বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একুশের নির্বাচনে বাংলায় আগের থেকে অনেক বেশী আসন পেলেও ক্ষমতায় আসতে পারেনি বিজেপি। ২০০ আসন নিয়ে ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখা গেরুয়া শিবির ৭৭টি আসনেই আটকে গিয়েছে। ওই ৭৭ আসনের মধ্যেও আবার তিনটি আসন কমে গিয়েছে বিজেপির খাতা থেকে। কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক, রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ায় ৭৭ থেকে ৭৫-এ নেমে যায় বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা। আর এরপর মুকুল রায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া আরও একজন বিধায়ক কমে যায়।
মুকুল রায় বিজেপি ছেড়ে যাওয়ার সঙ্গে গেরুয়া শিবিরে যেমন একজন বিধায়ক কমে, তেমনই দলে অস্বস্তিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কারণ মুকুল রায় একা গেলেও বিজেপির অনেক বিধায়ককে ভাঙিয়ে দলে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর সেই কারণেই বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা আরও কমার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তৃণমূলের দাবি অনুযায়ী, ৩০ থেকে ৩৫ জন বিজেপির বিধায়ক তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। ইতিমধ্যে বিজেপির দু’একজন বিধায়ক বেসুরো গেয়েছেন। একদিকে বিজেপি যেমন দল ভাঙন রুখতে তৎপর হয়েছে, তেমনই আবার ২০২৬-র নির্বাচন নিয়ে ঘুঁটি সাজানো শুরু করেছে। বিজেপির মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো এত বড় মুখকে ক্ষমতাচ্যুত করতে গেলে পাঁচ বছর আগে থেকেই পরিকল্পনা নিতে হবে।
একুশের নির্বাচনে কোনও মুখ না থাকায় বাংলায় ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন ব্যর্থ হয়েছে বলে কার্যত স্বীকার করে নিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। আর এই কারণেই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে একজনকে মুখ করে লড়তে চায় বিজেপি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কাকে মুখ করবে বিজেপি? ওয়াকিবহাল মহলের মতে বঙ্গ বিজেপিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো লড়াকু নেতা-নেত্রীর অভাব রয়েছে। তবে মমতার বিরুদ্ধে কেউ যদি লড়তে পারে, সেটা হল শুভেন্দু।
আর শুভেন্দুকে মুখ করে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সুত্র থেকে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, কিছুদিন আগে শুভেন্দু অধিকারীকে দিল্লীতে ডেকে নিয়ে গিয়ে এই বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। এছাড়াও বাংলা থেকে আরও কয়েকজন সাংসদকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করে ময়দানে নামতে চাইছে বিজেপি হাইকম্যান্ড। নতুন মুখদের মধ্যে লকেট চ্যাটার্জী, দিলীপ ঘোষ, নিশীথ প্রামাণিক, সুভাষ সরকার, সৌমিত্র খাঁদের নাম সামনে এসেছে।
দক্ষিণ বঙ্গ সহ উত্তর বঙ্গেও বিশেষ নজর দিতে চাইছে বিজেপি। এছাড়াও আগামী ৫ বছর শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে বাংলায় আরও সংগঠন মজবুত করার কাজে নেমেছে বিজেপি। তবে বর্তমানে বেসুরোদের ঠেকাতেই হিমশিম খাচ্ছে বিজেপি। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করে আগামী নির্বাচনের জন্য দ্রুত ঝাঁপিয়ে পড়ার কাজে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিজেপি।