বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের (Jagannath Temple) উদ্বোধন হবে। বর্তমানে শেষ মুহূর্তের তোরজোড় চলছে। শুরু হয়েছে আমন্ত্রণপত্র পাঠানোর প্রক্রিয়া। ইতিমধ্যেই সেই আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি (BJP) বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। আর তারপরেই পাঁচটি প্রশ্ন করেছেন তিনি। হিডকোর ভাইস চেয়ারম্যান তথা পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যসচিব ড. হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে উদ্দেশ্য করে এই প্রশ্নগুলি রেখেছেন তিনি।
কী কী প্রশ্ন করলেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)?
রবিবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। সেখানেই তিনি এই প্রশ্নগুলি রেখেছেন। সেই সঙ্গেই জানিয়েছেন, এই গুরুতর প্রশ্নগুলির জবাব না পেলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হবেন কিনা সেই বিষয়ে তাঁকে ভাবতে হবে। তাই হিডকোর ভাইস চেয়ারম্যানের থেকে সেই প্রশ্নগুলির স্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।
Dr. H.K. Dwivedi, I.A.S (Retd.); I am in receipt of the Invitation Card sent by you as the Vice Chairman of WBHIDCO Ltd. for attending the inauguration ceremony of ‘Jagannath Dham’ at Digha.
I will gladly attend the ceremony, if the following concerns are addressed by you:-
a)… pic.twitter.com/Ot7jtitrni
— Suvendu Adhikari (@SuvenduWB) April 27, 2025
শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) জানতে চান, টেন্ডার নথি বলছে দিঘার বুকে ‘জগন্নাথ ধাম সংস্কৃতি কেন্দ্র’ তৈরি হয়েছে। তবে আমন্ত্রণপত্রে ‘প্রাণ প্রতিষ্ঠা’ অনুষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা স্পষ্ট জানতে চান, ‘সৈকত শহরে’ কি ‘জগন্নাথ ধাম সংস্কৃতি কেন্দ্র’ নাকি জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হচ্ছে? এই বিভ্রান্তি দূর করতে আমন্ত্রণপত্র ফের ছাপানো উচিত কিংবা স্পষ্ট ব্যাখ্য সহ লিখিত জবাব পাঠানো উচিত বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ রাজমিস্ত্রির ছদ্মবেশ নিয়েও লাভ হল না, মুর্শিদাবাদে হরগোবিন্দ-চন্দন খুনে গ্রেফতার ফেকারুল শেখ
বিজেপি বিধায়কের আরও প্রশ্ন, হিডকোর (WBHIDCO) তরফ থেকে এই আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। তাহলে এই প্রতিষ্ঠানই ভবিষ্যতে দিঘায় নির্মিত জগন্নাথ ধাম সংস্কৃতি কেন্দ্র কিংবা মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ, দেখভাল, ব্যবস্থাপনা করবে? সংশ্লিষ্ট সংস্থার বর্তমান চেয়ারম্যান কে? উত্তর চেয়েছেন শুভেন্দু। তিনি জানান, হিডকোর ওয়েবসাইট বলছে, এখনও এই পদে ফিরহাদ হাকিম রয়েছেন। ফিরহাদকে যদি সরিয়ে দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এখনও কেন তাঁর নাম রয়েছে? যদি এখনও এই পদে তিনি বহাল থাকেন, তাহলে এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে তিনি কী ভূমিকা পালন করবেন? আমন্ত্রণপত্রেও বা কেন তাঁর নাম নেই? প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলনেতা।
তৃতীয়ত, জগন্নাথ ধাম সংস্কৃতি কেন্দ্র বা মন্দিরে যারা কাজ করবেন, তাঁদের নিয়োগ কে করবে? ধর্মীয়ভাবে হিন্দু নন, এমন ব্যক্তিকে কি এখানে নিয়োগ করা হবে? এই প্রকল্পের নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকার (Government of West Bengal) বা হিডকো রয়েছে। সেক্ষেত্রে ধর্মের ভিত্তিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কি কোনও প্রকার বৈষম্য হবে?
চতুর্থত, আগামীদিনে এই মন্দিরে ভক্তরা যা দান করবেন, সেগুলি কোথায় যাবে? এটি সরকারের নিয়ন্ত্রনাধীন একটি সংস্কৃতি কেন্দ্র। সেক্ষেত্রে ভক্তদের দেওয়া দান কি মন্দিরের সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হবে নাকি হিডকোর আয়ের মধ্যে গণ্য করা হবে?
এছাড়াও শুভেন্দুর প্রশ্ন, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে দিঘার জগন্নাথ ধাম তৈরি করা হচ্ছে বলে প্রচার করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে কি পুরীর মতো এখানেও হিন্দু ধর্ম ছাড়া অন্য ধর্মের মানুষদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে?
এই পাঁচটি প্রশ্ন করার পর শুভেন্দু লিখেছেন, এই প্রশ্নগুলির যদি সন্তোষজনক কোনও ব্যাখ্যা না পাওয়া যায়, তাহলে প্রমাণ হয়ে যাবে, মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে বিভ্রান্তি, প্রতারণা ও দ্বিচারিতা করে চলেছে রাজ্য। কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে যথাযথ জবাব দিয়ে যাবতীয় অনিশ্চয়তা দূর করা হবে বলে আশা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
অন্যদিকে, শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) পাশাপাশি রাজ্যের আরও নানান তাবড় তাবড় নেতা, মন্ত্রীকে জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। বিজেপি প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে খবর। শেষ অবধি এই অনুষ্ঠানে কে কে উপস্থিত হন সেটাই দেখার।