বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০১১ সালের পর থেকে বঙ্গ রাজনীতিতে ‘নন্দীগ্রাম’ (Nandigram) নামটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। এই নন্দীগ্রামের ওপর ভর করেই ৩৪ বছরের বাম জমানার অবসান ঘটিয়ে বাংলায় ক্ষমতায় আসে তৃণমূল সরকার। আবার গত বছর বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) পরাজিত করেন বিজেপি (BJP) নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। বর্তমানে ফের একবার চর্চায় উঠে গেল নন্দীগ্রাম কেন্দ্র। সৌজন্যে সমবায় সমিতির ভোট।
গতকাল নন্দীগ্রামের সমবায় সমিতির ভোটে শুভেন্দুর গড়েই বিজেপিকে ধুলিস্যাৎ করে দিলো শাসকদল। নন্দীগ্রাম সমবায়ের ৫২ টির মধ্যে মোট ৫১ টি আসনে জয়লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। অপর একটি গিয়েছে বামেদের দখলে। এক্ষেত্রে শুভেন্দুর এলাকায় বিজেপির ‘শূন্য’ হাতে ফেরার পিছনে কারণ কি, সেই বিষয়কে কেন্দ্র করে উঠে গিয়েছে একাধিক প্রশ্ন চিহ্ন।
গতকাল নন্দীগ্রামের দুই ব্লকের বিরুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের হানুভুঁইয়া কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের আগেই অবশ্য একটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় লাভ করেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী। পরবর্তীতে ৫১ টি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন শেষে ফল ঘোষণা হতেই উচ্ছ্বাসে মাততে দেখা যায় তৃণমূল শিবিরকে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাকি ৫১ টি আসনের মধ্যে ৫০ টিতে জয়লাভ করে তৃণমূল এবং একটি দখলে যায় বামেদের। প্রায় আড়াই হাজার ভোটার বিশিষ্ট সমবায় সমিতির নির্বাচন ঘিরে প্রথম থেকেই নিরাপত্তা ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে ফল প্রকাশ হতেই এদিন বিজেপি তাদের পরাজয়ের সকল দায় চাপিয়ে দিয়েছে তৃণমূলের ওপর।
এক্ষেত্রে নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে একাধিক প্রশ্ন চিহ্ন উঠে গিয়েছে। শুভেন্দু অধিকারীর নন্দীগ্রামে কেন পরাজয়ের শিকার হতে হলো বিজেপিকে? এমনকি, গত বিধানসভা নির্বাচনে যে এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ ভোটে জয়লাভ করে বিজেপি, সেখানেই এবারে মুখ থুবড়ে পড়েছে তারা! যদিও এ প্রসঙ্গে এখনো পর্যন্ত শীর্ষ নেতৃত্বের তরফ থেকে কোন রকম মন্তব্য করা হয়নি। তবে এদিন এক বিজেপি নেতা তৃণমূলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মুখ খুলে বলেন, “চাপা সন্ত্রাসের মুখেই মানুষ ভোট দিতে বাধ্য হয়।”
যদিও বিজেপির এ সকল অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। তমলুক সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি বলেন, “সমবায় নির্বাচনে আমরা দারুণ ফলাফল করেছি। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হচ্ছে যে, নন্দীগ্রামে বিজেপির পায়ের তলা থেকে মাটি ক্রমশ সরে যাচ্ছে। পরবর্তী সময়ে এখান থেকে বিজেপিকে উৎখাত করা হবে।” অপরদিকে নন্দীগ্রাম ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি বলেন, “গত বিধানসভা নির্বাচনে বিরুলিয়া এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ ভোটে জিতেছিল বিজেপি। তবে মানুষ বর্তমানে বুঝতে পেরেছে যে, বিজেপির উপর ভরসা করে তারা ভুল করেছিল। সেই কারণেই পুনরায় তৃণমূলের হাত ধরতে শুরু করেছে জনগণ। ভোটের ফলাফল তারই প্রমাণ।”