‘ঝান্ডা ধরারও লোক থাকবে না দলে’, শুভেন্দুকে একহাত নিয়ে দল ছাড়লেন সংখ্যালঘু বিজেপি নেতা

বাংলাহান্ট ডেস্ক : পুরভোটে ঘাসফুলে চাপা পড়েছে পদ্ম। চার পুরনিগমের ভোটে বলতে গেলে মুছে গিয়েছে গেরুয়া শিবির। একই সঙ্গে দলে অব্যাহত অন্তঃকলহ। এহেন পরিস্থিতিতে দল ছাড়ার আগে বিস্ফোরক মন্তব্য করতে দেখা গেল বিজেপি নেতাকে। ইতিমধ্যেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কাছে ইস্তফাপত্রও পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি।

এদিন দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন রাজ্য বিজেপির মাইনরিটি মোর্চার সহ সভাপতি বশির আলম। দল ছাড়ার সময় তাঁকে দাবি করতে শোনা যায় অদূর ভবিষ্যতেই ঝান্ডা ধরার জন্যও কেউ থাকবে না বিজেপিতে।

এদিন এই বিজেপি নেতা দাবি করেন, ‘মানুষের কাছ থেকে সরে গিয়েছে দল। তাই পুরভোটে এহেন ফল। দলে পুরনো কর্মীদের কোনো সম্মানই নেই। এক শ্রেনীর নেতা তাঁদের ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য দল চালাচ্ছেন। ফলে দলের আদি কর্মীরা মানসিকভাবে দলের কাছ থেকে সরে যাচ্ছেন। দলের কাজে তাঁদের কোনো আগ্রহ নেই।’

একই সঙ্গে রাজ্য বিজেপির কমিটিতে সংখ্যালঘু প্রতিনিধির অনুপস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বশির। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রাজ্য বিজেপি নতুন যে কমিটি তৈরি করেছে সেখানে কোনো সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। বিজেপি সংবিধান মানে না। জাতীয়তা বিরোধী কাজ করে।’ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও একহাত নিয়েছেন তিনি, ‘ শুভেন্দুর মতন নেতা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জন্য দলে ঢুকেছিলেন। উনি চিটফান্ড কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত। মানুষ ওঁকে বিশ্বাস করে না। ব্যক্তিস্বার্থের জন্য দলে এসেছেন। বিজেপিকে শেষ করার জন্য শুভেন্দু যথেষ্ট। আশুতোষ কলেজে শুভেন্দু যেভাবে ছাত্রদের দিকে তেড়ে গেছেন তাতে মনে হয় তাঁর মানসিক বিকৃতি ঘটেছে।’ একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, ‘দলটা যেভাবে চলছে তাতে আগামীদিনে ঝান্ডা ধরার লোক থাকবে না।’

প্রসঙ্গত, বিজেপির অন্দরে স্পষ্ট হচ্ছে ফাটল। তৈরি হয়েছে একাধিক গোষ্ঠি। একাধিক নেতাদের বক্তব্যে কার্যতই সামনে আসছে তা। এদিনই প্রাক্তন বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার একটি সাক্ষাৎকারে দাবি করেন বিজেপিতে এখন কার্যতই হাসফাস অবস্থা শুভেন্দু অধিকারীর। শাঁখের করাতে পড়ে কোনো দিকেই যাওয়ার পথ পাচ্ছেন না বিরোধী দলনেতা।

একদিকে পুরভোটে গোহারা হার, অন্যদিকে দলের অন্দরের বিশৃঙ্খলা, এহেন পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে কার্যতই ল্যাজে গোবরে রাজ্য বিজেপি। এরই মধ্যে দল ছাড়ছেন নেতারা। সংখ্যালঘুদের প্রতি বিদ্বেষী মনোভাব বিজেপির নতুন কিছু নয়৷ কিন্তু এবার দলত্যাগী নেতার অভিযোগে উঠে এল সেই কথাও। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে কী হতে চলেছে বিজেপির মাস্টার স্ট্রোক? সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।


Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর