বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। আসন্ন নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এখন থেকেই রণকৌশল সাজাতে ব্যস্ত শাসক-বিরোধী উভয় শিবির। তবে মাঝেমধ্যেই প্রকাশ্যে আসছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির (BJP) অন্তর্কলহের টুকরো ছবি। কিছুদিন আগেই দলবদল করে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন হলদিয়ার বিধাযক তাপসী মণ্ডল। তারপরেই বিজেপির এই ভাঙন নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি জানিয়েছিলেন, আগামী দিনে নাকি আরও ৩৬ জন বিজেপি বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন। এই জল্পনার মাঝেই সম্প্রতি চাকদহের বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ বিধানসভার বাজেট আলোচনা বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ‘বেসুরো’ মন্তব্য করে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করেছিলেন। জল্পনা তৈরি হয় বিজেপি নেতার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার বিষয়েও।
তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গে কি বললেন BJP বিধায়ক?
শুক্রবার অবশ্য এই সম্ভাবনা হেলায় উড়িয়ে দিয়েছেন এই বিজেপি (BJP) নেতা। এপ্রসঙ্গে আনন্দবাজার ডট কম-কে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন,’তৃণমূল আমার বাড়ি চার বার ভাঙচুর করেছে। প্রকাশ্য দিবালোকে আমাকে রাস্তার মধ্যে মারধর করে, চরম অপমান করেছে। তাই এমন অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি, কোনও দিন ওই দলে আমার মতো অত্যাচারিত, নির্যাতিত মানুষ যোগদান করতে পারবে না।’
সূত্রের খবর, মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে ফোনে দীর্ঘ ক্ষণ কথা হয়েছে ওই বিজেপি (BJP) বিধায়কের। বিজেপির পরিষদীয় দল সূত্রে জানা যাচ্ছে,বঙ্কিম নাকি শুভেন্দুকে জানিয়েছেন, সংবাদমাধ্যম তাঁর বক্তব্যকে বিকৃত করে অযথা বিতর্ক সৃষ্টি করছে। তাঁর স্পষ্ট দাবি তিনি দলের অবস্থান বিরোধী কোনও মন্তব্য করেননি। সূত্রের খবর এদিন বঙ্কিমের কথা শোনার পর তাঁকে এসব নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে বারণ করেছেন শুভেন্দু।
আরও পড়ুন: মহিলাদের স্বমেহন-পর্নোগ্রাফি দেখা দোষের নয়! বিরাট রায় দিল হাইকোর্ট, শোরগোল শুরু
নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে শুক্রবার বঙ্কিম ঘোষ জানিয়েছেন, ‘আমি বলেছিলাম স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিগত চার বছরে বিরোধী দলনেতা-সহ আমাদের বার বার সাসপেন্ড করেছেন। কথা বলতে গেলে আমাদের বক্তব্য বিধানসভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দিয়ে দেন তিনি। আর রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কোনও কথা বললে অধিবেশনে তৃণমূল বিধায়কেরা তেড়ে আসেন আমাদের দিকে।’ একইসাথে তাঁর অভিযোগ, অধিবেশনে নাকি বিজেপি (BJP) বিধায়কদের ধরে মারা পর্যন্ত হয়েছে। বঙ্কিমবাবুর কথায়, ‘মার খেয়েও আমরাই সাসপেন্ড হয়েছি। আমি বলতে চেয়েছিলাম স্পিকারের কারণেই আমরা স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা সংক্রান্ত বাজেট আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পারিনি।’
প্রসঙ্গত বৃহস্পতিবার বিধানসভার অধিবেশন শুরু হওয়ার পর ব্যাপক বিশৃঙ্খলা তৈরী হয়েছিল। বিক্ষোভ দেখিয়ে কক্ষ ছেড়েছিলেন বিজেপি বিধায়কেরা। অভিযোগ ওঠে বারুইপুর পশ্চিমে রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে গিয়ে বিরোধী দলনেতার গাড়ির উপরেও হামলা হয়েছে। তারই প্রতিবাদ জানিয়ে বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়কেরা। সেই বিক্ষোভে শামিল হলেও বিজেপির অধিবেশন বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়ে বঙ্কিম ঘোষ সেদিন বলেছিলেন, ‘বাজেট অধিবেশনে স্বাস্থ্য দফতর বা শিক্ষা নিয়ে যে আলোচনা হল, সেখানে আমরা থাকতে পারলাম না। আমরা বয়কট করে বেরিয়ে এলাম। আমি বলব, এটা আমাদের ভুলই হয়েছে।’