বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তিনি। বর্তমানে তমলুকের সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay)। এবার তিনিই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করার ‘পথ’ দেখিয়ে দিলেন (SSC Recruitment Scam)। কোনও আক্রমণ নয়, বরং মুখ্যমন্ত্রীকে ‘দিদি’ বলে সম্বোধন করে সবটা বুঝিয়ে বললেন বিজেপি সাংসদ।
যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করার ‘দিশা’ দেখালেন অভিজিৎ (Abhijit Gangopadhyay)!
বৃহস্পতিবার ২০১৬ সালের এসএসসির সমগ্র প্যানেল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। চাকরিহারা হয়েছেন ২৫,৭৫২ জন। বর্তমানে এই ঘটনায় তোলপাড় বাংলা। এই আবহে মুখ খুললেন তমলুকের বিজেপি সাংসদ। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মমতাকে ‘দিদি’ বলে সম্বোধন করে যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করার ‘দিশা’ দেখানোর চেষ্টা করেন তিনি।
অভিজিৎ (Abhijit Gangopadhyay) এদিন বলেন, ‘আজ আমি দিদি বলেই সম্বোধন করব। দিদি এই মুহূর্তে যেন একটা কমিটি গঠন করেন। কেন করবেন সেটা বলছি। আমি মনে করি, আমি যতদূর জানি, যারা জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছে, যারা সত্যি সৎভাবে পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছে, তাঁদের আজও আলাদা করা সম্ভব। আমি কাউকে দোষারোপের জায়গায় যাব না। আজ যাওয়ার সময় নয়। এই যে ছেলেমেয়েগুলোর ভাগ্য বিপর্যয় নেমে এসেছে, সেখান থেকে ওদের উদ্ধার করতেই হবে’।
আরও পড়ুনঃ ‘মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে চাকরিহারাদের টাকা ফেরত দেওয়া হোক’! ২৬০০০ কাণ্ডে বড় দাবি সুকান্তর
বিজেপি (BJP) সাংসদ এদিন একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেন। তার চেয়ারম্যান হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী থাকতে পারেন বলে জানান তিনি। একইসঙ্গে সেই কমিটিতে আর কাদের রাখা যেতে পারে সেটাও বলেন। অভিজিতের কথায়, ‘অ্যাডভোকেট জেনারেল থাকতে পারেন, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য থাকতে পারেন, যেখানে আমি থাকতে পারি, যারা মূল মামলাগুলি করেছিলেন, সেই সুদীপ্ত দাশগুপ্ত… ফিরদৌস শামিম, এসএসসির চেয়ারম্যান ও তাদের আইনজীবীরা থাকতে পারেন’।
বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘এভাবে আলোচনা করে আমরা যদি একটি তালিকা বানাতে পারি, যারা দুর্নীতি করে চাকরি পেয়েছে, আজ কোনও দোষারোপ করছি না। দোষ গুণের ওপরে উঠে এই কাজ করতে হবে। ২৬,০০০ জনকে এই বিপর্যয় থেকে বাঁচাতে হবে। তাঁদের আমরা এই বিপর্যয় থেকে উদ্ধার করতে পারব বলে আশাবাদী’।
২৬০০ চাকরি বাতিল কাণ্ডে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই প্রস্তাব দিলেও তাতে গুরুত্ব দিতে চাননি তৃণমূলের একাধিক নেতৃত্ব। তাঁদের একটি অংশের দাবি, রাজনীতি করতে এসব বলছেন বিজেপি সাংসদ। অন্যদিকে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, এটা প্রথম স্তরের ভাবনা হতে পারত। তবে এখন হয়তো এটা সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতির জেরে গত বছরই ২০১৬ সালের এসএসসির সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের সেই রায়ই বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে শীর্ষ আদালতের রায়ের পর ভেঙে পড়েছেন চাকরিহারারা। এমতাবস্থায় যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করার ‘পথ’ দেখালেন বিজেপি সাংসদ তথা কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay)। পরবর্তীতে চাকরি বাতিল কাণ্ডে কী হয় সেটাই দেখার।