেয়েছে রাহুলের পরিবার। বাড়িতে দশ কেজি দুধ দেওয়া একটা গরু আর ব্যবসা বলতে চায়ের দোকান, সেই দিয়েই সংসার। দুধ বিক্রির টাকা দিয়ে পড়াশোনার বই কিনে দেন বাবা। আর মা জানান, “প্ৰতি মাসে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের যে টাকা পেতাম, সেটা দিয়েই ছেলের মোবাইলে নেট রিচার্জ করে দিতাম। সেই দিয়েই ও পড়াশোনা করত।”
আরও পড়ুন: ভোট মিটতেই শাহরুখকে বিরাট সুবিধা দিল BJP! কী এমন পেলেন ‘বাদশা’? জানলে অবাক হবেন
রাহুলের বাবা কোনোরকমে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। মা মাধ্যমিক পাশ। তাদের ছেলের অক্লান্ত পরিশ্রম সাফল্য এনে দিয়েছে ডাক্তারির প্রবেশিকায়। তবে এত ভালো ফলাফলের পরও চিন্তায় রাহুলের পরিবার। ডাক্তারি পড়ার খরচ কীভাবে আসবে? সেই চিন্তায় উড়েছে রাতের ঘুম। এরপর রাজ্য সরকারের স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পের মাধ্যমে লোন নেওয়ার ভাবনাচিন্তা রয়েছে রাহুলের।