বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)! সাম্প্রতিককালে উত্তর হোক কিংবা দক্ষিণ, একাধিক হেভিওয়েট বিজেপি (BJP) নেতার মুখে উঠে এসেছে এই বঙ্গ অর্থাৎ বাংলাকে ভাগের তত্ত্ব। ‘উন্নয়নের’ স্বার্থে ‘বঞ্চনার’ বিরুদ্ধে আলাদা রাজ্য চাই, আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চাই। এমন কথাই বারে বারে শোনা গিয়েছে গেরুয়া শিবিরের নেতাদের গলায়। আর ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের পর সেই নিয়ে বিতর্ক যেন আরও তুঙ্গে।
প্রসঙ্গ বিজেপির (BJP) ‘বঙ্গভঙ্গ’
কিছুদিন আগের কথা, ভোটে জিতে তৃতীয়বারের মতো সাংসদ হয়েই বাংলার জঙ্গল মহল সহ রাঢ় বঙ্গকে (Rar Banga) নিয়ে আলাদা রাজ্যের দাবি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছিলেন বাঁকুড়াড় বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ (Soumitra Khan)। নিজের দাবি জানিয়ে সমাজমাধ্যমে গেরুয়া সাংসদ লিখেছিলেন, ‘আমি মল্লভূমের ছেলে, তাই আমাকে ভাবতেই হয় জঙ্গলমহল ও রাঢ় বাংলার মানুষের কথা। এখনো সময় আছে রাঢ় বাংলা ও জঙ্গলমহল কে বাঁচানোর।’
সৌমিত্রর কথায় তার দাবি কার্যত স্পষ্ট। তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিকবার এই একই দাবি তুলে সরব হন সৌমিত্র। যা নিয়ে বেশ জলঘোলাও হয়েছিল। ‘ভারতীয় জনতা পার্টি রাঢ় বঙ্গ না চাইলেও আমি চাই” বলেও আগে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ। এদিকে সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই চলতি সপ্তাহে উত্তরবঙ্গের ‘উন্নয়নের’ স্বার্থে বড় দাবি করে বসেন আরেক বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)।
উত্তরবঙ্গের (North Bengal) আট জেলাকে উত্তর-পূর্বের সঙ্গে যুক্ত করা হোক বলে দাবি জানান উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত। সুকান্তর দাবি, বাংলার উত্তরাংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির অনেক মিল রয়েছে। ফলে এই দুইকে জুড়ে দিলে উত্তরবঙ্গ আরও বেশি সুযোগ-সুবিধা পাবে।
আরও পড়ুন:চিন্তা শেষ! সরকারি কর্মীদের জন্য বড় পদক্ষেপ, নয়া বিজ্ঞপ্তি করল অর্থ দফতর
যদিও সৌমিত্র খাঁ-র মতো তিনি বাংলা ভাগের দাবি করেননি। সুকান্তর কথায়, ‘‘আমি আদৌ রাজ্য ভাগের কথা বলিনি। আমি উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের স্বার্থে এটা ভেবেছি। যদি সরকার রাজ্যের ভাল চায় তাহলে সরকারের এই নিয়ে দ্বিমত থাকার কোনও কারণ নেই।” বিজেপি রাজ্য সভাপতির এই মন্তব্য নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে। রে রে করে উঠেছে বঙ্গ শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। আর এবার সেই আগুনে আরও কিছুটা ঘি ঢাললেন বিজেপি সাংসদ অনন্ত মহারাজ (Ananta Maharaj)।
লোকসভা ভোট মিটতেই ফের একবার কোচবিহারকে আলাদা রাজ্য করার দাবি তুলে সংসদেই সরব হলেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত মহারাজ। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে কোচবিহারকে আলাদা রাজ্য করা হোক।”
অনন্ত মহারাজের হুঙ্কার, ‘কোচবিহার আলাদা রাজ্য হবেই। কোচবিহার কখনও বাংলার অংশ ছিলই না। জোর করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যত শীঘ্র সম্ভব গ্রেটার কোচবিহার আলাদা রাজ্য ঘোষণা করা হোক। এটাই আমি চাই।” যদিও অনন্তের বক্তব্য নিয়ে বিজেপিতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। অনন্ত মহারাজের বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন রাজ্য সভার আরেক সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য।
এদিকে বিজেপির একাধিক নেতার বাংলা ভাগের দাবির পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাংলাকে ভাগ করার চক্রান্ত চলছে। সংসদ থেকে বাংলাকে ভাগ করার কথা বলছে। টুকরো টুকরো করার পরিকল্পনা চলছে। বাংলা ভাগ মনে দেশ ভাগ। সেই জন্য ভয়েস রেকর্ড করতে দিলে করব, না হলে প্রতিবাদ করব”। সবমিলিয়ে বর্তমানে রাজনীতির উত্তাপ বাড়াচ্ছে এই ‘বঙ্গভঙ্গ’ প্রসঙ্গ।
“আরও এক ডিভোর্স….”, যুজবেন্দ্র চাহাল ও ধনশ্রী ভার্মার হতে চলেছে বিচ্ছেদ? জল্পনা উস্কে সামনে এল পোস্ট