বিনামূল্যে রেশন থেকে মোদীর গ্যারান্টি! রাম মন্দিরও দিলনা ভরসা, এই ৫ কারণে “ফেল” বিজেপি

বাংলা হান্ট ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ (Lok Sabha Election)-এ বিজেপির (Bharatiya Janata Party) পারফরম্যান্স খুব একটা ভালো জায়গায় নেই। শুধু তাই নয়, মঙ্গলবার বিকেল ৫ টার ট্রেন্ড অনুযায়ী বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ২৪৪ টি আসনে। যেটি ২৭২ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সংখ্যা থেকে অনেকটাই। কিন্তু, সামগ্রিকভাবে NDA জোট ২৯৫ টি আসনের পরিপ্রেক্ষিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার সীমা অতিক্রম করেছে। অন্যদিকে, বিরোধী দল ইন্ডিয়া জোট এবারের নির্বাচনে ভালো পারফর্ম করেছে। তারা এগিয়ে রয়েছে ২৩১ টি আসনে এগিয়ে।

যার মধ্যে কংগ্রেস একাই এগিয়ে রয়েছে ১০০ টি আসনে। একই সঙ্গে সমাজবাদী পার্টি ৩৪ টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। এর পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেস ২৯ টি আসনে এবং ডিএমকে এগিয়ে রয়েছে ২২ টি আসনে। এমতাবস্থায়, স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে যে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি কেন এমন ধাক্কা কেন? পাশাপাশি, কেন তাদের আসন ২০১৪ এবং ২০১৯ থেকে কমে গেল? জনগণ কি তাহলে রাম মন্দির থেকে শুরু করে বিনামূল্যে রেশন এবং “মোদীর গ্যারান্টি”-র মতো বিজেপির প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করেনি? বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা বিজেপির পিছিয়ে থাকার ৫ টি বড় কারণ উপস্থাপিত করছি।

   

১. টিকিট বণ্টন: ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে টিকিট বণ্টনের কারণে বিজেপিকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। এবার দলটি ২০১৯ সালে বিজয়ী শতাধিক সাংসদের টিকিট বাতিল করেছে। পাশাপাশি, বেশিরভাগ জায়গায় নতুন মুখকে নিয়ে আসা হয়েছে। এদিকে, তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই এমন নেতাই ছিলেন যাঁরা অন্য দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে, যাঁরা বিজেপির রাজনীতিকে খুব কাছ থেকে বোঝেন তাঁরা বলছেন, নির্বাচনে দলকে এরই খেসারত দিতে হয়েছে।

২. মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্ব: “মোদির গ্যারান্টি”-র মতো দাবি এবং বিনামূল্যের রেশনের মতো পরিকল্পনা সত্বেও এই নির্বাচনে মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্ব বড় ইস্যু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। একাধিক রাজ্যে, বিরোধী দলগুলি মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্বের ইস্যুতে বিজেপিকে কোণঠাসা করছে। যেটি নির্বাচনেও বড় প্রভাব ফেলেছে।

BJP failed in the Lok Sabha elections due to these 5 reasons.

৩. সাংসদদের প্রতি অসন্তোষ: বিজেপির রাজনীতির ওপর নজর রাখা একজন বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, হিন্দি বেল্টের বেশিরভাগ রাজ্যে সাধারণ মানুষ দলের সাংসদের উপর ক্ষুব্ধ ছিল। কারণ বেশিরভাগ সাংসদ গত ৫ বছরে ওই অঞ্চলে যাননি। অর্থাৎ, তাঁরা কার্যত জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। এদিকে, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে তাঁরা মোদীকে সামনে রেখে ভোট পেলেও সাধারণ মানুষ এবার তাঁদের মত পরিবর্তন করেছেন।

আরও পড়ুন: নীতীশ কুমার পাল্টি মারলে হবে না বিজেপির গভর্মেন্ট? জেনে নিন সম্পূর্ণ সমীকরণ

৪. মুসলিম সংরক্ষণ: লোকসভা নির্বাচনের সময়ে বিজেপি খুব আক্রমণাত্মকভাবে মুসলিম সংরক্ষণের বিষয়টি উত্থাপন করেছিল। প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর সমস্ত সমাবেশে বিরোধীদের বিরুদ্ধে সংরক্ষণের রাজনীতির অভিযোগ তোলেন। কিন্তু মনে হচ্ছে এই ইস্যুটি বিজেপিকেই প্রভাবিত করেছে। মুসলিম অধ্যুষিত আসনে বিরোধীরা সম্পূর্ণ ভোট পেয়েছে।

আরও পড়ুন: ভোটগণনার মাঝেই বড় খবর! নীতিশ কুমার পেলেন ডেপুটি PM হওয়ার অফার, ইচ্ছে প্রকাশ ইন্ডিয়া জোটের

৫. CAA-NRC এবং UCC: বিজেপিকে CAA-NRC এবং UCC-র ইস্যুটিও ধাক্কা দিয়েছে। বিরোধীরা এগুলির মাধ্যমে ভোটারদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেছে। এই প্রচেষ্টা অনেকাংশেই সফল হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, পশ্চিমবঙ্গে যেখানে বিজেপি ২০১৯ সালে ৪২ টি আসনের মধ্যে ১৮ টি জিতেছিল, এবার আসনগুলি অর্ধেকে নেমে এসেছে। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসন ২২ থেকে বেড়ে ৩০ হয়েছে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর