বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দল বিরোধী কাজের জন্য এবার কড়া হাতে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে বিজেপি (BJP)। ইতিমধ্যেই মালদহের প্রাক্তন বিজেপি জেলা সভাপতি সঞ্জীব মিশ্রকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে তারা। বহিষ্কার করা হয়েছে আরেক নেতা নিতাই মন্ডলকেও। অর্থাৎ দল বিরোধী কাজ করলে ছাড় পাবেন না কেউই একপ্রকার সেই বার্তাই দিতে চেয়েছে গেরুয়া শিবির। এমনকি হুগলির নেতা সুবীর নাগকেও (Subir Nag) দলের আইন শৃঙ্খলা মেনে চলার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয় সুবীরের। যেখানে দেখা গিয়েছিল, হুগলির এক সভার আগে দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) বিরুদ্ধে বিক্ষোভ তৈরীর জন্য অন্য এক নেতাকে পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি। এর পরেই এ বিষয়ে তার কাছে জবাবদিহি চেয়ে পাঠিয়েছিল দল। তার জবাব পাওয়ার পরেও তাকে দলের আইন শৃঙ্খলা মেনে চলার জন্য চিঠি পাঠায় বিজেপি।
সুবীরবাবুর সঙ্গে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের (locket Chattopadhyay) দ্বন্দ্বের কথা কারও অজানা নয়। বিশেষত লকেট চট্টোপাধ্যায়কে চুঁচুড়ায় প্রার্থী করার পর থেকেই আরও চরমে উঠে এই দ্বন্দ্ব। সেই দ্বন্দ্বের কিছুটা প্রতিচ্ছবি প্রকাশ পেয়েছিল ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপেও। তার জেরেই শেষ পর্যন্ত দলের কাছ থেকে এক প্রকার ধমক খেতে হল সুবীরকে। যদিও সুবীর জানিয়েছেন, “আমি দলের অনুগত সৈনিক। আমায় শৃঙ্খলা মেনে চলতে বলা হয়েছে। এটাই তো স্বাভাবিক।”
কিন্তু হুগলির নেতাদের ভিতর ভিতর রয়ে গিয়েছে ক্ষোভ। হুগলির অপর এক নেতার মতে, “এটা মানতেই হবে যে দল দু’ধরনের নীতি নিয়ে চলছে। সুবীরদা দলের ঘরের ছেলে বলে এ সব করা হচ্ছে। কিন্তু অন্য দল থেকে যে সব জামাই এসেছেন তাঁদের কিছু বলা হচ্ছে না। দলবিরোধী কথা বলার পরেও তাঁরা জামাই আদরেই আছেন।’’
এরপর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rajib Bandopadhyay) কথাও উল্লেখ করেন তিনি। তার পরিষ্কার বক্তব্য রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিকবার দলের সমালোচনা করেছেন। কিন্তু তার পরেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না দল। এমনকি উত্তরপাড়ার প্রবীর ঘোষালের (Prabir Ghoshal) কথাও উল্লেখ করেন তিনি। সম্প্রতি প্রবীর ঘোষাল, সব্যসাচী দত্ত (Sabyasachi Dutta), রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অনেকেই প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে রাজীব তো এও বলেন, ৩৫৬ ধারার জুজু বারবার দেখালে মানুষ ভালোভাবে নেবে না।
কিন্তু একথা ঠিক যে তাদের বিরুদ্ধে এখনও তেমন ভাবে কোন বড় সিদ্ধান্ত নেয়নি বিজেপি। আর সেই কারণেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে দলীয় নেতাদের মধ্যেও। যদিও বিরুদ্ধ মত প্রকাশ করলেও তিনি যে দল ছেড়ে যাচ্ছেন না তা একপ্রকার স্পষ্ট করে দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন আগামী দিনে দল বিরোধী কাজ কর্মের জন্য তাদের বিরুদ্ধেও সমান ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় কিনা সে দিকেই নজর থাকবে সকলের। তবে একথা ঠিক যে দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠছে দিলীপবাবুদের রণনীতিকে কেন্দ্র করে।
অতীতেও নির্বাচনের আগে হঠাৎ দলে আসা তৃণমূল কর্মীদের প্রার্থী করা নিয়ে স্পষ্টত ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল দলের একাংশ। যার প্রভাব নির্বাচনে অনেকটাই পড়েছে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এখন দু’রকম নীতি নিয়ে চললে আগামী দিনে দলের অন্দরে চাপানউতোর আরও বাড়বে বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।