বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একুশের নির্বাচনে আশানুরূপ ফল করতে পারেনি বিজেপি। আর তারপর থেকেই ক্রমাগত সামনে আসছে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব। কখনো কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নিয়ে, কখনো দলবদলু নেতাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দলের অন্দরেই। এরই মাঝে সংগঠনকে ফের একবার শক্ত করার কাজে হাত লাগিয়েছে বিজেপি। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের সাত বছর পূর্তির কথা স্মরণে রেখে ইয়াসে বিধ্বস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে শুরু করেছিল তারা। দলের মধ্যেও বিভিন্ন বৈঠকের মাধ্যমে ফের একবার উৎসাহ ফিরিয়ে আনার কাজে নেমে পড়েছিলেন দিলীপ ঘোষ সহ একাধিক বর্ষিয়ান নেতানেত্রীরা।
কিন্তু এরই মাঝে আবারও তাল কাটে। গত ৪ জুন হুগলির চুঁচুড়ায় সাংগঠনিক সভায় দিলীপ ঘোষকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। তারপরেই প্রশ্ন উঠেছে এই বিক্ষোভ কি আদৌ স্বতঃস্ফূর্ত ছিল নাকি এর পিছনে ছিল অন্য কোনো নেতার ইন্ধন। কারণ ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে একটি ভাইরাল অডিও ক্লিপ। বাংলা হান্ট এই অডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ঠিকই, তবে অভিযোগ উঠেছে এই গলাটি আসলে হুগলি জেলার বিজেপি নেতা সুবীর নাগের। অডিওতে শোনা যায়, দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ তৈরীর জন্য এক বিজেপি কর্মীকে নির্দেশ দিচ্ছেন তিনি। ইতিমধ্যেই যা শোরগোল ফেলেছে রাজ্য-বিজেপির অন্দরে।
আজ মঙ্গলবার ফের একবার সংগঠনকে মজবুত করতে বৈঠক ডেকেছে বিজেপি। কিন্তু তার আগেই আবারও আক্রমণ শানালেন সুবীর নাগ। নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, “আমি হুগলি জেলা নেতৃত্বের কাছে জানতে চাই যে, যাঁরা জেতা উচিত এমন ৭টা বিধানসভা হারের দায় নিজেদের কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলার জন্য একটা ছোট বিষয়কে বড় করে তুললেন, তাঁরা সামনে আনুন যে অপর প্রান্তের গলাটি কার?” শুধু তাই নয়, তাকে কালিমালিপ্ত করার জন্য এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে এমন অভিযোগ করে তিনি কাঠগড়ায় দাঁড় করান বিজেপি নেতা বিষ্ণু চৌধুরীকেও। সঙ্গে সঙ্গে জেলা নেতৃত্বের অপদার্থতার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে লকেট চট্টোপাধ্যায় চুঁচুড়ার প্রার্থী হবার পর থেকেই সুবীরবাবুর সঙ্গে তার বিরোধ সরাসরি সামনে আসে। লকেটকে সমর্থন করায় রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গেও স্পষ্ট হয় মতবিরোধ। অন্যদিকে এই ক্লিপ সামনে আসার পর সত্যতা যাচাই না হলেও লকেটের মন্তব্য ছিল, এমন এক পুরনো নেতার মুখ থেকে এধরনের কথা আশা করেননি তিনি।
সব মিলিয়ে বিজেপির অন্তর্কলহ এখন অনেকটাই সামনে এসে পড়েছে। মঙ্গলবারের এই সাংগঠনিক বৈঠকে সমীকরণ এখন কোনদিকে মোড় নেয় সেটাই দেখার।