বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত দুদিন থেকে সংবাদের শিরোনামে তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র (TMC MLA Madan Mitra)। এক ঘটনার প্রেক্ষিতে SSKM এর বিরুদ্ধে গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন তিনি। হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিষেবার দিকে আঙ্গুল তুলেছেন নেতা। এই নিয়ে একদিকে দলের অন্দরেই যেমন শুরু হয়েছে চৰ্চা, তেমনিই চলছে রাজনৈতিক তরজা।
তৃণমূলের কেউ কেউ মদন মিত্রর ওপর পাল্টা আঙ্গুল তুললেও বিরোধীদের একাংশ কিন্তু এসে দাঁড়িয়েছে বিধায়কের পাশে। SSKM বনাম মদন মিত্রর সংঘাতের ঘটনায় এদিন কামারহাটির বিধায়কের সমর্থনে সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন বিজেপি নেতা (BJP Leader) শঙ্কুদেব পণ্ডা (Shankudeb Panda)।
ঠিক কী বলেছেন তিনি? তৃণমূলে থাকাকালীন নিজের ছাত্র জীবনের এক ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি কোনও ভাবেই মদন মিত্র বা তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন করছি না। কিন্তু একটা ঘটনার অবতারণা না করে পারছি না। তখন আমি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রেসিডেন্ট ছিলাম। গভীর রাতে সিপিএম এর হাতে ছুরি খেয়ে একটা ছেলে হাসপাতালে এল। আমি সেদিন পার্টির কাউকে খুঁজে পাইনি। তবে গভীর রাতে মদন মিত্রকে খুঁজে পেয়েছিলাম। তিনি সেই সময় এসএসকেএম এর সুপারকে তুলে এনে ভর্তি করিয়েছিলেন।”
মদন মিত্রকে দুহাত তুলে সমর্থন জানিয়ে বিজেপি নেতা বলেন, “বহু রাজনৈতিক দলের নেতাই বিপদে পড়ে মদন মিত্রকে ফোন করে বলেন মদনদা আমার এই রোগীকে ভর্তি করিয়ে দিন। তৃণমূল কংগ্রেস সরাসরি ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্যরা আক্রান্ত হলে তারা যাতে হাসপাতালে ভর্তি হতে না পারে সেই বিষয়ে চাপ দেন। তবে রাজনৈতিক পরিসরের উর্দ্ধে উঠে, মানবতার তাগিদে মদন মিত্র আপদে বিপদে সকলকে ভর্তি করান।”
তার সংযোজন, “তাই এক্ষেত্রে মদন মিত্র সমর্থন পাওয়ারই যোগ্য। এই বিষয়ে যারা, যেসব তৃণমূলের নেতারা মদন মিত্রের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলেছেন পাল্টা তাদের ভূমিকায় আঙ্গুল তোলাটা অনেকটা বেশি জাস্টিফায়েড। পিজিতে এখন কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে সরাসরি এখন যারা মদন হটাও অভিযানে নেমেছেন, তারা হাসপাতাল থেকে কী রসদ সংগ্রহ করতে চাইছেন তা এখন স্পষ্ট হচ্ছে।”
পাশাপাশি তিনি এও বলেন, মদন মিত্রের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পলিসিকে আমি সমর্থন করি তবে তাকে বা তৃণমূল কংগ্রেসকে নয়। মদন দা যেই অভিযোগ গুলো তুলছেন তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতে বাইক দুর্ঘটনায় এসএসকেএম হাসপাতালেরই ল্যাব টেকনিশিয়ান শুভদীপ পাল নামে এক যুবক গুরুতর জখম হন। তাকে নিয়ে ভর্তি করাতে হাসপাতালে ছোটেন খোদ মদন মিত্র। তবে নেতার অভিযোগ, প্রায় ছ’ঘণ্টা অ্যাম্বুল্যান্সেই শুভদীপকে রেখে দিতে হয়। এরপর হাসপাতালে ঢোকার মুখেই পুলিশ এবং কর্মীদের সঙ্গে তিনি বচসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। বহু চেষ্টার পরও রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো যায়নি বলে অভিযোগ।
এরপরেই গোটা বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন বিধায়ক। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করে SSKM বয়কটেরও ডাক দেন তিনি। তার মুখে শোনা যায় সিপিএম বন্দনাও। বলেন, “এটা যদি সিপিএমের আমল হত, আমি এক মিনিটের মধ্যে এই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিতাম।” ঘটনার জল এতদূর গড়ায় যে শেষমেষ পদতশিয়ারিও দেন তিনি। দলের বিরুদ্ধে গিয়েও নিজের অবস্থানেই অনড় নেতা।