রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরলেও অনুব্রতর এলাকাতেই বিজেপির কাছে হারল তৃণমূল

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তৃণমূলের ডাকাবুকো নেতা হিসেবে কোন একজনের নাম বেছে নিতে বললে প্রথমেই উঠে আসবে বোলপুরের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডলের নাম। বীরভূম জেলা সভাপতি শুধু নয় চোখা চোখা ভাষণের জন্য প্রথম থেকেই বারবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন তিনি। কিন্তু বাংলায় যখন ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে রীতিমতো দামামা বাজাল তৃণমূল। তখন অনুব্রতর পুরসভা ওয়ার্ডেই বিজেপির কাছে হারের মুখ দেখতে হলো ঘাসফুল শিবিরকে। বোলপুর পুরসভার কুড়িটি ওয়ার্ডের মধ্যে চোদ্দটি ওয়ার্ডেই এগিয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বোলপুর পৌরসভা এলাকায় প্রায় ছয় হাজার ভোটে হেরেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর সেই এলাকার ১০ নম্বর ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা দোর্দণ্ড প্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডল। তার নিজের ওয়ার্ডেও বিজেপির কাছে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। একদিকে যখন রাজ্যজুড়ে সবুজ ঝড় তখন এই হার যে কিছুটা চোখের বালি হবে তৃণমূলের কাছে এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।   ৪, ৫, ৮, ৯, ১২ ও ১৪ মাত্র এই ছটি ওয়ার্ডেই এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল।

একদিকে যখন রাজ্যে ২১৩ আসন জয় করে ক্ষমতায় ফিরেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে, বীরভূমের ১১টি আসনের মধ্যে ১০ টিতেই ক্ষমতা দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকি বোলপুর বিধানসভা কেন্দ্রেও বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়কে ২২ হাজার ভোটে পরাজিত করেছেন তৃণমূল প্রার্থী চন্দ্রনাথ সিনহা। তখন খোদ বোলপুর শহরে এই পিছিয়ে থাকা নিশ্চয়ই কিছুটা গলার কাঁটার মত খচখচ করবে অনুব্রতর ক্ষেত্রে। এরই মধ্যে আবার অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বোলপুরে পুরাতন লোকের পদ থেকে পদত্যাগ করলেন সুশান্ত ভকত। যা নিয়ে ফের একবার গুঞ্জন তৈরি হয়েছে এলাকায়। স্থানীয় বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের দাবি, বিজেপির কাছে হারের জেরেই পুরো প্রশাসক পদ খোয়াতে হয়েছে। জেনে-বুঝে অসুস্থতার নাটক করছেন তিনি।

খোদ বোলপুর পুরসভায় হারের কারণে দলীয় নেতৃত্বের এই রোষের মুখে পড়া খুবই স্বাভাবিক এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় নেতাদের একাংশ। কারণ দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডলের নিজের এলাকায় বিজেপির কাছে হার মেনে নেওয়াটা খুবই কঠিন। শুরু থেকেই, বিজেপিকে পায় কোন দল বলেই মানতে চাননি অনুব্রত মণ্ডল। তার দাবি ছিল, ২০০থেকে ২২০ আসন নিয়ে আসন নিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরবে তৃণমূল। রাজ্যের ক্ষেত্রে ছবিটা কিছুটা মিলে গেল মিলল না নিজের পুরসভা ওয়ার্ডের ক্ষেত্রেই। আর স্বাভাবিকভাবেই তার রোষ গিয়ে পড়েছে পুরো প্রশাসক সুশান্ত বাবুর উপর, এলাকাজুড়ে গুঞ্জন অন্তত তেমনটাই। পরিসংখ্যান বলছে, সুশান্ত বাবুর ওয়ার্ডে মাত্র ১২০ ভোটে গেরুয়া শিবিরের কাছে পরাজিত হয়েছে শাসকদল। যা রীতিমতো মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে তাদের। পুরোপ্রশাসক বদলের পর আগামী দিনে সমীকরণ কতটা বদলায়, এখন সেটাই দেখার বিষয়।

 

Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর