কমছে হিন্দু, বাড়ছে মুসলিম! রিপোর্ট দেখিয়ে রাজ্যসভায় জন্মনিয়ন্ত্রণ বিল পেশ কেন্দ্রের

বাংলাহান্ট ডেস্ক : ভারতের (India) জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে জন্মনিয়ন্ত্রণ বিল রাজ্য সভায় পেশ করল বিজেপি। শুক্রবার বিজেপি সাংসদ রাকেশ সিনহা সংসদের উচ্চ কক্ষে এই বিলটি পেশ করেন। তাঁর দাবি, দেশে উন্নয়ন অব্যাহত রাখতেই দরকার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ।জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিল ২০১৯ নামের এই বিলটিতে দুই সন্তান নীতির কথাই বলা হয়। এছাড়াও জনসংখ্যার স্থিতিশীলতার লক্ষ্য অর্জনের জন্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলির দ্বারা মানসম্পন্ন প্রজনন স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলির প্রাপ্যতা, সামর্থ্য এবং অন্যান্য বিষয়গুলির সঙ্গে যথাযথ সামঞ্জস্য রেখে জন্মের ব্যবধান নিয়ন্ত্রণের উল্লেখও করা হয় বিলটিতে।

বিলটি পেশ করে রাকেশ সিনহা বলেন, ‘দেশের উন্নয়নের স্বার্থেই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। লাগাতার জন বিস্ফোরণের ফলে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং জাতীয় ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্তা সৃষ্টি হয়। তাই অবিলম্বে এই বিষয়ে আইন পাশ করা উচিত।’

বিলটি পেশ করা মাত্রই বিরোধিতা করে ঝাঁপিয়ে পড়েন বিরোধীরা। কংগ্রেস সাংসদ আমী ইয়াজনিক বলেন, ‘এই বিলের কোনো যৌক্তিকতাই আমার বোধগম্য হচ্ছে না। দেশে উন্নয়নের হিড়িক জাগিয়ে রাখতে এবং মানুষের চোখে ধুলো দিতে এই বিলটি আনা হচ্ছে। আদপে দেশের একটিমাত্র বিশেষ সম্প্রদায়কে নিশানা করেই এই বিলটি পেশ করা হয়েছে।’ এই বিলের বিরোধিতা করতে দেখা যায় আইইউএমএল কেও।

এই অভিযোগের ভিত্তিতে সুর চড়ান রাকেশ। তাঁর দাবি ভোটের স্বার্থেই শুধুমাত্র এই বিলের বিরোধিতা করছে কংগ্রেস। তিনি বলেন, ‘এই বিল পেশ করার সময় আমি একবারও নির্দিষ্ট কোনও ধর্ম বা সম্প্রদায়ের নাম উল্লেখ করিনি। বরং কংগ্রেসই করছে সেটা। এটাই ওদের আসল রূপ। শুধুমাত্র ভোট ব্যাঙ্কের স্বার্থে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের কথা উল্লেখ করা হচ্ছে। এই বিলটি আইনে পরিণত হলে দেশের সমস্ত মানুষের উপরেই তা কার্যকরী হবে। তবে এটা সত্য যে আমাদের দেশে হিন্দুদের তুলনায় অনেক বেশি হারে বাড়ছে মুসলিম জনসংখ্যা। কিন্তু আমি কোনো সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে এই বিল পেশ করিনি’।

Untitled design 13 2

কংগ্রেস মুসলমানদের সমর্থনেই টিকে আছে, এবং তারা মনে করে অনিয়ন্ত্রিতভাবে পরিবার বৃদ্ধি করা তাদের অধিকার এই কথা বলেও কটাক্ষ করেন বিজেপি সাংসদ। একই সঙ্গে ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির খতিয়ানও তুলে ধরেন তিনি। সেই খতিয়ান থেকে রাকেশ বলেন, ‘দেশভাগের পর থেকে হিন্দুদের তুলনায় অনেক দ্রুত বেড়েছে দেশের মুসলিম জনসংখ্যা। ১৯৫১ সালে ভারতের মুসলিম জনসংখ্যা ছিল মাত্র ৯%। বর্তমানে তা হয়েছে ১৪%। ১৯৫১ সালে হিন্দু জনসংখ্যা ছিল ৮৪%। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭৯% তে।’ যে সমস্ত জনসংখ্যা কমছে তাদের উৎসাহ দেওয়ার দাবিও করেন তিনি। রাজ্যসভায় এই বিলের জেরে কার্যতই শোরগোল দেশ জুড়ে।

Avatar
Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর