বাংলাহান্ট ডেস্ক : আজ গোটা বাংলায় পালিত হচ্ছে বিশ্বকর্মা পুজো। কলকারখানা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাস ও অটো স্ট্যান্ড, বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে সব জায়গায় সাজোসাজো রব। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও আমরা লক্ষ্য করি বিভিন্ন রেল স্টেশনেও ধুমধাম করে পালিত হয়ে থাকে বিশ্বকর্মা পুজো।
কিন্তু আমাদের রাজ্যে এমন একটি ট্রেন রয়েছে যেখানে গত ১৭ বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে ভ্রাম্যমান বিশ্বকর্মা পুজো। রীতিমত ঢাক বাজিয়ে, পুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণের সাথে নিষ্ঠার সাথে ১৭ বছর ধরে বিশ্বকর্মা পুজো হয়ে আসছে ডাউন শান্তিপুর-শিয়ালদা লোকালে (Shantipur-Sealdah Down local)।
এই ভ্রাম্যমান বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন করেন ৭ঃ২৬ মিনিটের ডাউন শান্তিপুর শিয়ালদহ লোকালের প্রথম কম্পার্টমেন্টের দ্বিতীয় গেটের ডেইলি প্যাসেঞ্জারা। এই ট্রেনের নিত্যযাত্রীরা জানাচ্ছেন, ৭ঃ২৬ মিনিটের শান্তিপুর-শিয়ালদা লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে এক পারিবারিক সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেছে। তাই গত ১৭ বছর ধরে ট্রেনের কামরার মধ্যেই তারা পালন করে আসছেন বিশ্বকর্মা পুজো।
আরোও পড়ুন : তেলাপিয়া মাছ খাওয়ার আগে সাবধান! এই মহিলার সঙ্গে যা হল … শুনে আঁতকে উঠবেন
শীতকালে পিকনিক কিংবা কারোর বাড়িতে পারিবারিক অনুষ্ঠান, সবকিছুতেই একে অপরের ডাক পড়ে। সেই থেকেই এই ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে বিশ্বকর্মা পুজো করার উৎসাহ জাগে। যখন প্রথম এই বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন করা হয় তখন সদস্য সংখ্যা ছিল মাত্র ৩০ জন। বর্তমানে এই ভ্রাম্যমান পুজো কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৭৫ পার করে গিয়েছে।
আরোও পড়ুন : দার্জিলিং তো অনেকবারই গেলেন! এবার ঢুঁ মারুন এই পাহাড়ি গ্রামে, গেলেই পাবেন স্বর্গীয় তৃপ্তি
বিশ্বকর্মা পুজোর (Biswakarma Puja) দিন এই লোকাল ট্রেনের কামরা রীতিমতো উৎসব কেন্দ্রে পরিণত হয়। পুজো উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে কমিটির সকল সদস্যকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয় ব্যাগ। এছাড়াও সদস্যদের পরিবারের জন্য দেওয়া হয় প্রসাদ ও মিষ্টির প্যাকেট। প্রত্যেক বছরের মতো এ বছরও বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন করা হয় ডাউন শান্তিপুর লোকালে।
সকাল ৭ঃ২৬ মিনিটে শান্তিপুর থেকে এই ট্রেন শিয়ালদার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ৭:৫৭ মিনিটে ট্রেন যখন রানাঘাট স্টেশনে পৌঁছায় তখন ঠাকুরমশাই শুরু করেন পুজো। সকাল আটটা পঁয়তাল্লিশ মিনিটে ট্রেন যখন শ্যামনগরে এসে পৌঁছায় তখন সম্পন্ন হয় পুজো। সকাল নটা চল্লিশ মিনিটে ট্রেন শিয়ালদা পৌঁছালে যাত্রীরা পাড়ি দেন নিজেদের গন্তব্যে।
তবে মজার কথা হল এই বিশ্বকর্মার মূর্তিটি মধ্যরাতে বিসর্জন দেন শান্তিপুর স্টেশন মাস্টারের দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তি। আর ওই ব্যক্তির পারিশ্রমিক লুকানো থাকে মূর্তিরই একটি অংশে। তবে সেই কথাটি ওই ব্যক্তি ছাড়া কেউ জানেন না। বলা বাহুল্য, এমন মজার করে বিশ্বকর্মা পুজো করার খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই রীতিমতো চর্চা চলছে বাংলাজুড়ে।