বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ১০ এপ্রিল চতুর্থ দফার নির্বাচনের দিনে কোচবিহার জেলার শীতলকুচি বিধানসভা কেন্দ্রে CISF জওয়ানদের ৩০০-৩৫০ গ্রামবাসী আক্রমণ করে বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করায় কেন্দ্রীয় বাহিনী ১৫ রাউন্ড গুলি চালায়। সেই গুলিতে চারজন গ্রামবাসী প্রাণ হারায়। এবং তিনজন আহত হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এখন রাজ্য রাজনীতিতে তুলকালাম কাণ্ড বেঁধেছে।
একদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে দায়ি করে ওনার ইস্তফার দাবি জানিয়েছেন। আরেকদিকে, বিজেপির তরফ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উস্কানির ফলেই শীতলকুচিতে এই কাণ্ড ঘটেছে। উনি যদি সিআরপিএফ কে ঘিরে ফেলার পরামর্শ না দিতেন, তাহলে এই কাণ্ড ঘটত না।
আরেকদিকে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা আবদুল মান্নানও এই ঘটনার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দায়ি করেছেন। তিনি বলেছেন, ওনার উস্কানির ফলেই চারজনের প্রাণ গেছে। আর এখন তিনি অমিত শাহের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন। এছাড়াও তিনি বলেছেন, মমতার লাশ নিয়ে রাজনীতি করার স্বভাব অনেক পুরনো। আশা করব উনি এই সময় এই রাজনীতি করবেন না।
শীতলকুচি কাণ্ড নিয়ে একদিকে যেমন তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী দলগুলো সরব হয়েছে। তেমনই রাজ্যের বিদ্বজনেরাও এই কাণ্ড নিয়ে সরব হয়েছেন এবং বিজেপি, কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং কমিশনের নিন্দা করছেন তাঁরা। আর এবার এই ইস্যু নিয়ে সরব হলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা বিজেপির নেতা তথাগত রায়।
বিজেপির নেতা তথাগত রায় নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি পোস্ট করে লেখেন, ‘ প্রশ্ন : শীতলকুচিতে আত্মরক্ষার্থে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি চালানোতে মৃত্যুর ঘটনায় যাদের দরদ উথলে উঠছে, দাড়িভিট স্কুলে পুলিশের গুলিতে দুই নিরাপরাধ ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় তাদের সেই দরদ কোথায় ছিল? উত্তর ; রাজেশ সরকার আর তাপস বর্মন তো দুধেল গাই ছিল না ! তারা রাইফেল ছিনতাইয়ের বা জোর করে বুথে ঢোকবার চেষ্টাও করে নি। বেচারারা কেবল উর্দু শিক্ষকের বদলে অঙ্ক, ইংরেজি ইত্যাদির শিক্ষক চেয়েছিল। তাই তারা পুলিশের গুলি খেল। তাই তাদের মৃত্যুতে কোনো মমতার ভাঁড়গুষ্ঠি গড়ের মাঠে হাপু গাইবে না !”
বলে রাখি, ২০১৮ সালে ২০ সেপ্টেম্বর দাড়িভিটের হাইস্কুলে বাংলা ভাষার শিক্ষকের দাবি করায় প্রতিবাদ জানিয়েছিল স্কুলের ছাত্ররা। সেই সময় ছাত্রদের প্রতিবাদ থামাতে গুলি ছোঁড়ে পুলিশ। আর তাতেই মৃত্যু হয় রাজেশ সরকার এবং তাপস বর্মণ নামের দুই ছাত্রের। বিজেপি নেতা তথাগত রায় সেই প্রসঙ্গই তুলে ধরে বলেন, রাজেশ আর তাপস দুধেল গাই ছিল না বলেই তাঁদের নিয়ে কেউ প্রতিবাদদেখায় নি।