বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয় সংবাদমাধ্যমকে। মানুষের কাছে সত্য, নিরপেক্ষ খবর পৌঁছে দেওয়াই তাঁদের কাজ। এবার সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই পুলিশের (Kolkata Police) হাতে আক্রান্ত হতে হল এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিককে! সেই ভিডিও শেয়ার করে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। ‘গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদমাধ্যমও চটিচাটা দলদাস পুলিশের এই রোষ থেকে বাদ যায়নি’, লেখেন বিজেপি (BJP) বিধায়ক।
সাংবাদিক আক্রান্ত হতেই ফুঁসে উঠলেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)!
মঙ্গলবার সকালে নিজের সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিও শেয়ার করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। সেখানে দেখা যাচ্ছে, সৌরভ দত্ত নামের এক সাংবাদিকের কলার চেপে ধরেছেন একজন পুলিশ। কলকাতা পুলিশের এসিপি অভিজিৎ সমাদ্দার ওই সাংবাদিকের কলার চেপে ধরেছেন বলে দাবি করেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক।
সাংবাদিক নিগৃহীত, কলকাতা প্রেস ক্লাব শীত ঘুমে, সংবাদ সংস্থার বড় কর্তারা উদাসীন !!!
গতকাল চাকরি চুরির বিরুদ্ধে বিজেপি যুব মোর্চার পক্ষ থেকে ‘কালীঘাট চলো’র ডাক দেওয়া হয়েছিল যেখানে যুব মোর্চার আন্দোলনকে ছত্রভঙ্গ করতে মমতা পুলিশ মিছিল থেকে আমাদের নেতা কর্মীদের সঙ্গে কি ভাবে দাগী… pic.twitter.com/XJAjLXbf7Q
— Suvendu Adhikari (@SuvenduWB) April 8, 2025
শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) লেখেন, ‘সাংবাদিক নিগৃহীত, কলকাতা প্রেস ক্লাব শীত ঘুমে, সংবাদ সংস্থার বড় কর্তারা উদাসীন! গতকাল চাকরি চুরির বিরুদ্ধে বিজেপি যুব মোর্চার পক্ষ থেকে ‘কালীঘাট চলো’র ডাক দেওয়া হয়েছিল যেখানে যুব মোর্চার আন্দোলনকে ছত্রভঙ্গ করতে মমতা পুলিশ মিছিল থেকে আমাদের নেতা কর্মীদের সঙ্গে কি ভাবে দাগী অপরাধীদের মতো আচরণ করে টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তুলেছে তা গোটা বাংলার মানুষ চাক্ষুষ করেছেন’।
আরও পড়ুনঃ কৃষক বিদ্রোহ, নীল বিদ্রোহের মতো শিক্ষক বিদ্রোহ হবে! চাকরি বাতিল হতেই বিরাট হুঁশিয়ারি শিক্ষকদের
পুলিশের এই ‘রোষ’ থেকে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও রেহাই পাননি বলে দাবি করেন বিজেপি বিধায়ক। তিনি লেখেন, ‘গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদমাধ্যমও চটিচাটা দলদাস পুলিশের এই রোষ থেকে বাদ যায় নি। এই ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে কলকাতা পুলিশের এসিপি অভিজিৎ সমাদ্দার কিভাবে পেছন থেকে টিভি ৯ বাংলার সাংবাদিক সৌরভ দত্তর কলার চেপে ধরেছেন। সৌরভ বাবুর মতো সাংবাদিকরা তাঁদের নিজেদের কাজটুকুই করছিলেন, খবর সংগ্রহ করার। সাংবাদিকরা এটাই করবেন, কারণ এটাই তাঁদের কাজ, কিন্তু দলদাস মমতা পুলিশ তাদের মালিকের বিরুদ্ধে নেতিবাচক খবরের সম্প্রচার আটকাতে সবরকম পন্থাই অবলম্বন করছে’।
এতকিছু সত্ত্বেও কলকাতা প্রেস ক্লাব ও সংবাদমাধ্যম সংস্থাগুলির বড় কর্তারা ‘উদাসীন’ বলে অভিযোগ করেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)। তিনি লেখেন, ‘সাংবাদিকদের সাথে পুলিশের এমন ঘৃণ্য আচরণের বিরুদ্ধে কলকাতা প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে নিন্দা জানিয়ে কোনো বিবৃতি নেই। অবশ্য এটাই স্বাভাবিক কারণ উক্ত কর্ণধাররা ও উচ্চ পদস্থ তথাকথিত ‘সাংবাদিক’রা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লন্ডন ভ্রমণে সঙ্গী হয়ে উচ্ছিষ্ট গ্রহণ করার সুবর্ণ সুযোগের ঋণ মেটাতে ব্যস্ত। শুধু তাই নয়, তাঁবেদারি করার সময় দিগ্বিদিক্ জ্ঞান বিসর্জন দিয়ে উন্মাদের মতো ‘পিছনে’ হাঁটার প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করে নিজেদের ভাঁড় প্রমাণ করতেও পিছপা হননি’।
শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) দাবি করেন, ‘প্রতিদান’ হিসেবে এই নীরবতা ফিরিয়ে দিচ্ছেন সংবাদমাধ্যমগুলির বড় কর্তা ও তথাকথিত ‘সাংবাদিক’রা। ‘একজন সহকর্মী সাংবাদিকের উপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখিয়ে সংহতির বার্তা দেওয়ার জন্য শক্ত শিরদাঁড়ার প্রয়োজন হয়’ লেখেন বিজেপি বিধায়ক। একইসঙ্গে সৌরভের মতো নির্ভীক সাংবাদিকদের কুর্নিশ জানানোর পাশাপাশি পুলিশের এহেন আচরণের তীব্র নিন্দা করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, বছরের পর বছর সাংবাদিকতায় নিজের দক্ষতার জন্য গত ডিসেম্বর মাসে বাংলাহান্টের অন্যতম সেরা সাংবাদিকের পুরস্কার পেয়েছেন সৌরভ দত্ত। ইন্ডিয়ান মিনিস্ট্রি অফ কালচার ও বাংলাহান্টের যৌথ উদ্যোগে ভারতীয় জাদুঘরে হওয়া সোশ্যাল সামিটে তার হাতে সেরার পুরস্কার তুলে দিয়েছিলেন বাংলাহান্টের কর্ণধার উদয়ন গুহ। সেই নির্ভীক সাংবাদিক সৌরভ দত্তের অন ডিউটি এভাবে পুলিশের হাতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছে বাংলাহান্ট।