অন্যের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালানো কলিতা মাঝি এখন বিজেপির প্রার্থী

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নামীদামী নয়, তারকাও নয়। তবে তারকাদের থেকে বেশি প্রশংসা কুড়োচ্ছে বিজেপির দুজন মহিলা প্রার্থী। একজন হলেন বাঁকুড়া জেলার শালতোড়ার বিজেপি প্রার্থী চন্দা বাউরি। আরেকজন হলেন পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের বিজেপি প্রার্থী কলিতা মাঝি। চন্দনা বাউরির স্বামী রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। মাথার উপর কোনওরকমে হয়েছে একটি টালির চালা। আর সেই বাড়িতে তিন সন্তান স্বামী আর ছয়টি গবাদি পশুকে নিয়ে দিন যাপন করেন তিনি।

bjp chandana

আর বিজেপির আউশগ্রামের প্রার্থী কলিতা মাঝির গল্পটাও ভিন্ন নয়। স্বামী পাইপলাইনের মিস্ত্রী। কলিতাদেবী নিজে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিচারিকার কাজ করেন। কোনোরকম ভাবে সুখে শান্তিতে কেটে যায় দিন। টাকা পয়সার অভাবে বেশিদূর পড়াশোনাও হয়নি। বিয়ে করেও ভাগ্য বদলায়নি কলিতাদেবীর। তবুও দারিদ্রতাকে নিত্যসঙ্গী করে স্বামীর সঙ্গে সুখেই আছেন তিনি।

6 1

একুশের মহারণে পূর্ব বর্ধমানের তফসিলি জাতি সংরক্ষিত আসন আউশগ্রাম বিধান সভা থেকে কালিতা মাঝিকে প্রার্থী করেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির প্রার্থী তালিকায় নাম আসার পরই খুশির হাওয়া ওঠে মাঝি পরিবারে। সঙ্গে সঙ্গে কলিতা মাঝিও মনিবদের থেকে মাস দেড়েকের ছুটিও নিয়ে নেন। আর নেবেনই বা না কেন? শুধু প্রার্থী হলেই কি হবে, প্রচারও তো করতে হবে। কলিতাদেবীকে প্রার্থী করার পর বিজেপির কর্মীরাও বেজায় খুশি হয়েছেন।

কলিতাদেবী আর ওনার স্বামী সুব্রত মাঝির একটি সন্তান আছে। কলিতাদেবীর পুত্র পার্থ মাঝি অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। তাঁকে ভালো লেখাপড়া শিখিয়ে অনেক বড় করার ইচ্ছে আছে মাঝি দম্পতির। গুসকরার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কলিতা মাঝি গুসকরা শহরের তিনিটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। সকালে ঘুম থেকেই উঠেই কাজে বেরিয়ে যান তিনি।

কলিতাদেবীর বাবা দিনমজুর ছিলেন আর অনেকদিন আগেই মারা গিয়েছেন। কলিতাদেবী জানান, অর্থের অভাবে বেশিদূর পড়াশোনা করতে পারিনি। কিন্তু আমার ইচ্ছে পয়সার অভাবে যেন আগামী দিনে কারোর পড়াশোনা না বন্ধ হয়। এই কারণে আমি ভোটে জিতলে অভাবি পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের পড়াশোনার সুযোগ করে দেব। আমি গরিবের যন্ত্রণা বুঝি, তাই আমি চাই না আমার সঙ্গে যা হয়েছে, সেটা আরও কারোর সঙ্গে হোক।


Koushik Dutta

সম্পর্কিত খবর