বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সন্দেশখালি (Sandeshkhali) নিয়ে ক্রমশ্যই চড়ছে পারদ। মঙ্গলবার সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) নেতৃত্বে বসিরহাট পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার বেঁধে যায়। এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকায় প্রথমে উত্তর ২৪ পরগনার হৃদয়পুর স্টেশন থেকে হাসনাবাদ লোকালে করে বসিরহাটে পৌঁছে যান সুকান্ত। সেখান থেকে এসপি অফিসের কাছাকাছি পৌঁছতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
সুকান্তদের বাধা দিতে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। পাল্টা পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে।
ঘটনার জেরে দু’পক্ষেরই বেশ কয়েক জন জখম হন। এর পর সুকান্ত সহ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ। যদিও মধ্যরাতেই সুকান্তকে বন্ডে সই করিয়ে ছেড়ে পুলিশ। রাতেই সুকান্তকে নিয়ে যাওয়া হয় টাকির একটি হোটেলে। হোটেলে রাজ্য পুলিশের দ্বারা ঘেরাও থাকেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
এদিকে মঙ্গলবার বসিরহাট পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে রীতিমতো গর্জে ওঠেন সুকান্ত। বাংলার শাসকদলকে আক্রমণ করে বালুরঘাটের সাংসদ বলেন, ‘যদি তৃণমূলের থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিতে হয় তাহলে কি তাদের নেতাদের সঙ্গে রাত কাটাতে হবে?” সাংসদের প্রশ্ন, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাওয়ার জন্য কি তৃণমূল নেতাদের সাথে সকল বাংলার মহিলাদের শুতে হবে? এটাই কি শর্ত?’
এরপরই বাংলার মেয়েদের কাছে অনুরোধ জানিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘প্রত্যেকে নিজের নিজের জায়গায় প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। এটা চলতে দেওয়া যেতে পারে না’। প্রসঙ্গত, সন্দেশখালির শাহজাহান, শিবু হাজরা, উত্তমসর্দার-সহ একাধিক তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে গত সপ্তাহ থেকে পথে নামেন সন্দেশখালির মহিলারা। এখনও শান্ত হয়নি সন্দেশখালি। জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। স্থানীয় মহিলাদের অভিযোগ, শেখ শাহাজাহানের মত গ্রামে এরম আরও অনেক গুন্ডা রয়েছে, যাদের অত্যাচারে এতদিনে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে গ্রামের মেয়েদের।
বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে মহিলারা বলেন, ওরা মেয়েদের কোনও সম্মান দেয়নি। মেয়েদের শেষ করে ফেলেছে। রাত সাড়ে দশটার সময়ে মেয়েদেরকে উঠিয়ে আনত পার্টি অফিসে। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় শেখ শাহজাহানদের সহ বাকি গুন্ডাদের বিরুদ্ধে একজোট হতে বাধ্য হন সন্দেশখালির মহিলারা।
আরও পড়ুন: গুরুতর অসুস্থ সুকান্ত মজুমদার! চলছে অক্সিজেন, তড়িঘড়ি সাংসদকে আনা হচ্ছে কলকাতায়
সন্দেশখালির মহিলাদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। নড়েচড়ে বসেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। ঘটনাস্থলে যায় তাদের প্রতিনিধি দলও। সন্দেশখালি গিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মহিলাদের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেছে বিরোধীরা। যদিও, সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল।