বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP) পশ্চিমবঙ্গে তিনটি আসনের উপ নির্বাচনে হেরে গেছে। ২০১৬ সালে বিজেপির টিকিটে খড়গপুর সদর বিধানসভা আসন থেকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ জয় হাসিল করেছিলেন। আরেকদিকে ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে করিমপুর বিধানসভা আসন থেকে তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী মহুয়া মিত্র কৃষ্ণনগর আসন থেকে জয় লাভ করেছিলেন। আরেকদিকে কংগ্রেস বিধায়ক প্রমথনাথের মৃত্যুর পর কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা আসনে পুননির্বাচন হয়।
কালিয়াগঞ্জে শেয়ানে শেয়ানে টক্করের পর ২৩০০ ভোটে তৃণমূলের কাছে হার স্বীকার করে বিজেপি। ওই আসনে ২০১৬ সালে মাত্র ২৭ হাজার ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থান দখল করেছিল বিজেপি। কিন্তু এবার উপ নির্বাচনে তিন গুণ অধিক ৯৫ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়েছে। এরকম ভাবে করিমপুর বিধানসভা আসনে বিজেপির ভোট শতাংশ ২০১৬ এর তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় এবার করিমপুরেও বিজেপি তিনগুন বেশি ভোট পেয়েছে। ২০১৬ সালে করিমপুরে বিজেপি ২৩ হাজার ৩০২ টি ভোট পেয়েছিল। এবার তিনগুন বেশি ৭৮ হাজার ভোট পেয়েছে বিজেপি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী আর রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের এলাকাতেও বিজেপি হারের মুখ দেখেছে। যদিও বিজেপির নেতারা গত বারের তুলনায় এবার ভোট বেশি পেয়েছে বলে নিজেদের সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করছে। গত বারের তুলনায় এবার বিজেপি ভালো ফল করে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে। যদিও কোন যুদ্ধে দ্বিতীয় স্থানের গুরুত্ব থাকেনা। সবসময় জয়ীদেরই চর্চা হয়। কালিয়াগঞ্জ আর খড়গপুর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ভালো ফল করার পরেও উপ নির্বাচনে হারের মুখ দেখে।
বিজেপির সুত্র অনুযায়ী, তিনটি আসনে হারের পিছনে ভোটারদের এক হওয়ার কারণ বলেছে। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি রাজ্যে ১৮ টি আসন পেয়েছিল, আর তারপর থেকে বিজেপি বিরোধীরা একজোট হয়ে যায়। আর সেই কারণে ভোট শতাংশ বাড়লেও বিজেপি একটি আসনেও জয় পায়নি। করিমপুর আসনে তৃণমূল গতবারের তুলনায় ১০ হাজার ভোট বেশি পেয়েছে। আর বিজেপি ৫৫ হাজার ভোট বেশি পেয়েছে। ওই আসনে সিপিএম আর কংগ্রেসের ভোটাররা তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছে বলে বিজেপির মত। রাজ্য বিজেপির নেতা রিতেশ তিওয়ারি বলেন, ‘বেশিরভাগ সময়ে উপ নির্বাচনে ক্ষমতায় থাকা দলই যেতে, কালিয়াগঞ্জ আসনে তৃণমূল কংগ্রেস মাত্র দুই হাজার ভোটে জিতেছে। আর এই দেখেই বিচার করা যায় যে, রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে জনতা বিজেপির কাছে বড় আশা করে আছে।”
কালিয়াগঞ্জ আসন রায়গঞ্জ লোকসভা আসনের অন্তর্গত। ৫৫ শতাংশ মুসলিম জনসংখ্যা থাকার পরেও ২০১৯ এ বিজেপির প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী সেখানে জয়লাভ করেন। বিজেপির সুত্র অনুযায়ী, লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম, কংগ্রেসের মধ্যে মুসলিম ভোট ভাগ হয়ে গেছিল। কিন্তু এবার বিধানসভার উপ নির্বাচনে তৃণমূলের জয়ের পিছনে মুসলিম ভোটার এক হয়ে তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছে বলে খবর।
২০১৬ সালে বিধানসভার নির্বাচনে কংগ্রেসের দুর্গ বলে পরিচিত খড়গপুর আসনে বিজেপির প্রার্থী দিলীপ ঘোষ জয়লাভ করেছিলেন। কিন্তু এবারের উপ নির্বাচনে বিজেপি ২০ হাজারেরও বেশি ভোটে হেরেছে। কিন্তু ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এই আসনে ৪৫ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল। আর কালিয়াগঞ্জ আসনে বিজেপি ৫৫ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল।