বাংলাহান্ট ডেস্ক : বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তৃণমূলের (TMC)। কেন্দ্রের দুই মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান ও মীনাক্ষী লেখি এবং অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীদের (Mithun Chakraborty) রাজ্যে পাঠিয়ে নানা রকম ভাবে বিভ্রন্ত করার চেষ্টা করছে বিজেপি। শুধু তাই নয়, কিছু ফাঁকা হুঙ্কার দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টায় রয়েছে পদ্ম শিবির। শুধুমাত্র রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টিই নয়, কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের নির্দেশে গেরুয়া শিবির আর্থিক প্রকল্পে টাকা বন্ধের হুমকি দিচ্ছে অনবরত। একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের নাম উল্লেখ করে নানা মিথ্যা অভিযোগ তুলে টাকা বন্ধের হুঁশিয়ারি দিতে শুরু করেছেন বিজেপি। এমনই একাধিক বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তৃণমূল নেতৃত্ব।
তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, দুর্নীতিকে ঢাল করে, সিবিআই, ইডিকে যথেচ্ছ ভাবে ব্যবহার করেও রাজ্য বিজেপির (BJP) তৃণমূল বিরোধী আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে পারছে না। আর সেই দুর্বলতা ঢাকতেই নতুন করে আর্থিক বঞ্চনার চক্রান্ত সাজাচ্ছে পদ্ম শিবির। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব নবান্ন অভিযানের নামে একটি ব্যর্থ কর্মসূচি পরিচালনা করেছে বঙ্গ বিজেপি। সুনীল বনসলের মতো কেন্দ্রীয় নেতারা বাংলায় এসে দলীয় সংগঠনের বুথভিত্তিক বেহাল অবস্থা দেখে রীতিমতো হতাশ হয়েছেন। আর এই কারণেই বাংলাকে টাকা না দিয়ে ‘ভাতে মারার’ চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বাংলার ন্যায্য পাওনার পরিমাণ ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। অবিলম্বে এই পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য কিছুদিন আগেই দিল্লিতে গিয়ে দেখা করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূল কংগ্রেস ইতিমধ্যে বিজেপির এই আর্থিক বঞ্চনার চক্রান্তের অভিযোগে পালটা জবাব দিয়ে বলে, ‘কেন্দ্রের টাকা বিজেপির বাবার সম্পত্তি নয়।’ জনসাধারণের দেওয়া করের টাকায় এই কেন্দ্রীয় তহবিল তৈরি হয়। আর তাতে পশ্চিমবঙ্গ থেকেও বিরাট অংকের কর সংগ্রহ করে নিয়ে যায় দিল্লি। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ শনিবার অভিযোগ করেছেন, ‘২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের জ্বালা বিজেপি কিছুতেই ভুলতে পারছে না। তাই প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এবার আর্থিক বঞ্চনার হুঙ্কার দিচ্ছে। আসলে বিজেপি বুঝে গিয়েছে, সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিয়ে বছরের পর বছর কেন্দ্রীয় সরকারের বিচারেই একের পর এক প্রকল্প রূপায়ণে পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রথম বা দ্বিতীয় হচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বিচারেই কলকাতা নিরাপদতম শহর। তাই এবার সরকারি প্রকল্প বন্ধ করে মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছানোর চক্রান্ত করছে বিজেপি।’
তৃণমূলের মুখপাত্র শান্তনু সেন অভিযোগ করে বলেন ‘এতদিন যারা পুজো হচ্ছে দেখতে পেত না, তারাই এখন ইউনেসকো স্বীকৃতি এনে দেওয়ার কৃতিত্ব দাবি করছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন ক্লাবে গিয়ে দড়ি টানাটানি করে পুজো উদ্বোধনের নাটক করছে। বাংলার মানুষ জানে, বছরের পর বছর দুর্গাপুজোর আয়োজকদের পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কর্মীরা রয়েছেন।’
তৃণমূল শিবির থেকে এদিন আরও দাবি করা হয় কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক কর্তাব্যক্তি অনুভব করেছেন, প্রকল্পের বরাদ্দ টাকা সঠিকভাবে একমাত্র খরচ হয় পশ্চিমবঙ্গেই। আর ঠিক এই কারণেই ১০০ দিনের প্রকল্প থেকে শুরু করে ‘জল ধরো জল ভরো’-র মতো নানা জনমুখী পরিষেবায় পশ্চিমবঙ্গ বছরের পর বছর দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। সরকারি তথ্য প্রযুক্তি পরিষেবা এবং ই-গভর্নেন্সের ক্ষেত্রেও পশ্চিমবঙ্গ একাধিকবার হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু ও মুম্বইকে টপকে সেরার সম্মান পেয়েছে। যদিও প্রায় দশ মাস হতে চলল, ১০০ দিন এবং বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার।