বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলাদেশ পরিস্থিতির আঁচ এপার বাংলাতেও এসে পড়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক অবৈধ অনুপ্রবেশের ঘটনা সামনে এসেছে। যা নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। সম্প্রতি রাজ্যে অনুপ্রবেশ নিয়ে বিএসএফকে (BSF) নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে এই প্রসঙ্গে পুলিশকে সতর্ক করেছিলেন তিনি। তার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার পাল্টা সরব হলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। এই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীকে খোলা চিঠি লিখলেন বিজেপি নেতা।
চিঠির ছত্রে ছত্রে মমতাকে আক্রমণ শানালেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)!
শনিবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) একটি চিঠির ছবি শেয়ার করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। ক্যাপশনে লেখা, ‘বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিএসএফ-এর উদ্দেশে করা দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অবমাননাকর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ওনাকে লেখা খোলা চিঠি’।
বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতি মমতা ব্যানার্জির বিএসএফ এর উদ্দেশ্যে করা দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অবমাননাকর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ওনাকে লেখা খোলা চিঠি:- pic.twitter.com/NWaWezerab
— Suvendu Adhikari (@SuvenduWB) January 4, 2025
পাঁচ পাতার এই চিঠির ছত্রে ছত্রে রাজ্য সরকার (Government of West Bengal) এবং পুলিশকে নিশানা করেছেন শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতা লিখেছেন, ‘আমাদের দেশে ১৮টি সীমান্ত, রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল রয়েছে এবং এই প্রথম বহু বছর ধরে কোনও একজন মুখ্যমন্ত্রী কেবল ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে সৈন্যদের বিরুদ্ধে এই ধরণের অভিযোগ উত্থাপন করছেন। যতই দুঃসাহসী হোক না কেন, কোনও চ্যালেঞ্জই সেনাদের মনোবলকে দুর্বল করতে পারেনি। যাইহোক, যখন একজন নাগরিক, বিশেষ করে একজন জনপ্রতিনিধি এবং একজন মুখ্যমন্ত্রী এই ধরণের অভিযোগ তোলেন, তখন তা তাঁদের মনোবলকে দুর্বল করে দেয়’।
আরও পড়ুনঃ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-কন্যাশ্রীর জয়জয়কার! রাজ্যের মুকুটে জুড়ল নয়া পালক! ধন্য ধন্য করছে সকলে
অনুপ্রবেশ নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্নও করেছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক। শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) লেখেন, ‘যখন এই অনুপ্রবেশকারীরা পার্শ্ববর্তী গ্রামে ঢোকে, তখন কীভাবে এই অনুপ্রবেশকারীদের পরিচয়পত্র তৈরি হয়ে যায়? তাঁদের রেশন কার্ড কীভাবে তৈরি হয়? পুলিশ এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা কীভাবে তাদের যাচাই করে, নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয় যাতে তাদের পরিচয়পত্র তৈরি করা সম্ভব হয়?’ মমতাকে লেখা খোলা চিঠিতে এমনই নানান প্রশ্ন করেছেন পদ্ম নেতা। সেই সঙ্গেই বিএসএফ ও সীমান্ত নিরাপত্তার বিষয়ে রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার নানান তথ্যও নিজের চিঠিতে তুলে ধরেছেন তিনি।
শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) দাবি, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে আগত নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের সুবিধার্থে আনা করতে সিএএ আইনের বিরোধিতা করছে, কিন্তু অনুপ্রবেশকারীদের স্বাগত জানাচ্ছে। একসময় সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ছিল অসমে, সেখানে কীভাবে অনুপ্রবেশ বন্ধ হল এবং কেন পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশের ঘটনা ক্রমাগত বাড়ছে? এর একমাত্র কারণ হল অসমের রাজ্য প্রশাসন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় গড়ে তুলে সাহায্য করেছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসন ক্ষমতায় থানা ব্যক্তিদের চাপে ক্রমাগত অনুপ্রবেশকারীদের ভোটব্যাঙ্কে রূপান্তরিত করার কাজ করে চলেছে’।