জিততে না পারলে নির্বংশ করে দেবে! রামনবমীর আগে এবার হিন্দুত্বের জিগির তুললেন মিঠুন

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বছর ঘুরলেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বাংলায় বিজেপির (BJP) সংগঠন অত্যন্ত নড়বড়ে। তবে এবার বাংলায় তৃণমূল সরকারকে কড়া টক্কর দিতে প্রস্তুত হচ্ছে গেরুয়া শিবির। বিশেষজ্ঞদের মতে আসন্ন ছাব্বিশের নির্বাচনে বিজেপির অস্ত্র হচ্ছে ‘হিন্দুত্ব’। হিন্দুদের অস্তিত্ব রক্ষার এই লড়াইয়ে সমস্ত হিন্দু ভোট এককাট্টা করতে মরিয়া বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষের পর রামনবমীর (Ram Navami) আগে এবার সেই একই সুর শোনা গেল বিজেপির বর্ষীয়ান তারকা নেতা মিঠুন চক্রবর্তীর (Mithun Chakraborty) গলাতেও।

হিন্দুত্বের জিগির তুললেন মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)

বৃহস্পতিবার নিউ বারাকপুর থানা সংলগ্ন বসন্ত মিলন উৎসবে যোগ দিতে গিয়েছিলেন মিঠুন (Mithun Chakraborty)। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষসহ বারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ডলের বিজেপি নেতাকর্মী সমর্থকেরাও। সেই সভা থেকেই এদিন হিন্দুত্বের জিগির তুললেন বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। একজন সনাতনী হিসাবে গর্ববোধ করার পাশপাশি এদিন তিনি বললেন, ‘এখনও ৯ শতাংশ হিন্দু ভোট দেয় না। আমি চিৎকার করে অনুরোধ আপনারা বেরিয়ে আসুন এবার ভোটটা দিন। এটা আমাদের অস্তিত্বের লড়াই।’ ‘ 

বাংলাদেশ প্রসঙ্গও এদিন উঠে এল মিঠুনের (Mithun Chakraborty) মন্তব্যে। বর্ষীয়ান তারকা নেতার কথায়, ‘বাংলাদেশ ট্রেলার দেখিয়ে দিয়েছে। জিততে না পারলে পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু বাঙালি বলে কেউ থাকবে না। অন্য দলের হিন্দুরা কী করবেন, না – করবেন আমরা জানি না। কিন্তু বিজেপির হিন্দু বাঙালিরা থাকবে না, এটা কিন্তু মনে করে চলবেন। এরা তৈরি হয়ে বসে আছে, আবার যদি জিতে আসি, নির্বংশ করে দেব। সেজন্য কিছু না ভেবে জিতুন।’

প্রসঙ্গত আগের বারেও অর্থাৎ চব্বিশের  লোকসভা নির্বাচনেও বাংলা দখলের জন্য দিনরাত এক করে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মিঠুন। কিন্তু ফলাফল প্রকাশের পর দেখা যায় বাংলায় কর্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। এদিন তার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে গোষ্ঠীকোন্দলের তত্ত্ব তুলে ধরেছিলেন মিঠুন। তাঁর কথায়, ‘আমরা তো তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করিনি। নিজেরা নিজেদের সঙ্গে লড়েছি। কিন্তু এবার তা হতে দেব না।’

আরও পড়ুন: ‘পুলিশ তো আপনাদেরই বাঁচানোর চেষ্টা করছে’! বিজেপির ফুটেজ দেখে পাল্টা বড় নির্দেশ হাইকোর্টের

দল এবার তাঁকে গুরু দায়িত্ব দিয়েছে। সেকথা জানিয়েই মিঠুন বললেন, ‘আমাকে অনেক বড় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পরে তা জানতে পারবেন। আমাদের দলে সবাইকে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়। সুকান্তদা, শুভেন্দুদা, বাকি আরও নেতৃত্বরা নিজেদের মতো কাজ করবেন। আমিও আমার মত করে করবো। আদপে সবাই একসঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ব।’

Mithun Chakraborty

সনাতনী হিসাবে গর্ববোধ করার কথা জানিয়ে মিঠুন বলেছেন, ‘আমি কিন্তু বলি, গর্ব করে বলো যে আমি সনাতনী। আমরা সনাতনী। যদি ভগবান সনাতনী হিসাবে জন্ম দিয়ে থাকেন তাহলে মরব সনাতন হিসাবে। কিন্তু অন্য হাতে ওই ভাবে মার খেয়ে মরব না।’

কী বলছে তৃণমূল?

মিঠুনের এহেন মন্তব্যের পাল্টা জবাব এসেছে তৃণমূলের পক্ষ থেকেও। বাংলাদেশ প্রসঙ্গ তুলে পশ্চিমবঙ্গে অশান্তি তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে মিঠুনকে পাল্টা আক্রমণ করেছেন জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি দাবি করেছেন, ধর্মের ভিত্তিতে সমাজ বিভাজনের চেষ্টা করা হচ্ছে। একথা উনি মুম্বাইতে গিয়ে বলতে পারবেন কিনা প্রশ্ন তোলা হয়েছে সেই বিষয়েও।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর