বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যে শাসকদলের নেতাদের মধ্যে সর্বদা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন, এমন কোন ব্যক্তির নাম বলতে গেলে প্রথমেই আসে বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নাম। কখনো ‘খেলা হবে’, আবার কখনো ‘ভয়ঙ্কর খেলা হবে’ ইত্যাদি হুঙ্কার দেওয়ার মাধ্যমে সর্বদাই খবরের শিরোনামে থাকেন কেষ্ট তথা অনুব্রত মণ্ডল। বর্তমানে এসএসকেএম হসপিটালে অসুস্থতা নিয়ে ভর্তি থাকলেও প্ৰতিনিয়ত সকলের চর্চার বিষয়ে রয়েছেন তিনি। আর এবার বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার অনুব্রতর সম্পর্কে এমন এক মন্তব্য করে বসলেন, যাতে সরগরম হয়ে উঠলো রাজ্য রাজনীতি।
‘এসএসকেএম হাসপাতালে চক্রান্ত করে মারা হতে পারে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে’ –
উপরের কথাটি অবিশ্বাস্য মনে হলেও ঠিক এরকমই আশঙ্কা এদিন প্রকাশ করেন বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার। কিন্তু হঠাৎ করে হাসপাতালের মধ্যে অনুব্রত মণ্ডলের সাথে কেন এরম ঘটনা ঘটতে পারে, এ বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করায় বিজেপি নেতা বলেন, “বগটুই কাণ্ডের প্রধান মাথা অনুব্রত মণ্ডল এখন এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্নে ভর্তি রয়েছেন। কিন্তু আমার মনে হয় মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে আর হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরতে দেবেন না। কারণ একবার যদি অনুব্রত হাসপাতাল থেকে থেকে ছাড়া পান, তবে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সকল কুকীর্তি সিবিআই-এর কাছে বলে দিতে পারেন আর সেই আশঙ্কা থেকেই ওকে মেরে ফেলার চক্রান্ত করা হচ্ছে।”
এছাড়াও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতার হাজতবাসের ব্যাপারে এদিন ভবিষ্যৎবাণী করেন স্বপন বাবু। এছাড়াও তিনি বলেন, “অনুব্রত ভাবছে হয়ত হাসপাতালে ভর্তি থেকে তিনি সিবিআই এর হাত থেকে রক্ষা পাবেন। কিন্তু সিবিআই-এর হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে ভবিষ্যতে তাঁকে মমতা ব্যানার্জির বিষাক্ত ইঞ্জেকশনে প্রাণ ত্যাগ করতে হবে।”
বিজেপি বিধায়কের এই মন্তব্যে স্বভাবতই সরগরম হয়ে ওঠে রাজনৈতিক মহল। তাঁর এই বক্তব্যের কড়া ভাষায় সমালোচনা করে শাসকদল। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের বনগাঁ জেলার সভাপতি গোপাল শেঠ বলেন, “উনি বাংলার মানুষের কাছে বিধায়ক হিসেবে আর গ্রহণযোগ্য হবেন না। অনুব্রত মণ্ডল সম্পর্কে কথা বলার উনি কে? সিবিআই এর কাছে বিষয়টি এখন তদন্ত সাপেক্ষ। এখানে ওর কথা বলার কোন অধিকার নেই।” এছাড়াও তিনি বলেন, “স্বপন নিজেই মাদক মামলায় অভিযুক্ত ছিল। পরবর্তীকালে দল থেকে টাকা পয়সা দিয়ে কোনমতে ব্যাপারটি মেটানো হয়। ফলে উনি যেসব কথা বলছেন, তার কোন মানেই হয়না।”
প্রসঙ্গত, কিছুদিন পূর্বে কলকাতার সিবিআই দফতরে ডাক পড়ে অনুব্রত মণ্ডলের। এরপর বীরভূম থেকে রওনা দিয়ে কলকাতায় এসে সিবিআই দপ্তর এ যাওয়ার আগেই তিনি হঠাৎই রওনা দেন এসএসকেএম হসপিটালে। শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে হসপিটালে ভর্তি হলেও শারীরিক অসুস্থতা যে সিবিআই এর হাত থেকে বাঁচার একটি বাহানা, তা উল্লেখ করে তাঁকে খোঁচা দেওয়া শুরু করে একাধিক বিরোধী নেতা। এরমাঝেই বর্তমানে বিজেপি নেতার বক্তব্য যে বিতর্ক আরো বৃদ্ধি করবে, তা অনস্বীকার্য।